বচসা মেটাতে গিয়ে থানাতেই আক্রান্ত পুলিশকর্মী। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
বাড়িওয়ালা-ভাড়াতে বচসা মেটাতে গিয়ে থানার মধ্যেই মার খেলেন এক পুলিশকর্মী। টালিগঞ্জ থানার মধ্যে পুলিশের মার খাওয়ার ঘটনা এখনও টাটকা। তার মধ্যেই এ বারের ঘটনাস্থল হরিদেবপুর থানা।
থানায় বাড়িওয়ালার নামে অভিযোগ দায়ের করতে এসে চিৎকার চেঁচামেচি করছিলেন এক মহিলা। সেই সময়ে থানায় ওই বাড়িওয়ালাও ছিলেন। উত্তপ্ত সেই পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে ওই মহিলার হাতে থানার মধ্যেই ঘুসি খেলেন এক মহিলা পুলিশকর্মী। এই ঘটনায় ভাড়াটিয়া ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে প্রকাশ্যে মদ্যপান করায় কয়েক জন যুবককে আটককে কেন্দ্র করে গত ১১ অগস্ট রাতে টালিগঞ্জ থানায় চড়াও হয় স্থানীয় মাটালিবাগান বস্তির এক দল দুষ্কৃতী। দু’দফায় হামলা চালানো হয় থানার মধ্যে। হামলাকারীরা এক পুলিশকর্মীকে গেট থেকে মারতে মারতে থানার ভিতরে নিয়ে যায়। পৌঁছে যায় থানার ওসির ঘরেও। পুলিশ কর্মীরা বাধা দিলে তাদের উর্দি টেনে ছিঁড়ে দেওয়া হয়।
বুধবার সন্ধ্যায় হরিদেবপুরের বাসিন্দা বৈশাখী সিংহ তাঁর বাড়িওয়ালা গৌতম কোলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, গৌতম তাঁদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেছেন। কিন্তু পাওনা ১৪ হাজার টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। বৈশাখীর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গৌতমকে ডেকে পাঠায়। কিন্তু, গৌতম থানায় এসে জানান যে বৈশাখী আদৌ তাঁর ভাড়াটে নন। তাই টাকা ফেরত দেওয়ার কোনও প্রশ্নও নেই।
আরও পড়ুন: সংযুক্তিকরণের প্রতিবাদে ধর্মঘট ২৬-২৭, টানা চার দিন ব্যাঙ্ক বন্ধে হয়রানির আশঙ্কা
এর পর পুলিশ বৈশাখীর দাদা রাজীব ভুঁইঞাকে থানায় আসার জন্য তাঁকে জানায়। পুলিশের দাবি, দাদাকে তানায় আসার কথা বলতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বৈশাখী। তিনি চেঁচামেচি শুরু করে দেন। বাড়িওয়ালাকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা চিৎকার করে বলতে থাকেন। থানার মধ্যে এ রকম চিৎকার-চেঁচামেচি করায়, তাঁকে সামলাতে ছুটে আসেন এক মহিলা পুলিশকর্মী। অভিযোগ, সেই পুলিশকর্মী আসতেই হাত-পা ছুড়তে শুরু করে দেন ওই মহিলা। ওই পুলিশকর্মীকে লক্ষ্য করে ঘুসিও মারেন। তাতেই আহত হন ওই মহিলা পুলিশকর্মী।
আরও পড়ুন: দার্জিলিং মেলের এসি কামরায় মহিলা যাত্রীর যৌন হেনস্থার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে ডিসি (দক্ষিণ-পশ্চিম) নীলাঞ্জন বিশ্বাস জানিয়েছেন, গোটা ঘটনা অফিসার্স রুমে থাকা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। ওই মহিলা পুলিশকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাতেই বৈশাখীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৩২ এবং ৩৫৩ (কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে কাজে বাধা দেওয়া এবং মারধর করা) ধারাতে মামলা করা হয়। বৃহস্পতিবার বৈশাখীকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন ডিসি।