দুর্ঘটনাস্থলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।
লরি-সহ পণ্যবাহী বিভিন্ন গাড়ি ‘ওভারলোডিং’ বা অতিরিক্ত মালপত্র বহন করায় যে-সমস্যা হয়, তার সুরাহা করার দাবি উঠেছে বারবার। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে নড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার নবান্নে বলেন, ‘‘যে-সব গাড়ি ন’টন মালপত্র বহন করতে পারে, তাতে ১৫ টন পণ্য বহন করা হচ্ছে। ওভারলোডিং সহ্য করব না। এটা নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।’’
বুধবার ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতুর কাছে গিয়েও ওভারলোডিং নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, সাঁতরাগাছি উড়ালপুল-সহ কয়েকটি সেতুতে শুধু যাত্রিবাহী গাড়িই চলবে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘আমি ক্ষতি সহ্য করতে পারি। কিন্তু মানুষের জীবনের সঙ্গে সমঝোতা করতে পারব না।’’ প্রশ্ন উঠেছে, সেতু ভেঙে প়়ড়ার পরে টনক নড়ল কেন? কেন এত দিন ওভারলোডিং নিয়ে কিছু করেনি পুলিশ-প্রশাসন?
পুলিশের দাবি, ওভারলোডিংয়ের ক্ষেত্রে জরিমানা করা হয়। তবে পুলিশেরই একাংশ বলছেন, কোনও গাড়ি অতিরিক্ত পণ্য বহন করছে সন্দেহ হলে প্রথমে তাকে আটক করতে হয়। তার পরে কাগজপত্র পরীক্ষা করে ওজন মাপক কেন্দ্রে গিয়ে গা়ড়ির ওজন করাতে হয়। অতিরিক্ত ওজন বইলে জরিমানা করা হয় তিন হাজার টাকা। এত ঝক্কির জন্য পুলিশের অনেকেই মাথা ঘামান না।
পরিবহণ দফতরের দাবি, তারা ধুলাগড় ট্রাক টার্মিনালে গাড়ির ওজন পরীক্ষা করে। অতিরিক্ত ওজন বহন করলে টন-পিছু এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তার উপরে আদায় করা হয় আরও দু’হাজার টাকা। পুলিশ-প্রশাসন এত সক্রিয় হওয়ার পরেও ওভারলোডিং চলছে কী ভাবে? ‘‘নির্মাণ ব্যবসায়ীদের একাংশ লুকিয়েচুরিয়ে ওভারলোডিং করছেন,’’ বলেন এক পরিবহণকর্তা।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি তপন ভাদুড়ী বলেন, ‘‘ওভারলোডিং হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের মদতে। সেতু ও রাস্তার স্বার্থে ওভারলোডিং বন্ধ হওয়াই উচিত।’’ ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সজল ঘোষ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যা করছেন, ঠিকই করছেন।’’