প্রতীকী চিত্র।
পুজো মণ্ডপ এ বারও দর্শকশূন্য রাখতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু তার জন্য মানুষের রাস্তায় নামা যে বিশেষ কমবে না, গত বছরই তা বোঝা গিয়েছিল। এ বার তাই তৃতীয়ার রাত থেকেই শহরে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করল লালবাজার। ওই সময়ে শহরতলি থেকে কলকাতায় যাতে লরি না ঢোকে, তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ‘হোল্ডিং পয়েন্ট’ বা লরি আটকে রাখার জায়গা নির্দিষ্ট করছে রাজ্য পুলিশ। শহরে ঢোকার মুখে কোথায় কোথায় পণ্যবাহী গাড়ি আটকানো হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলা ও কমিশনারেটের পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করেছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি অজয় কুমার। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের ডিসি-ও।
পুলিশ সূত্রের খবর, শহরে লরি ঢোকার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে ডানলপ, ধূলাগড়, বারাসত-সহ বিভিন্ন এলাকায় সেগুলি আটকে দেওয়া হয়। সেই মতো এ বারেও লরি কোথায় কোথায় আটকানো হবে, তার রূপরেখা ঠিক করতেই গত সপ্তাহে পুলিশের আধিকারিকদের ওই বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, পুজোর ক’দিন কলকাতায় যাতে পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকে, তার জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্তে লরি আটকে দেবে সেখানকার স্থানীয় পুলিশ। যে সমস্ত লরি কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ও বিদ্যাসাগর সেতু হয়ে শহরে প্রবেশ করে, সেগুলিকে হাওড়ার গ্রামাঞ্চল বা হুগলিতে আটকে দেওয়া হবে। আবার বিটি রোড কিংবা ভিআইপি রোড দিয়ে যে সমস্ত লরি আসে, সেগুলিকে আটকাতে বারাসত পুলিশের সঙ্গে নদিয়া পুলিশও বিভিন্ন ‘হোল্ডিং পয়েন্ট’ তৈরি করবে তৃতীয়া থেকে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, কলকাতামুখী লরি আগে থেকে আটকানো না গেলে হাওড়া ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটকে ঝামেলায় পড়তে হয়। সেই সঙ্গে বিটি রোড, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, ডায়মন্ড হারবার রোড ও কৃষ্ণনগর রোডে পুজোর দিনগুলিতে লরির কারণে প্রবল যানজট হয়। এ বার তাই হুগলি, বর্ধমান, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ডায়মন্ড হারবারেই লরি আটকে দেওয়া হবে।
লালবাজার জানিয়েছে, তৃতীয়া থেকেই রাতে বন্ধ হচ্ছে লরির প্রবেশ। পুজোর ক’দিন শুধুমাত্র রাত ৩টে থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত লরি ঢুকতে পারবে শহরে। পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, এমনিতেই পুজোর ক’দিন গাড়ির চাপে হাঁসফাঁস অবস্থা হয় শহরের বিভিন্ন বড় রাস্তা থেকে শুরু করে অলিগলির। দুপুর থেকেই যানজটে বার বার থমকে যায় গাড়ির গতি। দুপুরে যে যানজট তৈরি হয়, বিকেল, সন্ধ্যা পেরিয়ে গভীর রাতের আগে তা স্বাভাবিক হয় না। এ বারও যাতে সেই অবস্থা না হয়, তার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। পুলিশকর্তাদের আশা, রাতের দিকে লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো চলাচল না করলে এ বার পরিস্থিতি সামলাতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না।