সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্মারকলিপি দিতে ভিড়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গ থাকলে এবং করোনায় আক্রান্ত বলে সন্দেহ হলে সেই রোগীদের ভর্তি করার জন্য সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে বলেছিল স্বাস্থ্য ভবন। বৃহস্পতিবার সেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকায় করোনা হাসপাতাল তৈরির প্রস্তাব বাতিলের দাবি তোলেন তাঁরা। একই যুক্তিতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকেও করোনা হাসপাতালে পরিণত করা নিয়ে টানাপড়েন চলছে।
সম্প্রতি ‘সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস’ (সারি)-এর রোগীদের মধ্যে অনেকেরই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এর পরেই স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, প্রবল শ্বাসকষ্ট কেন হচ্ছে বুঝতে না পারলে রোগীর করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। ঘটনা হল, এ ধরনের রোগীদের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ভর্তি করাতে বেগ পেতে হচ্ছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। গত ২৮ মার্চ হাওড়ার এক বৃদ্ধকে এসএসকেএমের জরুরি বিভাগ থেকে এম আর বাঙুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, ৬৪ বছরের ওই বৃদ্ধকে বিকেল ৫টার পরে এম আর বাঙুরে পাঠানোয় সে দিন নমুনা সংগ্রহ হয়নি। পরদিন নমুনা সংগ্রহের আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। করোনার অস্তিত্ব নিশ্চিত না-হওয়ায় দেহের সৎকার নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। শেষে করোনা আক্রান্তদের মতোই বৃদ্ধের সৎকার হয় বলে খবর।
এ ধরনের জটিলতা এড়াতে ‘সারি’ রোগীদের ভর্তির জন্য সাগর দত্তকে বাছা হয় বলে খবর। বুধবার রাতে তা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু এ দিন সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে বাসিন্দারা জানান, কামারহাটি সংলগ্ন এলাকায় আর কোনও মেডিক্যাল কলেজ নেই। বহু মানুষ ওই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দফতরের প্রস্তাবে নিমরাজি হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ৫০০ শয্যার মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসক অপ্রতুল। এলাকায় প্রচুর মানুষের বসবাস। ওই হাসপাতালে আদৌ করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে কি না, আগে তা খতিয়ে দেখা উচিত।
হাসপাতালের এক প্রশাসক-চিকিৎসক বললেন, ‘‘বাসিন্দাদের স্মারকলিপি এবং চিকিৎসকদের বক্তব্য স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হবে।’’