স্মরণ: ‘অপু’-র নানা ছবিতে সেজে উঠেছে কুঁদঘাটের একটি মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র
সদ্য প্রয়াত হয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর করে যাওয়া কাজ, মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর চল্লিশ দিনের হার মানতে না চাওয়ার লড়াই— এ সব নিয়ে এখনও সংবাদমাধ্যমে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে আলোচনা। এই পরিবেশে জগদ্ধাত্রী পুজোর থিমেও স্মরণ করা হচ্ছে সৌমিত্রবাবুকে কুঁদঘাট মধ্য ব্যানার্জিপাড়ার বাসিন্দারা মনে করেন অপু, ফেলুদা, ক্ষিদ্দা-র মতো চরিত্রের কোনও দিন মৃত্যু হয় না। ওরা হারতে শেখেনি। ওই সব চরিত্র বরং বাস্তবে মানুষকে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগায়। ব্যানার্জিপাড়ার পুজো উদ্যোক্তারা মনে করেন, হয়তো ওই সব চরিত্রই মৃত্যুর আগে হাসপাতালের শয্যায় সৌমিত্রবাবুকে কানে কানে বলে গিয়েছে, ‘‘ফাইট, ক্ষিদ্দা ফাইট।’’
সৌমিত্রবাবুর অভিনীত নানা ছবির বিভিন্ন মুহূর্তকে তাই মণ্ডপসজ্জায় তুলে ধরেছেন মধ্য ব্যানার্জিপাড়ার বাসিন্দারা। এ বার সেখানে জগদ্ধাত্রী পুজো ১৭ বছরে পা দিল। মণ্ডপসজ্জার কাজ করা শিল্পী যাদব সেন জানান, বিজ্ঞাপন জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুকে শুধুমাত্র শারীরিক মৃত্যু বলেই মনে রাখতে চান শিল্পী। তাই মণ্ডপসজ্জা করতে গিয়ে সৌমিত্রবাবুর জীবনকে অনন্তকাল হিসাবেই তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে সৌমিত্রের জীবনকাল ধরা হয়েছে ‘১৯৩৫ থেকে অনন্তকাল’।
আরও পড়ুন: ভাড়াটের কাজে ত্রস্ত প্রতিবেশী, ব্যতিব্যস্ত বাড়িওয়ালা
যাদববাবুর কথায়, ‘‘শিল্পীর মৃত্যুর পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের পোস্ট দেখেছি। সেখানে কেউ লিখছেন ক্ষিদ্দা হেরে গেলেন, কেউ বলছেন অপু পরাজিত হলেন। যা শুধুমাত্র নেতিবাচক ছিল। অথচ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় নিজে নেতিবাচক ধারণাকে প্রশ্রয় দেননি। আমি সেটাকেই স্মৃতি হিসাবে রাখতে চেয়েছি।’’
সেই ভাবনাকে রূপ দিতে চেয়ে সৌমিত্রের প্রায় সাড়ে তিনশোর বেশি ছবির মুহূর্তকে ব্যবহার করা হয়েছে মণ্ডপে। যাদববাবু জানান, অনেক অপ্রকাশিত ছবির মুহূর্তও ব্যবহার করা হচ্ছে। ছবি ছাড়াও আবহসঙ্গীত হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সৌমিত্রকে নিয়ে স্মৃতিচারণার পাঠ। তাঁর পাঠ করা কবিতাও ব্যবহার করা হচ্ছে। রবিবার থেকে মধ্য ব্যানার্জিপাড়ায় গেলে দূর থেকেই সেই কবিতাপাঠ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। এ ভাবে সৌমিত্রবাবুকে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে খুশি এলাকার বাসিন্দারাও।