পরিবেশবান্ধব: সল্টলেকে ভেষজ রঙে দেওয়াল লিখছেন কাউন্সিলর। নিজস্ব চিত্র
নির্বাচনী প্রচারে পরিবেশ যে এখনও অনেকটাই গুরুত্বহীন, তা নিয়ে একমত পরিবেশকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। অভিযোগ, পরিবেশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির কার্যত কোনও ভাবনাই নেই। ভোট-প্রচারে দেদার প্লাস্টিকের ব্যবহার বা দেওয়াল লিখনে সিসাযুক্ত রঙের ব্যবহার থেকেই তা স্পষ্ট। বাসিন্দারা আরও বলছেন, পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারের প্রবণতা প্রায় কোথাওই চোখে পড়ে না।
অনেকটা এই তকমা ঘোচাতেই বিধাননগর পুরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে দেওয়াল লিখনে দেখা গিয়েছে ভেষজ রঙের ব্যবহার। মঙ্গলবার সল্টলেকের লাবণি আবাসনের একটি দেওয়ালে ভেষজ রং ব্যবহার করে প্রার্থীর নাম লেখা এবং দলীয় প্রতীকের ছবি আঁকলেন শিল্পীরা। স্থানীয় কাউন্সিলর তুলসী সিংহরায় বলেন, ‘‘দূষণের বিরুদ্ধে সকলেরই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সিসামুক্ত রং ব্যবহার করে সেই বার্তাই দিতে চাইছি।
কিন্তু সর্বত্র এমন প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। কাউন্সিলরের দাবি, ‘‘ভেষজ রঙের দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহারের ইচ্ছে থাকলেও উপায় থাকে না।’’ বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ভোটে খরচ বেঁধে রাখতে হয়। সে কারণে দূষণ রোধে সিসামুক্ত রঙের প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়েও অনেক ক্ষেত্রে তা কেনার উপায় থাকে না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এক শিল্পী কাঞ্চন ঘোষ বলেন, ‘‘এ সময়ে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। তাই এমন রং অনেকে ব্যবহার করেন যা জলে নষ্ট হবে না।’’
বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) দেবাশিস জানার মত, ‘‘দূষণ ঠেকানোর ব্যাপারে সব পক্ষেরই ভাবা প্রয়োজন।’’ সিপিএম নেতা পলাশ দাসের কথায়, ‘‘আমাদের প্রচারে কাপড়ের ব্যবহার করা হয়। তবে দেওয়াল লিখতে সাধারণ রং ব্যবহার করি। যদিও শুধু রাজনৈতিক প্রচারে নয়, সার্বিক ভাবেই দূষণ ঠেকাতে চিন্তাভাবনা প্রয়োজন।’’
নির্বাচন কমিশন এ বারের ভোটে প্লাস্টিকের ব্যবহারও যথাসম্ভব কম করার নির্দেশ দিয়েছে। সেই প্রসঙ্গে তুলসীদেবী জানান, প্রচারে প্লাস্টিকের পতাকার বদলে কাপড়ের পতাকা ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।
বাসিন্দারাও বলছেন, রাজনৈতিক প্রচারের ক্ষেত্রে দূষণ হয়তো তুলনায় কম। কিন্তু রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে তা ঠেকানো সম্ভব।