—প্রতীকী ছবি।
মোটরবাইকে চালকের পিছনে বসে দু’জন। কারও মাথাতেই হেলমেটের বালাই নেই। রং মেখে হইহুল্লোড় করতে করতে যাওয়ার সময়ে নিয়ন্ত্রণ হারান বাইকের চালক। সোজা গিয়ে ধাক্কা মারেন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক পথচারীকে। ঘটনার অভিঘাতে বেশ কিছুটা দূরে ছিটকে পড়েন তিনি। গত বছর দোলের দিন দুপুরে ই এম বাইপাসে এই দুর্ঘটনায় গুরুতর ভাবে আহত হয়েছিলেন সেই পথচারী। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। বাইপাসের এই দুর্ঘটনা শুধু নয়, দোল এবং হোলিকে কেন্দ্র করে ট্র্যাফিক বিধি ভাঙার এমন অজস্র উদাহরণ রয়েছে। রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশকর্মী নামিয়েও মত্ত বা বেপরোয়া চালকদের দৌরাত্ম্যে লাগাম পরানো যায়নি। এ বছরও লালবাজারের তরফে অতিরিক্ত পুলিশকর্মী নামানোর কথা বলা হয়েছে। যদিও তাতে আদৌ বিধি ভাঙার প্রবণতা কমানো যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরও দোল এবং হোলিকে কেন্দ্র করে শহরের রাস্তায়অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত সাড়ে তিন হাজার পুলিশকর্মীকে নামানো হবে। গোটা শহরকে একাধিক ভাগে ভাগ করে ২৬ জন উপ-নগরপাল পদমর্যাদার অফিসারকে এক-একটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও থাকছেন সহকারী নগরপাল পদমর্যাদার অফিসার এবং ইনস্পেক্টর ও সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসারেরা। জানা গিয়েছে, শহরের ৩৫০টি জায়গায় বিশেষ পুলিশ পিকেট তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া, সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরাও মোতায়েন থাকবেন। পিসিআর ভ্যান এবং মোটরবাইকেও টহলদারি চলবে। দোল এবং হোলির দিন মহিলাদের নিরাপত্তার জন্যও থাকছে বিশেষ বাহিনী।
এত রকম পুলিশি প্রস্তুতি সত্ত্বেও বিধি ভাঙা আটকানো যাবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য আশঙ্কা থাকছে শহরের সচেতন নাগরিকদের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, যে কোনও উৎসবের ক্ষেত্রে পুলিশ নজরদারি বাড়ালেও নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একাংশের সামনেই বিধি ভাঙার ঘটনা ঘটে। পুলিশ সব দেখেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে দর্শকের ভূমিকা নেয়। এ বছরও যে তেমনটা হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? কিছু ক্ষেত্রে যে ‘নরম’ মনোভাব নেওয়া হয়, তা মেনে নিচ্ছেন নিচুতলার পুলিশকর্মীরাও। এমনই এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘উৎসব, আনন্দের দিনগুলিতে সব সময়ে আইন দেখাতে গেলে হয় না। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। সব দিক বুঝেই রাস্তায় নেমে নজরদারি চালানো হয়।’’