Beleghata

বেলেঘাটায় সন্তানকে খুন করে অভিনয়! ‘পুলিশ মায়ের’ জেরায় দোষ কবুল মায়ের

এক মায়ের চোখে আর এক মায়ের এই অভিনয় শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে গেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৪৭
Share:

সন্ধ্যা মালো।

দিনের বেলায় বহুতলে ঢুকে দু’মাসের শিশুকন্যাকে চুরি ঘটনা মায়ের মুখ থেকে শোনার পর স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন পুলিশকর্তারা। খাস কলকাতায় এ ভাবে শিশু চুরির কবে হয়ে ছিল, মনেও করতে পারছিলেন না তাঁরা। মায়ের বক্তব্য শুনে প্রথমে পুলিশের সন্দেহ হয়েছিল, পরিচারিকা বা বহুতলের নিরাপত্তারক্ষী জড়িত নয় তো! সেই সন্দেহটাই ধীরে ধীরে পাকাপোক্ত হচ্ছিল।

Advertisement

কিন্তু এক মায়ের চোখে আর এক মায়ের এই অভিনয় শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে গেল। একের পর এক প্রশ্নবাণে রণে ভঙ্গ দিয়ে দোষ স্বীকার করে নেন বেলেঘাটার বাসিন্দা সন্ধ্যা মালো। ওই মহিলা কনস্টেবলের উপস্থিত বু্দ্ধির জন্যে কয়েক ঘণ্টার পর গ্রেফতারও হয়ে যান সন্ধ্যা। এই কৃতিত্বের জন্যে কনস্টেবল মাম্পি ঘোষ দাসকে পুরস্কৃত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার।

সন্ধ্যা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, এক যুবক ঘরে ঢুকে ধাক্কা দিয়ে তাঁকে ফেলে দেয়। অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। জ্ঞান ফিরতে দেখেন, সন্তান উধাও। শিশুকন্যার মানত থাকায় সন্ধ্যার শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী ও ছেলে রবিবার সকালে উত্তর কলকাতার একটি মন্দিরে পুজো দিতে যান। ঠিক কী হয়েছিল, আরও বিস্তারিত জানতে আট জন পুলিশ অফিসার তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। জিজ্ঞাসাবাদ করেন ডিসি (ইএসডি) অজয় প্রসাদ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক অন্যায়ের সংশোধনের জন্যই সিএএ, বললেন মোদী

দূর থেকে এক মহিলা কনস্টেবল বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তাঁর মনে হয়, এক জন মা হয়ে সন্ধ্যা পুলিশকর্তাদের যা বলছেন, তাঁর কোনও ভিত্তি নেই। বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। বিষয়টি তিনি পুলিশকর্তাদের জানান। এর পর এক মহিলা এসআই-এর সঙ্গে ওই কনস্টেবলকে জেরার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এক ‘পুলিশ মায়ের’ একের পর এক প্রশ্নবানে শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে সন্ধ্যা। স্বীকার করে নেন, তিনিই নিজের কন্যাসন্তানকে খুন করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিলেন। তার পর অপহরণের গল্পও সাজিয়ে ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মহিলা কনস্টেবলের উপস্থিত বুদ্ধির কারণে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শিশুকন্যা হত্যাকাণ্ডের কিনারা করা গিয়েছে। দ্রুত ঘটনার কিনারা করতে পারায় ওই মহিলা কনস্টেবলকে পুরস্কৃতও করা হচ্ছে।

তবে শিশুকন্যা হত্যাকাণ্ডে এক পুরুষ চরিত্রের হদিশও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। হরিয়ানার বাসিন্দা ওই যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সন্ধ্যার। তাঁর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকে যোগাযোগও রাখত সে। এই সম্পর্কের কথা সন্ধ্যার স্বামী জানতেন কি না, অথবা এই সম্পর্কের কারণে শিশুকন্যাকে খুন হতে হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছয়নি পুলিশ। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: অভিজিৎকে ডি লিট, বিক্ষোভে সমাবর্তন ছাড়লেন রাজ্যপাল

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement