শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে আসা হল আরজি কর-কাণ্ডে মূল অভিযুক্তকে। — ফাইল চিত্র।
চারদিকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। তার মাঝেই শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে আসা হল আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় মূল অভিযুক্তকে। সোমবার দুপুর নাগাদ প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর ২টো নাগাদ এই মামলায় রুদ্ধদ্বার শুনানি শুরু হতে পারে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি রয়েছে। তার আগেই সোমবার আরজি কর-কাণ্ডে দুই মামলার শুনানি হতে চলেছে দুই আদালতে। আলিপুরে সিবিআই বিশেষ আদালতে আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলার শুনানি রয়েছে। অন্য দিকে, শিয়ালদহ আদালতে আরজি করের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এর আগে গত মাসে আরজি কর-কাণ্ডে প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই। মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল সেই চার্জশিটে। মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের ৮৭ দিন পর, সোমবার সেই মামলায় চার্জ গঠন হতে চলেছে শিয়ালদহ আদালতে। চার্জ গঠন হলেই শুরু হবে বিচারপ্রক্রিয়া। অন্য দিকে, সোমবারই জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের। সেই মতো সোমবার সন্দীপ ঘোষ, অভিজিৎ মণ্ডলকে আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ফের আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে।
গত ৯ অগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চারতলায় সেমিনার হল থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে সেই রাতেই কলকাতা পুলিশের ফোর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাক থেকে গ্রেফতার হন মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার। কলকাতা পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে পরে সেই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ঘটনার ৫৮ দিন পর গত ৭ অক্টোবর সিবিআই এই মামলায় প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছিল। চার্জশিটে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছিল, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারই যে আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় জড়িত, তার একাধিক প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সংগৃহীত বয়ান, ভিডিয়ো এবং ফরেন্সিক বা সায়েন্টিফিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ধৃতের বিরুদ্ধে মোট ১১টি ‘প্রমাণ’-এর উল্লেখ ছিল সেই চার্জশিটে। পাশাপাশি, সন্দীপ এবং অভিজিৎ প্রসঙ্গে সিবিআই চার্জশিটে লেখা হয়েছিল, গোটা ঘটনার নেপথ্যে কোনও বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, কিংবা আর কেউ জড়িত কি না, সেই দিকগুলি খতিয়ে দেখতে সন্দীপ এবং অভিজিতের বিরুদ্ধে তদন্ত জারি রয়েছে। সেই তদন্ত শেষ হলেই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়া হবে বলে জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল।