মালদহের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
২০১৯-এর লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে একটি আসনও পায়নি তৃণমূল। ৮টির মধ্যে ৭টি-তে বিজেপি জিতেছে। মালদহের দু’টি আসনে জিতেছেন কংগ্রেস প্রার্থী। মালদহের জনসভায় সেই আক্ষেপ ঝরে পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। একই সঙ্গে অবশ্য বিজেপি-কেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন মমতা।
জেলায় জেলায় ‘পরিবর্তন যাত্রা’ তথা রথযাত্রা করছে বিজেপি। সুসজ্জিত বাসে করে বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব ঘুরছেন এবং জায়গায় জায়গায় সভা করছেন। এই রথযাত্রাকেই কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা এখন জগন্নাথ সাজছে, বলরাম সাজছে, সুভদ্রা সাজছে। কোনও ধর্মকে কেউ অসম্মান করতে পারে না। আমরা রথযাত্রাকে শ্রদ্ধা করি। আর বিজেপির নেতারা একটা বড় বাসের মধ্যে একটা করে হোটেল বানিয়েছে। সেই হোটেলগুলোতে খাচ্ছে-দাচ্ছে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’
ভোটের আগে বিজেপি টাকা বিলোতে পারে, এমন অভিযোগ বার বার করেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। মালদহের সভাতেও মমতা বলেন, ‘‘এমন দিন ছিল, দিনে একটা বিড়ি তিন বার খেত। আর এখন লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি টাকা। কোথা থেকে এল এত টাকা? ভোটের সময় অনেক টাকা নিয়ে আসবে। আপনাদের দেবে। টাকা নিয়ে নেবেন। কিন্তু ভোট দেবেন না। কারণ ওটা জনগণের টাকা।’’
মমতার বক্তব্য:
৩.০২: ওরা বার বার বাংলায় আসছে। ভাবছে, বাংলা দখল কববে। মমতার মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে। কিন্তু আমার মেরুদণ্ড কী ভাঙবে? আমি বাংলায় জিতবই। তার পর ভারতবর্ষকেও দেখব।
৩.০০: ওদের ধান্দা হচ্ছে, দিল্লি থেকে বাংলাকে কন্ট্রোল করবে। গুজরাত থেকে কন্ট্রোল করবে। কিন্তু আমার জীবন থাকতে সেটা হতে দেব না। আপনারাও দেবেন না।
২.৫৮: বিজেপি টাকা নিয়ে আসবে। টাকা দিলে নিয়ে নেবেন, কিন্তু ভোট দেবেন না। ওটা ওদের টাকা নয়। সাধারণ মানুষের টাকা।
২.৫৭: আমি মালদহের জন্য অনেক করেছি। কিন্তু একটাও আসন পাইনি, একটা সিটে কংগ্রেস জিতেছে। একটা বিজেপি জিতেছে। এমনকি, মৌসমকেও হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি কিন্তু মৌসমকে রাজ্যসভায় করে দিয়েছি। দক্ষিণ দিনাজপুরে আমার সাংসদ নেই। আমি কিন্তু অর্পিতা ঘোষকে করে দিয়েছি। মানস ভুঁইয়াকে করে দিয়েছি।
২.৫৪: বিজেপি নেতারা এখন জগন্নাথ সাজছে, বলরাম সাজছে, সুভদ্রা সাজছে। কোনও ধর্মকে কেউ অসম্মান করতে পারে না। আমরা রথযাত্রাকে শ্রদ্ধা করি। আর বিজেপির নেতারা একটা বড় বাসের মধ্যে একটা করে হোটেল বানিয়েছে। সেই হোটেলগুলোতে খাচ্ছে-দাচ্ছে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন দিন ছিল, দিনে একটা বিড়ি তিন বার খেত। আর এখন লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি টাকা। কোথা থেকে এল এত টাকা? রথযাত্রাকে সম্মান করি, কিন্তু আপনাদের সম্মান করতে পারব না। সব ধর্ম সব ধর্মের মতো চলবে। যে যার নিজের নিজের ধর্ম পালন করবে।
২.৫১: কেএলও থেকে যারা এসেছিলেন, আমি তাঁদের চাকরির ব্যবস্থা করেছি। বিজেপি শুধু ফেক ভিডিয়ো তৈরি করছে। সেই ফেক ভিডিয়ো হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা ছড়াচ্ছে। আগের বছর একটা ছবি দিয়েছিল। এক মহিলার শাড়ি ধরে টানছে। সেটা পরে জানা গেল, ভোজপুরী সিনেমার একটা ভিডিয়ো।
২.৪৯: আজকে একটা ছেলে যদি স্কুলে যায়, তাকে জুতো-জামা দিই। আমি জানি, মালদহে একটা প্রকৃত সমস্যা আছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের সমস্যা। তাঁদের সমস্যাটা এই মুহূর্তে করতে পারব কি না জানি না। কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি, আমি করে দবে।
২.৪৬: আজ পঞ্জাবের চাষিরা কাঁদছে। হরিয়ানার চাষিরা কাঁদছে। কিন্তু বাংলায় কাঁদছে না, কারণ, বাংলায় তৃণমূলের সরকার রয়েছে। বিজেপি নেই। বাংলায় কৃষকবন্ধু প্রকল্পের টাকা ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার টাকা করে দিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকারের একটা প্রকল্প আছে, বলল আপনারা অনুসন্ধান করে পাঠান। আমরা পাঠালাম। কিন্তু আপনারা কিছুই দিলেন না। কেন দিলেন না? শুধু মিথ্যে কথা বলে বেড়াচ্ছে।
২.৪৫: ট্যাব দেওয়া হয়েছে। ট্যাব যাঁরা পাননি, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরেও দেওয়া হবে।
২.৪১: আমাকে একটা সরকার দেখান, যে বিনা পয়সায় রেশন দেয়। মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, কেউ না। আমরাই একমাত্র বিনা পয়সায় রেশন দিই। আর সেটা পেতে হলে আপনাদের তৃণমূলকে ভোট দিতে হবে। কারণ, এটা বিজেপি নয়, যে করব বলে আর করলাম না। আমরা যা বলি, সেটা করি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড যাঁরা পেয়েছেন, তাঁরা চিকিৎসা করাতে পারবেন। আর যাঁরা পাননি, তাঁদেরও বিশেষ কার্ড দেওয়া হচ্ছে। পরে কার্ড পেয়ে যাবেন। এই কার্ড মা-বোনেদের নামে দেওয়া হচ্ছে। কারণ মা-বোনেরাই জানেন, কার কী দরকার, তাঁরাই সংসার চালান। তাঁরা প্রয়োজনে নিজের মা-বাবার চিকিৎসাও করাতে পারবেন।