ফাইল চিত্র।
ছয় দশকের পুরনো মাঝেরহাট সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো হয়নি বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহেই ওই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সরকারি দফতরের সঙ্গে কথা বলতে চায় পুলিশ। তারা কথা বলবে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ এবং মেট্রোর নির্মাতা সংস্থার সঙ্গেও।
ওই সেতুর দেখভালের দায়িত্ব কোন সরকারি দফতরের, তা নিয়ে টানাপড়েন চলছে। সরকার বা পুলিশ কোনও দফতরের নাম করেনি। যদিও তথ্যাভিজ্ঞ শিবিরের বক্তব্য, সেতু দেখভাল করার কথা পূর্ত দফতরেরই।
লালবাজার সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, মাঝেরহাট সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি অফিসার এবং মেট্রোর ঠিকাদার সংস্থার কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রশাসনের কাছে ওই সেতুর সব নথি চাওয়া হয়েছে। তা হাতে এলেই ওই সেতুর সঙ্গে যুক্তদের নাম পাওয়া যাবে। তার পরেই সংশ্লিষ্ট অফিসার ও কর্তাদের ডেকে পাঠানো হবে। রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতির অভিযোগ তো আছেই। অভিযোগ উঠছে, এলাকায় জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রোর কাজকর্মও সেতু ভেঙে পড়ার অন্যতম কারণ। সব কিছু খতিয়ে দেখতে ওই কর্তাদের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন বলে জানান তদন্তকারীরা।
আরও খবর: মেট্রোর কাজ বন্ধে ক্ষুব্ধ রেল
বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর সদস্যেরা শুক্রবার ফের ঘটনাস্থলে যান। মেট্রো রেলের যে-সব কর্মী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, তাঁদের কয়েক জনের বয়ান নথিভুক্ত করেন। আহত ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে আগেই কথা বলেছেন তাঁরা। এ দিন তাঁদের বেশ কয়েক জনের বয়ান ফের নথিভুক্ত করা হয়। সেতুর ভেঙে পড়া অংশের নমুনা সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবারেও নমুনা সংগ্রহ করেছিল ফরেন্সিক বিভাগ। প্রাথমিক ভাবে তারা জেনেছে, ফাটল ছিল সেতুতে। কিন্তু তা মেরামত করা হয়নি। গোয়েন্দা-প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি, মিনিবাসের চালক-সহ ৭০ জনের বয়ান নথিভুক্ত করেছেন তদন্তকারীরা।
আরও খবর: কতটা ক্ষতিগ্রস্ত, মাপকাঠি সেতু-স্বাস্থ্য যাচাইয়ের ফর্মেই
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, মেট্রো রেলের যে-সব কর্মী প্রত্যক্ষদর্শী, তাঁদের বেশির ভাগই পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই অংশে মেট্রোর স্তম্ভ নির্মাণের কাজ এক বছরেরও বেশি আগে শেষ হয়ে গিয়েছে। স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছিল। তার সঙ্গে পাইলিংয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশের খবর, সকলের বয়ানই যাচাই করা হচ্ছে। তা শেষ হলে আবার জিজ্ঞাসবাদ করা হতে পারে।
সেতুভঙ্গ নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। শুক্রবার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান থেকে বেরোনোর মুখে তাঁকে মাঝেরহাট ও ফাঁসিদেওয়া সেতু ভেঙে পড়া নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আগে তদন্ত হোক।’’