Literature Festival

কলকাতার কড়চা: সারস্বত নক্ষত্রের আলো

সাহিত্য উৎসব ও লিটল ম্যাগাজ়িন মেলা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি আয়োজন করেছিল প্রদর্শনী পাঁচটি তারার তিমির, গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালায়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:৩১
Share:

দরজা ঠেলে ঢোকার আগেই থমকে দাঁড়ানো। পাঁচ জনের সই পর পর, যেন স্বাগত জানাচ্ছে অন্দরমহলে। অন্তরমহলে। চেনা অক্ষরের ছাঁদ, দীর্ঘ-ঈ’গুলি অনন্তের দিকে প্রসারিত, এ-কার নেমে গিয়েছে গভীরে, যুক্তাক্ষরগুলি ঘন, সংবদ্ধ। অপার বিস্ময়ে সেই সই-ছবি ক্যামেরাবন্দি করছিল যে তরুণীটি, তার মনের মধ্যে বাজছিল কি পূরবীর সুর? অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, সুধীর চক্রবর্তী, অরুণ সেন, দেবেশ রায় ও মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়— বাংলা সাহিত্যের পঞ্চপুরোধা চলে গেলেন বিগত বৎসরটিতে, সেই বিদায়রাগিণীর সুরই কি ফিরে ফিরে আসছিল ভিতরে বেজে-চলা রবীন্দ্রগানে?

Advertisement

সাহিত্য উৎসব ও লিটল ম্যাগাজ়িন মেলা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি আয়োজন করেছিল প্রদর্শনী পাঁচটি তারার তিমির, গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালায়। মূল প্যানেলটিতে ধরা ছিল তার সুর: ‘পাঁচজনের সাহিত্যসৃষ্টির অভিমুখ এবং নিজস্বতা বহুলাংশে ভিন্ন। আলাদা আলাদা আকাশ।... তবু বিশ্বাস করি, তাঁদের লিখিত অক্ষরে সঞ্চিত আছে অবিনশ্বর ভালোবাসা আর অফুরান স্বপ্নবীজ।’ পাঁচ জনের সাহিত্যসম্ভারের পরিচিতি, তারই মধ্য দিয়ে তাঁদের ‘মনন, চিন্তন, কল্পনা তথা যাপনের রেখচিত্র’কে ছোঁয়ার প্রয়াস।

লেখকের দীর্ঘ জীবন জাতির মনন-সংস্কৃতির জন্য আশীর্বাদ। বাঙালি সে অর্থে আশীর্বাদধন্য, এই পাঁচ শিল্পীর উত্তুঙ্গ লিখন ও অতলস্পর্শী মননকে সে দীর্ঘকাল আপন করে পেল। তার ভাবনাবিশ্ব ঋদ্ধ অলোকরঞ্জনের কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদে, সুধীর চক্রবর্তীর লোকধর্ম-শিল্প-সংস্কৃতির স্বতন্ত্র বীক্ষণে, অরুণ সেনের থিয়েটার-কবিতা-চিত্রশিল্পের পর্যালোচনায় সমাজ-ইতিহাসের বিশ্লেষণে। দেবেশ রায়ের লেখায় সে দেখেছে পুরাণ ও ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের উত্থান, আশ্চর্য ব্যক্তিসংগ্রাম ও গণপ্রতিরোধ; মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের একক কীর্তির হাত ধরে পেয়েছে আন্তর্জািতকতার স্বাদ, ‘বিশ্বসাহিত্যের পুরো একটা আকাশ’। ব্যক্তিগত থেকে লোকায়ত, একান্ত স্থানিক থেকে চূড়ান্ত বৈশ্বিক— বাঙালির মনন-ঐতিহ্যের স্তরীভূত সকল সম্পদ কেবল ছুঁয়ে নয়, অধিগত করে তাঁরা সে সব বিলিয়ে দিয়েছেন, ফিরিয়ে দিয়েছেন বাঙালিকেই। সেই উপলব্ধিই পরম প্রাপ্তি এই প্রদর্শনীর।

Advertisement

পাহাড়প্রমাণ, সমুদ্রগভীর ব্যক্তিত্বদের প্রদর্শনীর সসীমে বাঁধার ভাবনাই এক চ্যালেঞ্জ, পরিকল্পনা ততোধিক কঠিন। কতগুলি শব্দে ধরা যেতে পারে এঁদের জীবনকৃতি, বিপুল সৃষ্টিসম্ভার থেকে কোন শব্দ-বাক্যবন্ধগুলির উজ্জ্বল উদ্ধার ধাক্কা দেবে, কাঁদাবে-কাঁপাবে চেতনাকে, সেই কাজ সহজ ছিল না মোটেই। কিন্তু ৩-৭ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচ দিনে এই প্রদর্শনীটি যত মানুষ দেখলেন, মুগ্ধতায় ভরিয়ে দিলেন টেবিলে রাখা মন্তব্যের খাতা— তাতেই প্রমাণ, অভীক মজুমদার, ঋত্বিক মল্লিক ও তাঁদের সহযোগীদের আয়াস সার্থক। মেলা ও সাহিত্য-উৎসব ফুরনোর পরেও দর্শক-উৎসাহে প্রদর্শনী চলেছে আরও। কলকাতা দেখল, এখনও এ শহর ভাল প্রদর্শনীর ঠিকানা। দেখল, সারস্বত নক্ষত্রের আলো এখনও পথ দেখাচ্ছে বাঙালিকে।

ফিরে দেখা

২০২০ সাল ছিল দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের (১৮৭০-১৯২৫) জন্মের সার্ধশতবর্ষ, যেন কেটে গেল আনমনে, তেমন উদ্‌যাপন ছাড়াই। সেই ক্ষোভ খানিক পূরণ হল গত ২ ফেব্রুয়ারি নেতাজি রিসার্চ ব্যুরোর উদ্যোগে হয়ে যাওয়া শিশিরকুমার বসুর জন্মশতবর্ষ পালন উৎসবে, যেখানে মূল আলোচ্য ছিলেন দেশবন্ধু (ছবিতে)। সুগত বসু ও সুমন্ত্র বসু পড়ে শোনালেন যথাক্রমে কৃষ্ণা বসু ও শিশিরকুমার বসুর স্মৃতিচারণ। আর দেশবন্ধুর রাজনীতি বিষয়ে আলোচনা হল পরবর্তী পর্বে। মনে পড়ল কী বলতেন দেশবন্ধু: ‘‘বাঙালি হিন্দু হউক, মুসলমান হউক, খ্রীষ্টান হউক, বাঙালি বাঙালি। বাঙালির একটা বিশিষ্ট রূপ আছে, একটা বিশিষ্ট প্রকৃতি আছে, একটা স্বতন্ত্র ধর্ম আছে।’’ আজকের এই সম্প্রদায়বিভক্ত, আত্মমর্যাদালুপ্ত বাঙালির কি তাঁকে ফিরে জানা প্রয়োজন নয়?

নির্ভীক সুভাষ

পরির সাম্রাজ্য, রানির স্মারক প্রাসাদ, সর্বত্র আজ ‘সুভাষ কি জিত’। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ছ’টি গ্যালারিতে চলছে মাল্টিমিডিয়া প্রদর্শনী ‘নির্ভীক সুভাষ’। জাতীয় সংগ্রহশালা, ভারতীয় সেনা, ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের জাদুঘর, লাল কেল্লা এবং নেতাজি সুভাষ ব্যুরো থেকে পাওয়া সুভাষচন্দ্র বসুর ছবি, ভিডিয়ো, চিঠি, বেতার-বার্তা, নথি, আজান্দ হিন্দ বাহিনীর পোশাক ও ব্যবহৃত সামগ্রীর ১২৫টি নিদর্শনে ধরা নেতাজি ও তাঁর সঙ্গীদের স্মৃতি। এ বছর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-এর শততম বর্ষ, সারা বছর ধরে বিবিধ উদ্‌যাপনের অংশ এই প্রদর্শনীও চলবে বছরভর, ‘লিভিং’ প্রদর্শনীতে ক্রমে যুক্ত হবে আরও বহু ঐতিহাসিক নথি ও ছবি, প্রদর্শ। গত ১০ ফেব্রুয়ারি শুরু হল আজাদ হিন্দ বাহিনী ব্যবহৃত অস্ত্রের প্রদর্শনী। জাপানি রিভলভার, টাইপ ৩১ গান, ৯৬ মিমি লাইট মেশিনগান, কিজিরো টাইপ ৩০ রাইফেলের মতো বহু ঐতিহাসিক যুদ্ধাস্ত্র দেখার আবহে জীবন্ত হয়ে উঠল স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘটনাবহুল এক অধ্যায়।

স্মৃতির সত্যজিৎ

‘‘মানিকজেঠুর সঙ্গে আউটডোর শুটিং মানে পিকনিক। সেখানে সঙ্গী উৎপল দত্ত, কামু মুখোপাধ্যায়, সন্তোষ দত্ত!’’ উচ্ছ্বসিত সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিখ্যাত শেফার্স কলম এক নিমেষে তাঁর হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলেন ‘মানিককাকু’, মনে করে আজও শিহরিত মমতাশঙ্কর। সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বেঙ্গল হেরিটেজ ফাউন্ডেশন আয়োজন করেছিল এক আন্তর্জালিক অনুষ্ঠান, ‘রে বিহাইন্ড দ্য সিনস’। সাহিত্যিক শঙ্কর শোনালেন তাঁর কাহিনিকে কী ভাবে চিত্রনাট্যে পরিণত করতেন পরিচালক সত্যজিৎ। পূর্ণিমা দত্তের মতে, রবীন্দ্রনাথ বা নজরুলের মতো সত্যজিতের সঙ্গীত নিয়েও আলাদা গীতিবর্গ হওয়া উচিত। ছিলেন জয় বাবা ফেলুনাথ-এর মিউজ়িক-অ্যারেঞ্জার তপন কুমার দে। জানা গেল সেই মানবিকতা, সূক্ষ্মতা ও রসবোধের কথা, যা দিয়ে তৈরি হয়েছিল সত্যজিৎ-ব্যক্তিত্ব।

জল-ছবি

ই এম বাইপাস ধরে চলতে চলতে দু’ধারে ইমারতের সারি আর বিজ্ঞাপনের আড়ম্বরের পিছনে চোখে পড়ে বিস্তীর্ণ জলাভূমি অঞ্চল। পূর্ব কলকাতার এই জলাভূমি দীর্ঘ দিন ধরে শহরের ময়লা জল ও বর্জ্য টেনে নেওয়ার কাজ করে। সেই দূষিত জল পরিশোধিত হয়, সেখানে হয় মাছ চাষ আর ভেড়িগুলির মাঝের অঞ্চলে হরেক শাকসব্জি। বহু মৎস্যজীবী, কৃষিজীবী পরিবার নির্ভরশীল এই জলাভূমির উপর। ২০০২ সালে ‘রামসার’ তকমা পায় পূর্ব কলকাতার জলাভূমি, বিশিষ্ট ইকোলজিস্ট ধ্রুবজ্যোতি ঘোষের মুখ্য উদ্যোগে। গত ৩০ জানুয়ারি তাঁর জন্মদিনে ‘তৃতীয় পরিসর’ আয়োজন করেছিল প্রথম ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ স্মারক বক্তৃতা, আন্তর্জালে। বক্তা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শুভমিতা চৌধুরীর কথায় উঠে এল জলাভূমিকে চিনতে শেখানোর পাশাপাশি তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গভীর উদ্বেগও। আলোচনাটি শোনা যাবে ‘তৃতীয় পরিসর’-এর ইউটিউব চ্যানেলে।

অভিনব নির্মিতি

মরাঠি নাট্যকার সতীশ আলেকর-এর লেখা নাটক অবলম্বনে দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় ‘সংসৃতি’ নাট্যদলের সাম্প্রতিক প্রযোজনা একদিন মন্দিরে যাওয়ার পথে। দেবেশ তাঁর নাট্যনির্মাণে ব্যবহার করেছেন নিজস্ব নাট্যপদ্ধতি, “সেট, লাইট, মিউজ়িক, কস্টিউম, মেকআপ... সব কিছু নিয়েই কোলাঘাটে ক্যাম্প করে প্রতি দিন প্রায় বারো ঘণ্টার কাজ করেছি অভিনেতাদের সঙ্গে, তাঁরা প্রথাগত ভাবে সংলাপ মুখস্থ করেননি। গোটা নির্মাণটি গড়ে তুলেছি ইম্প্রোভাইজ়েশনের মাধ্যমে। সতীশ নিজেই উত্তেজিত এই নাট্যনির্মাণ পদ্ধতি নিয়ে,” জানালেন তিনি। প্রসেনিয়াম মঞ্চে আটকে না থেকে এর প্রথম অভিনয় হয়েছে কল্যাণীতে, খোলা পার্কে। ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধে সাড়ে ৬টায় অভিনীত হবে অ্যাকাডেমি মঞ্চে, সংসৃতি-র জন্মদিনে। মেঘনাদ ভট্টাচার্য ও অর্ণ মুখোপাধ্যায় এই নাটকের মূল অভিনেতা (ছবিতে)। অ্যাকাডেমিতেই সে দিন দুপুর ৩টে এবং ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ৩টে ও সন্ধে সাড়ে ৬টায় সংসৃতি-র অন্য প্রযোজনাগুলি— শের আফগান, সওদাগরের নৌকা ও ফ্যাতাড়ু।

ঠাকুরবাড়ির গান

দ্বারকানাথের আমলে শুরু, ঠাকুরবাড়ির সাঙ্গীতিক পরিবেশ ঘন হয় দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগ্রহে। রবীন্দ্রনাথ তো বটেই, ঠাকুরবাড়ির অন্য সদস্যরাও সঙ্গীতসাধনায় মগ্ন ছিলেন। সৌরীন্দ্রমোহন দেশি গীতবাদ্য সমৃদ্ধ করেছেন, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ বিদেশি বাদ্যযন্ত্র। দ্বিজেন্দ্রনাথের স্বরলিপি-দক্ষতা, সত্যেন্দ্রনাথের অন্য প্রদেশের সুর ভাঙা গানে পুষ্ট হয়েছে বঙ্গসঙ্গীত। বাংলায় অপেরাধর্মী গীতিনাটিকার প্রচলনে স্বর্ণকুমারী দেবীর, বিদেশি কাঠামোয় দিশি গান ভরে দেওয়ায় সৌদামিনী দেবীর অবদান। সঙ্গীতে পাশ্চাত্য ডিগ্রি ছিল ইন্দিরা দেবীর, স্বতন্ত্র গীতিমহীরুহ হয়ে উঠেছিলেন দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরও। ঠাকুরবাড়ির গানের ঐতিহ্য নিয়ে লন্ডনের ‘আনন্দধারা আর্টস’-এর প্রযোজনায় সম্প্রতি হল এক আন্তর্জালিক অনুষ্ঠান, ভাষ্যে পীতম সেনগুপ্ত, গানে ‘ইন্দিরা’ শিল্পীগোষ্ঠী। সত্যেন্দ্রনাথ-জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর প্রপৌত্রী সুকন্যা ঠাকুর চৌধুরীর উদ্যোগেই পথ চলা শুরু ‘ইন্দিরা’র।

পাঠকের অপরাহ্ন

নমিতা চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সাহিত্যের ডাকসাইটে পাঠক। তাঁর প্রেরণাতেই কলম হাতে নেওয়া তাঁর মেয়ে অনিতা অগ্নিহোত্রীর। মায়ের নামে প্রতি বছর সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি। সপ্তম বছরের নমিতা চট্টোপাধ্যায় সাহিত্য পুরস্কার অনুষ্ঠান ২০ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেল ৪টেয়, নিউটাউনের নজরুলতীর্থ মুক্তমঞ্চে। সম্মানিত করা হবে তৃষ্ণা বসাকের আত্মারামের নতুন খাঁচা বইটিকে। বিজ্ঞান ও কল্পনার পথে নতুন এক পৃথিবীর কথা এই বইয়ে। নিজেদের জীবন ও গদ্য নিয়ে বলবেন তিন গল্পকার— সাদিক হোসেন, আয়েশা খাতুন, সম্বিৎ চক্রবর্তী। কবিতায় যশোধরা রায়চৌধুরী, সেবন্তী ঘোষ, মিতুল দত্ত। পুরস্কার প্রদান ও বই উন্মোচনে থাকবেন অনিল আচার্য, অমর মিত্র ও দেবাশিস সেন।

হাত বাড়ালেই

অ্যাপের ছোঁয়ায় দোরগোড়ায় হাজির হয় ক্যাব, বাইক। দেখে নেওয়া যায় বাস, লঞ্চ, মেট্রোর গতিবিধিও। আরও জরুরি যে পরিষেবা, তা এত দিন ছোঁয়া পায়নি এই প্রযুক্তির। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দিগন্ত সাহার তত্ত্বাবধানে অ্যাম্বুল্যান্স বুকিং অ্যাপ তৈরি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই ছাত্র অঙ্কিত পাড়িয়া ও অঙ্কন বিশ্বাস। নাম ‘অ্যাম্বুল্যান্স গো’। এই অ্যাপের মাধ্যমে কলকাতার মধ্যে যে কোনও জায়গায় ডাকা যাবে অ্যাম্বুল্যান্স, তা পৌঁছে দেবে গন্তব্যে। অ্যাম্বুল্যান্স ডাকার ও পাওয়ার দেরিতে প্রায়ই নষ্ট হয় মূল্যবান সময়, ডাক্তারি পরিভাষায় যা ‘গোল্ডেন আওয়ার’। এই অ্যাপে আগে থেকে বুক করে রাখা বা একাধিক ‘ড্রপ লোকেশন’-এ পৌঁছে দেওয়ার সুবিধে থাকায় বাঁচবে জরুরি সময়। অত্যাবশ্যক এই পরিষেবা সংক্রান্ত অ্যাপ দেশে এই প্রথম, জানা গেল।

ষাঁড়ের বছর

বসন্তের উদ্‌যাপন ও পূর্বজদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, এই নিয়ে চিনা বর্ষবরণ উৎসব। এই শহরের বৌবাজার ও ট্যাংরার চিনেপাড়াতে সাধারণত চিনা নববর্ষের পাঁচ দিন আগে থেকেই শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাড়িঘর পরিষ্কার করে, আলোর মালায় সাজিয়ে তোলা এই উৎসবের অঙ্গ। চলে শুভেচ্ছা বিনিময়, এক সঙ্গে খাওয়াদাওয়া। প্রতিটি নতুন চিনা বছরের সঙ্গে রাশিচক্র অনুযায়ী বারোটি জীবজন্তুর মধ্যে থেকে একটি জন্তুর চারিত্রিক বিশিষ্টতা যুক্ত হয়। সেই প্রথা মেনে ‘ইঁদুরের বছর’ শেষ হয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হল নতুন ‘ষাঁড়ের বছর’। তবে বৌবাজারের চিনেপাড়ায় উৎসবে এ বার অতিমারির ছায়া। পরম্পরা মেনে ঢাক ও করতালের সঙ্গে লায়ন বা ড্রাগন নাচ, পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানানো ও চিনা দেবতাদের মন্দিরে প্রার্থনার মতো প্রথাগুলি পালিত হল। ট্যাংরার চিনেপাড়ায় মূল অনুষ্ঠান হল পেই মে চিনা হাই স্কুল চত্বরে। চিনা কালীবাড়িতে পুজো দেওয়া হল শহরের মিশ্র সংস্কৃতির ঐতিহ্য মেনে।

ব-এ বিভ্রাট

সংস্কৃত কলেজে পড়ার সময় ঈশ্বরচন্দ্র সরস্বতী পুজোর আবহে বেঁধেছিলেন সরস শ্লোক: লুচী-কচুরী-মতিচুর-শোভিতং/ জিলেপি-সন্দেশ-গজা-বিরাজিতম্।/ যস্যাঃ প্রসাদেন ফলারমাপ্নুমঃ/ সরস্বতী সা জয়তান্নিরন্তরম্।। তা সে সংস্কৃত আর নেই, সংস্কৃতিও। এখন ‘সরস্বতী’ বানানে ব-ফলা কোথায় বসবে, সেই নিয়েই অনন্ত মাথা চুলকানো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement