সেতু ভাঙল মাঝেরহাটে, চিন্তা বাড়ল নেপালে

নেতাজি সুভাষ ডক এবং খিদিরপুর ডক থেকে বাক্সবন্দি পণ্য নিয়ে লরিও যাতায়াত করে মাঝেরহাট সেতুর উপর দিয়ে। সেই রাস্তাও আপাতত বন্ধ।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৫১
Share:

যে ভাবে সেতু ভেঙে পড়েছে,পণ্য পরিবহণ কবে স্বাভাবিক হবে, তা নিয়ে সংশয়ে বন্দর কর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।

সেতু ভাঙল মাঝেরহাটে। বিপদে পড়ল নেপাল। রেশনে সময়ে চাল পৌঁছনো নিয়েও এখন চিন্তায় ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া। চিন্তায় কলকাতা বন্দরের দু’টি ডক থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া রেল পথে পণ্য নিয়ে যাওয়ার কারবারীরাও। কারণ, বন্দর থেকে রেলপথে পণ্য নিয়ে যাওয়ার মূল ঘাঁটি হল মাঝেরহাট। যে ভাবে সেতু ভেঙে পড়েছে, তাতে কবে রেল পথে পণ্য পরিবহণ স্বাভাবিক হবে, তা নিয়ে সংশয়ে বন্দর কর্তারা।

Advertisement

পাশাপাশি নেতাজি সুভাষ ডক এবং খিদিরপুর ডক থেকে বাক্সবন্দি পণ্য নিয়ে লরিও যাতায়াত করে মাঝেরহাট সেতুর উপর দিয়ে। সেই রাস্তাও আপাতত বন্ধ। বন্দর কর্তারা জানাচ্ছেন, মাঝেরহাট রেল স্টেশন দিয়েই বন্দর এলাকার ইস্ট ডক জংশন(ইজেসি) এলাকায় পৌঁছাতে হয়। ইজেসি পর্যন্ত রেলের ইঞ্জিন রেক নিয়ে যায়। তার পর সেখান থেকে বন্দরের ইঞ্জিন রেক টেনে নিয়ে যায় বিভিন্ন বার্থে। এখন বন্দরে প্রতিদিন ৬টি রেক বন্দরের ভিতরে যেতে পারে। বেরোতেও পারে ৬টি। বন্দরের খবর, এখন বন্দরে ৬টি রেক আটকে গিয়েছে। তার মধ্যে সেলের কয়লাবাহী একটি রেক রয়েছে। এ ছাড়া নেপাল, রায়পুর, ওড়িশার ঝাড়সুগুদাতে যাওয়ার কথা আরও ৪টি রেক। কেন্দ্রীয় সংস্থা কনকর-এর একটি রেকও বন্দরের ভিতরে আটকে।

এখন কী হবে?

Advertisement

কলকাতা বন্দরের ট্রাফিক ম্যানেজার ক্যাপ্টেন হিমাংশু শেখর বলেন, ‘‘সেতু ভেঙে পড়লেও রেল লাইনের কোনও ক্ষতি হয়নি। কিন্তু ভাঙা সেতুর মাঝখান দিয়ে রেক নিয়ে গেলে সমস্যা হবে কি না, তা পূর্ত দফতর জানাবে। তার পর বন্দরের রেল চলাচল শুরু হবে।’’ তিনি জানান, রেলের মাধ্যমে বন্দরের যে পণ্য যাতায়াত করে তা পরিবহণে সমস্যা হবে। তবে সড়কপথে বিকল্প পথে পুলিশি সহযোগিতা পেলে পণ্য পরিবহণে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ল মাঝেরহাট ব্রিজ, মৃত ১, জখম ১৯, ধ্বংসস্তূপ থেকে ভেসে আসছে কণ্ঠস্বর​

বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা বন্দর থেকে মাসে নেপালে প্রায় ৪৫টি রেক যায়। ফলে যত দিন রেল চলাচলের অনুমতি না মিলছে, তত দিন নেপালে রেলপথে পণ্য পাঠানো সমস্যা হবে। সে জন্য নেপালে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে। নেপাল পুরোপুরি কলকাতা বন্দরের উপর নির্ভরশীল বলে বন্দর কর্তারা জানাচ্ছেন।

এ ছাড়া রেশন দোকান ও স্কুলের মিড ডে মিলের জন্য এফসিআইয়ের বেসব্রিজে গুদাম রয়েছে। কখনও বন্দর থেকে সরাসরি, কখনও বা গুদাম থেকে রেকের মাধ্যমে খাদ্যশস্য নিয়ে যায় এফসিআই। আপাতত তা-ও বন্ধ। কেন্দ্রীয় সংস্থা বামার লরির অ্যালুমিনিয়াম রফতানির মাধ্যমও এই রেলপথ। সেই সঙ্গে কনটেনার কর্পোরেশনের নিজস্ব রেকে নানান সামগ্রী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যায়। আপাতত তা বন্ধ থাকবে বলেই বন্দর কর্তারা জানাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: দেখে নিন ভেঙে পড়া মাঝেরহাট ব্রিজের ছবি

সড়ক পথে অবশ্য বিরাট সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ, বাক্সবন্দি পণ্য নিয়ে ট্রেলার বেসব্রিজ, হাইড রোড, সিগারেট কল হয়ে ডকের ভিতর যেতে পারবে। সে ক্ষেত্রে মাঝেরহাট সেতুর বিকল্প রাস্তা রয়েছে। পুলিশ সেই অনুমতি দিলে সড়কপথে পণ্য পরিবহণে সমস্যা হবে না।

তবে রেলপথ বন্ধ থাকায় এখনই জাহাজ আসা বন্ধ করছে না বন্দর। ট্রাফিক ম্যানেজারের বক্তব্য, ‘‘জাহাজ এসে মাল খালাস করবে। আশা করছি তার মধ্যে রেল চলাচল শুরু হবে।’’

(শহরের প্রতি মুহূর্তের সেরা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement