gariahat murder case

Gariahat Murder Case: সুবীরের ফোন চালু করেই ফেঁসেছে ভিকি

পুলিশ জানায়, কাজ দেওয়ার নাম করে বাপি মণ্ডল, জাহির গাজি ও সঞ্জয় মণ্ডলকে কলকাতায় এনেছিল মিঠুই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:০২
Share:

—ফাইল চিত্র।

নিজের মোবাইল বন্ধ রাখলেও কর্পোরেট-কর্তা সুবীর চাকীর ফোন নিয়ে কারিকুরি করতে গিয়েই ভিকি হালদার জালে জড়িয়ে গিয়েছিল বলে জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা। পুলিশের খবর, গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডে সুবীরবাবুর বাড়িতে তাঁকে এবং তাঁর গাড়িচালক রবীন মণ্ডলকে খুনের পরে সেখানে নগদ টাকা বা বিশেষ কোনও মূল্যবান জিনিস পায়নি দুষ্কৃতীরা। শুধু সুবীরবাবুর মোবাইল ফোন এবং তাঁর হাতের আংটি নিয়ে ওই বাড়ি ছেড়েছিল মূল অভিযুক্ত ভিকি।

Advertisement

ধৃতদের জেরা করার পরে পুলিশ জেনেছে, ভিকি প্রথম যখন কাঁকুলিয়া রোডের বাড়ি দেখতে আসে, তখন সেখানে প্রচুর দামি জিনিস ছিল। তা দেখেই তাদের ধারণা হয়, ওই বাড়িতে হানা দিলে প্রচুর জিনিসপত্র পাওয়া যাবে। কিন্তু সুবীরবাবুর মা ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জিনিসপত্রও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানায়, টাকা না-পেলেও হাল ছাড়েনি ভিকি। তার আশা ছিল, কপোর্রেট-কর্তার মোবাইল ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ট্রান্সফার করা যাবে। তাই ১৭ অক্টোবর খুনের পরে, ১৮ অক্টোবর সুবীরবাবুর মোবাইলে নিজের সিম ঢুকিয়ে তাঁর ব্যাঙ্ক থেকে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা সরানোর চেষ্টা করেছিল সে। সেটাই হয় তার কাল। টাকা সরানো যায়নি। চুরি যাওয়া মোবাইলটি ব্যবহারের সূত্রে পুলিশের নজরে চলে আসে ভিকি। তদন্তকারীরা জেনে যান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সরিষায় সুবীরবাবুর মোবাইল ব্যবহার করা হয়েছে। পরে সেই ফোনে নম্বরের সূত্র ধরেই জানা যায়, ওই হত্যাকাণ্ডের পিছনে রয়েছে ভিকি।

এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ওই মোবাইলের সূত্র এবং তার কল ডিটেলস খতিয়ে দেখেই বোঝা যায়, জোড়া খুনের পিছনে কারা রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই ভিকির মা মিঠু হালদারের সন্ধান মেলে। পুলিশের কুকুর সুবীরবাবুর বাড়ি থেকে বালিগঞ্জ স্টেশন পৌঁছনোর পরে স্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও পাওয়া যায় মিঠুর ছবি। ধরা পড়ার পরে মিঠু প্রথমে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়েছিল পুরোদস্তুর। স্টেশনের ছবি দেখানো হলে মিঠু জানায়, সে-ই খুন করেছে। কিন্তু পরে বালিগঞ্জ স্টেশনের ফুটেজ থেকে বাকিদের ছবি তাকে দেখানো হয় এবং তার ওই দাবি নস্যাৎ হয়ে যায়।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, সরিষা থেকে হাওড়া হয়ে ট্রেন ধরে মুম্বই যায় ভিকি। সেখানে কয়েক হাজার টাকায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ নেয় সে। তার সঙ্গী শুভঙ্কর মণ্ডলও সমবেতনে ওই কাজে যোগ দেয়। তাদের কাছে সেই কাজের ‘রিক্রুট লেটার’ বা নিয়োগপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, কাজ দেওয়ার নাম করে বাপি মণ্ডল, জাহির গাজি ও সঞ্জয় মণ্ডলকে কলকাতায় এনেছিল মিঠুই। ওই তিন জনকে বলা হয়েছিল, এক ব্যক্তিকে জোর করে আটকে রাখতে হবে। তবে শুভঙ্করকে নিয়ে আসে ভিকি। তদন্তকারীরা জানান, এক বছর আগে বাবাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ডায়মন্ড হারবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল ভিকি। সেই সময় একটি চুরির মামলায় গ্রেফতার হয় শুভঙ্করও। তখনই ওই দু’জনের আলাপ হয়। জামিনের পরেও বজায় ছিল তাদের যোগাযোগ। ভিকি ও শুভঙ্কর মিলে কর্পোরেট-কর্তাকে খুনের ছক কষে এবং তাতে শামিল করা হয় মিঠুকে। স্থানীয় কোন দোকান থেকে দু’টি ছুরি কিনে লুকিয়ে সুবীরবাবুর বাড়িতে ঢুকেছিল ভিকি। ধৃত মিঠুকে বুধবার পুলিশি হাজত থেকে আদালতে তোলা হয়। তাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement