ঝুলন কবে, জানে না কুমোরটুলি

ঝুলন উৎসবের মাসখানেক আগে থাকতেই পটুয়াপাড়ার প্রতি ঘরে বাহারি মাটির পুতুল বা মডেল তৈরি হত। এমনকি হরেক রকম পুতুল বিক্রির মেলাও বসত কুমোরটুলিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৮ ০২:১৯
Share:

দোরগোড়ায় ঝুলনযাত্রা। জানেই না কুমোরটুলি! অথচ বছর দশেক আগেও দুর্গাপুজোর প্রস্তুতির ফাঁকে এমন মরসুমেই জেগে উঠত কুমোরটুলি পাড়া। সেই ছবির সঙ্গে এখনকার মিল খোঁজাই বৃথা।

Advertisement

ঝুলন উৎসবের মাসখানেক আগে থাকতেই পটুয়াপাড়ার প্রতি ঘরে বাহারি মাটির পুতুল বা মডেল তৈরি হত। এমনকি হরেক রকম পুতুল বিক্রির মেলাও বসত কুমোরটুলিতে। আর এখন? ছ’দিনের ঝুলনযাত্রা শুরু হতে মাত্র তিন দিন রয়েছে হাতে। আফশোসের বিষয়, কুমোরটুলি ঘুরে দেখা গেল, অনেক শিল্পী জানেনই না কবে ঝুলন। তার প্রস্তুতি তো পরের কথা। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, গত বছরও ঝুলনের দিন কয়েক আগে কুমোরটুলিতে হাতে-গোনা দোকানে কেনাকাটা চলতে দেখা গিয়েছিল।

কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সাংস্কৃতিক সমিতির সম্পাদক রঞ্জিত সরকারের কথায়, ‘‘ঝুলনের বাজার দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিকের চায়না মডেল। তাই মৃৎশিল্পীদের কাছে আগের মতো ভিড় করেন না ক্রেতারা। তা ছাড়া আগের মতো ঘরে ঘরে ঝুলন উৎসব পালন করার রেওয়াজও আর নেই। সেই কারণেই কুমোরটুলির শিল্পীরাও উৎসাহ হারাচ্ছেন।’’ কুমোরটুলির শিল্পীরা বলছেন, আগে শিল্পীরা দুর্গাপুজোর পাশাপাশি ঝুলন উৎসবের বায়নার দিকেও চেয়ে থাকতেন। কলকাতার পুলিশের ট্র্যাফিক আইন, মনুমেন্ট, রাস্তার আলো, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের লড়াই মাটিতে ফুটিয়ে তুলতেন শিল্পীরা। শিল্পী মিন্টু পালের স্মৃতিতে, ‘‘বাবা-ঠাকুরদারা ঝুলন পূর্ণিমার এক মাস আগে মাটির নানা মডেল তৈরি করে পসরা সাজিয়ে বসতেন। সে সব বিক্রিও হত রমরমিয়ে। সে সময়ে বিক্রির পরিমাণ এতই ছিল যে, এক মাসেই কুড়ি হাজার টাকা আয় হত।’’

Advertisement

শিল্পী কাঞ্চি পালের কথায়, ‘‘আগে ঝুলনের মাসখানেক আগে দোকানের সামনে রাধাকৃষ্ণ, কংসবধ, হাতিবধ, কুমিরবধ, নরসিংহের মডেল রমরমিয়ে বিক্রি হত। এখন মহারাষ্ট্র থেকে বায়না আসে। তাতেই টিকে রয়েছে কুমোরটুলির ঝুলন।’’ একই হতাশা শিল্পী মালা পালের কথাতেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement