জনসমক্ষে: বালিগঞ্জের একটি ক্লাবে গাড়ির প্রদর্শনী। রবিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
এ শহরে মিছিলের জট যতই পাকুক, কোটি টাকার গাড়ির বিলাস তাতে আটকাবে না। তারই প্রমাণ ল্যাম্বরঘিনি, ফেরারি, পোর্শে, রোলস রয়েস, ম্যাকলারেন, ক্যাবরিওলেটের মতো স্পোর্টস সুপার কারের মালিকের সংখ্যা বৃদ্ধি।
সপ্তাহ খানেক আগেই পুরনো গাড়ির র্যালি দেখেছে শহর। রবিবাসরীয় শহরের রাজপথ ফের দেখল সুপার কার এবং বাইকের প্রদর্শনী। সংগঠকের তরফে সন্দীপ সরকার জানালেন, বছর পাঁচেক আগে যেখানে সুপার কার মালিকের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। সেখানে কয়েক বছরেই তা চল্লিশ ছুঁয়েছে। এ দিনের প্রদর্শনীতে আট কোটি টাকার রোলস রয়েস ঘোস্ট সিরিজ-২ ছিল সর্বোচ্চ মুল্যের গাড়ি। এর কাছাকাছি ছিল পাঁচ কোটি টাকার ম্যাকলারেন।
কলকাতার ঘিঞ্জি আর ভাঙাচোরা রাস্তা এমন বহুমূল্য গাড়ির যাত্রাপথে অন্তরায় হতে পারেনি। যেমন বাধা হতে পারেনি বছর খানেক আগের এক পথ দুর্ঘটনাও। সে বার জাতীয় সড়কের উপরে ফেরারি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন শহরের এক ব্যবসায়ী। আহত হয়েছিলেন এক তরুণী। এ দিনের প্রদর্শনীতে এসেছিলেন সেই তরুণী আসনা সুরানার কাকা অতুল সুরানা। বিএমডব্লিউ আই-৮ গাড়ি ছাড়া আরও একটি গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন তিনি। দুর্ঘটনার ধকল কাটিয়ে তাঁর ভাইঝি ফিরেছেন স্বাভাবিক জীবনে। অতুলের কথায়, ‘‘গাড়ির প্রতি টান কয়েক দশকের। ফলে সেটা ছাড়া শক্ত। ওই ঘটনাকে একটি দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখি। জাতীয় সড়কে এখনও পরিচিতদের নিয়ে বার হই। তবে সব রকম সতর্কতা বজায় রেখেই চলার চেষ্টা করি।’’
বছর পাঁচেক আগে ল্যাম্বরঘিনি, পোর্শে, ফেরারির মতো শৌখিন গাড়ির মালিকদের নিয়ে শহরে তৈরি হয়েছিল একটি ক্লাব। ব্যবসায়ী প্রবীণ আগরওয়ালের কথায়, ‘‘আট জনকে নিয়ে ক্লাব শুরু হয়েছিল। এখন বাইশ জন সদস্য। এক-এক জনের রয়েছে একাধিক গাড়ি।’’ জনবহুল পথে যেহেতু এমন গতিশীল গাড়ি ছোটানো খানিকটা অসম্ভব। তাই প্রতি রবিবার ক্লাব সদস্যেরা জাতীয় সড়কে পরপর গাড়ি নিয়ে বার হন। গত কয়েক বছর ধরে এমনই চলছে।
শহরে সুপার কার ও বাইকের মালিকের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে সাধারণ মানুষের আগ্রহ। এক অংশগ্রহণকারী প্রীতম চৌধুরী জানালেন, সে কথা ভেবেই এ দিনের প্রদর্শনী।