অগ্নি-সুরক্ষায় ত্রুটি শুধরে নিতে সভা শিল্পতালুকে

শুক্রবার অগ্নিসুরক্ষা নিয়ে একটি সচেতনতা সভার আয়োজন করেছিলেন নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ। সেখানে শিল্পতালুকের একাধিক সংস্থার প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯ ০১:৪৪
Share:

সল্টলেকে এসডিএফ বিল্ডিংয়ে আগুন নেভাচ্ছে দমকল। ফাইল চিত্র

সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে অগ্নিসুরক্ষা-বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে যে বেশ কিছু খামতি রয়েছে, সে কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেন নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

শুক্রবার অগ্নিসুরক্ষা নিয়ে একটি সচেতনতা সভার আয়োজন করেছিলেন নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ। সেখানে শিল্পতালুকের একাধিক সংস্থার প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। তাঁদের সামনেই দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, নবদিগন্তের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব দেবাশিস সেন জানান, ফায়ার অডিটে অগ্নিসুরক্ষার ক্ষেত্রে একাধিক ত্রুটি ধরা পড়ছে। সেই কারণেই সচেতনতার বার্তা দিতে এ দিন ওই সভার আয়োজন করা হয়।

অগ্নিসুরক্ষায় কী ধরনের ত্রুটি রয়েছে এবং কী ভাবে তা দূর করা যায়, একটি ভিডিয়ো প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তা দেখানো হয়। কোথাও আগুন লাগলে প্রাথমিক ভাবে কী কী করণীয়, হাতেকলমে সেই কলাকৌশলও দেখিয়ে দেন দমকল আধিকারিকেরা।

Advertisement

দেবাশিসবাবু জানান, শিল্পতালুকে ২৪ ঘণ্টাই কাজ চলে। যার ফলে অফিসগুলিতে এসি মেশিনও ২৪ ঘণ্টাই চলে। যন্ত্র বিশ্রাম পায় না। তার ফলে এসি বিগড়ে গিয়ে প্রায়ই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সম্প্রতি এসডিএফ বিল্ডিংয়ে আগুন লেগেছিল। সেই উদাহরণ টেনে তিনি জানান, তদন্তের রিপোর্ট এসে গিয়েছে। তাতে বেশ কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে। যেমন, একটি তলের একটি ঘরে অস্থায়ী ভাবে অতিরিক্ত একটি তল বা মেজেনাইন ফ্লোর তৈরি করা হয়েছিল। এই কাজ সম্পূর্ণ বেআইনি। এ ছাড়া, নিয়মিত ভাবে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ এবং আগুন নেভানোর মহড়া হওয়াটাও জরুরি।

অগ্নি-বিধি না মানলে কী ধরনের ঘটনা ঘটছে, তার একাধিক উদাহরণ তুলে ধরেন দমকলমন্ত্রী। শিল্পতালুকের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড থেকে নিউ ব্যারাকপুরে আগুনে পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যু— সবই উঠে আসে তাঁর কথায়। তিনি জানান, একাধিক জায়গায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাই অকেজো বলে অডিটে ধরা পড়েছে।

মন্ত্রীর দাবি, অগ্নিসুরক্ষায় নতুন মই কেনা থেকে নয়া দমকল কেন্দ্র তৈরি, নানা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ১০১ মিটার উচ্চতায় পৌঁছনো যাবে, এমন মই আনা হচ্ছে। সরু ও ঘিঞ্জি এলাকায় মোটরবাইকে করে আগুন নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ নম্বর সেক্টরের জন্য ওই রকম ১০টি মোটরবাইক দেওয়া হবে। পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়ে জোর দেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ এবং প্রয়োজনে স্থানীয় ক্লাবে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র সরবরাহ করার পরিকল্পনাও চলছে বলে তিনি জানান। তবে দমকলমন্ত্রীর কথায়, ‘‘শুধু পরিকাঠামো বাড়ালেই হবে না, সকলে সচেতন হলে তবেই আগুন লাগার সম্ভাবনা কমবে।’’ তিনি জানান, রাস্তার ধারে অস্থায়ী দোকানে প্লাস্টিক কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না। শিল্পতালুকে হকারদের স্টল করে দেওয়া হচ্ছে ঠিকই, তবে তা বহুতলগুলি থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে রাখতে হবে।

দমকলের ডিজি জগমোহন জানান, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচির মতোই অগ্নিবিধি নিয়ে সচেতনতার প্রসারেও জোর দিতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement