বিদায়: দুর্ঘটনায় মৃত কনস্টেবল মহম্মদ নাসিরুদ্দিনকে (উপরে) গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা। শুক্রবার, জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডে। নিজস্ব চিত্র
রাস্তায় ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীরা যাতে তাঁদের সুরক্ষার দিকগুলি মেনে চলেন, তার জন্য ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের নির্দেশ দিল লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, লালবাজারের তরফে পাঠানো ওই বার্তায় ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন বাহিনীর সদস্য ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী এবং অফিসারদের কী কী সুরক্ষা নিয়ে রাস্তায় ডিউটি করা উচিত তা বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করেন। যাতে রাতে বা অন্য সময়ে ডিউটিতে রাস্তায় থাকলে কর্মী-অফিসারেরা নিজেরাই সুরক্ষার বিষয়গুলি মাথায় রাখেন।
ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, রাতে গাড়িচালকেরা যাতে সহজেই কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের চিহ্নিত করতে পারেন সে জন্য তাঁদের উজ্জ্বল রঙের জ্যাকেট এবং কাঁধে উজ্জ্বল আলো ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। এর ফলে দূর থেকে কোনও গাড়িচালকের পক্ষে সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মী বা অফিসারকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
লালবাজার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে লরির ধাক্কায় এক কর্তব্যরত পুলিশকর্মীর মৃত্যুর পরেই ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তাদের তরফে ওই সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে সব ট্র্যাফিক গার্ডে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ মহাত্মা গান্ধী রোড এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলে ডিউটি করছিলেন শেখ মহম্মদ নাসিরুদ্দিন নামে জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডের এক কনস্টেবল। সেই সময়ে হাওড়ার দিক থেকে আসা একটি ট্রাক মহাত্মা গান্ধী রোড থেকে ধর্মতলার দিকে ঘোরার সময়ে তাঁকে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই কনস্টেবলকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। ঘটনার পরেই লরিচালক নেপাল যাদবকে গ্রেফতার করে জোড়াসাঁকো থানা। আটক করা হয় লরিটিও।
লরিচালক পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ওই সময়ে তাঁর গাড়ির গতি বেশি ছিল না। হইচই শুনে তিনি লরি থামিয়ে দেন। কী ভাবে ওই পুলিশকর্মী দুর্ঘটনার কবলে পড়লেন, তা তদন্ত করে দেখছে লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের ফেটাল স্কোয়াড। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজও।
পুলিশ জানিয়েছে, জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডের ওই কনস্টেবল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বাসিন্দা। শুক্রবার ময়না-তদন্তের পরে ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে গান স্যালুট দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। পরে মৃত পুলিশকর্মীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনার। তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, ধৃত লরিচালককে এ দিন আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।