Kolkatar Korcha

কলকাতার কড়চা: একদা সম্পদ, এখন আপদ

পুকুর, খাল-সহ শহরের জলসম্পদ সংরক্ষণে আমাদের সচেতনতার অভাব থেকে তৈরি হয়েছে ভবিষ্যতের যে বিপদ, তা নিয়ে কাজ করে চলেছে জলাদর্শ কালেক্টিভ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৮
Share:

কলকাতার খালগুলিতে এক সময় জোয়ার-ভাটা খেলত। সমুদ্রের নৈকট্যের কারণে ও হুগলি নদীর পূর্ব তীরে ভৌগোলিক অবস্থানের ফলে এই জলপথ ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের সুযোগ খুলে দেয় দেশি-বিদেশি বণিকদের সামনে। হুগলি ও তার সমান্তরাল ভাবে বয়ে চলা বিদ্যাধরীর শাখা-উপশাখাগুলির সুবিধা কাজে লাগিয়ে কলকাতা আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ এক বাণিজ্য বন্দর ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসাবে। ১৭৭৮ সালে টালি নালার মাধ্যমে হুগলি ও বিদ্যাধরীর সংযোগে জলপথে বাণিজ্য গতি পেল আরও।

Advertisement

উনিশ শতকে বাংলায় রেলপথ স্থাপনের এক দশক পরেও এই খাল ও নদীর এই বিস্তৃত ‘নেটওয়ার্ক’ ব্যবহার করে বিপুল পণ্য পরিবহণ হত। গ্যালিফ স্ট্রিটের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা ‘ক্যানাল ভিলা’ বাড়িটি আজও সেই পণ্য শুল্ক আদায়ের সাক্ষী। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় বসানো লকগেট ব্যবস্থা কাজে লাগিয়ে জোয়ারের সময় খালে ঢুকে আসা অতিরিক্ত জল কৃষিক্ষেত্রে সেচের কাজে ব্যবহার হত। জীবন, জীবিকা ও জীববৈচিত্রের বিকাশে সহায়ক হত এই ‘ক্যানাল সিস্টেম’।

কিন্তু এক সময় দেখা গেল, অন্যান্য প্রয়োজন ছাপিয়ে বর্জ্য নিষ্কাশনের পথ হিসাবেই রয়ে গেল খালের মূল কার্যকারিতা। কলকাতার জন্মলগ্ন থেকেই জমির স্বাভাবিক ঢাল অনুসারে নিকাশি ব্যবস্থার গতিপথ পুব মুখে কুলটি গাঙ হয়ে বিদ্যাধরী নদীতে মিশত। ১৮৫৬ সাল থেকে শহরের নিকাশি ব্যবস্থার অংশ হিসাবে কাজে আসা এই নেটওয়ার্কের ব্যাপক সম্প্রসারণ করে ১৯২৮ সালে অতিরিক্ত খালপথ যুক্ত হয়। স্বাধীনতার পর জমির উপর চাপ বাড়তে থাকার ফলে খালগুলি সঙ্কুচিত হতে শুরু করল। তাতে ফেলা হতে লাগল বিপজ্জনক অপরিশোধিত বর্জ্য। খাল মানে শুধুই যেন অসুখ ও আবর্জনাময় আপদ, যাকে বিদায় করাই ‘উন্নয়ন’। জোয়ার-ভাটার খেলা সাঙ্গ হল, মুছে গেল বহু জীবিকা, জীববৈচিত্রও। সেই কফিনে শেষ পেরেক পোঁতা হল দক্ষিণে মেট্রো পরিষেবা সম্প্রসারণের সময়।

Advertisement

পুকুর, খাল-সহ শহরের জলসম্পদ সংরক্ষণে আমাদের সচেতনতার অভাব থেকে তৈরি হয়েছে ভবিষ্যতের যে বিপদ, তা নিয়ে কাজ করে চলেছে জলাদর্শ কালেক্টিভ। ক্ষেত্রসমীক্ষা ও বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণের পাশাপাশি, শিল্পের নানা আঙ্গিক ব্যবহারে এ কাজে তারা সাধারণ মানুষকেও যুক্ত করতে চেয়েছে। তাদেরই উদ্যোগে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে যদুনাথ ভবন মিউজ়িয়ম অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার-এ শুরু হয়েছে শিল্প ও গবেষণাধর্মী অনুষ্ঠান ‘টুয়ার্ডস সাসটেনেবেল ফ্লোজ়’। গতকাল ৬ সেপ্টেম্বর দু’টি আলোচনা হয়ে গেল কলকাতার খাল ও জলসম্পদের নিয়ন্ত্রণ ও কার্যকরী পরিকল্পনার রূপায়ণে নাগরিক অংশগ্রহণ নিয়ে, শহরের খালগুলি ঘিরে শিল্প স্থাপত্য নন্দনতত্ত্বের দিক থেকেও। আজ ও আগামী কাল দেখা যাবে শিল্প প্রদর্শনী, গান, নাটক। প্রতিষ্ঠানের গবেষণাভিত্তিক বই টুয়ার্ডস সাসটেনেবল ফ্লোজ়: আ সিটিজেন’স অডিট অব কলকাতা’স ক্যানালস-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশও হচ্ছে এই আয়োজনে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, দুপুর ৩টে-সন্ধ্যা ৭টা। ছবিতে দূষিত ফেনিল বাগজোলা খাল, বই থেকে।

সুনীল ৯০

শনিবার ঘুম ভেঙে সংবাদপত্রের থেকে চোখ তুলে যে কবি শুনতে পান কলকাতার পথে সাইরেনের শব্দ, সেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (ছবি) লিখেছিলেন: “আমি পুলিশের বোকামি দেখে প্রকাশ্যে হাসাহাসি করবো”। কলকাতার রাস্তায় বৃষ্টির মধ্যে গাড়িবারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা ‘গোছা গোছা বিষণ্ণ মানুষ’ দেখে নীললোহিতের মনে হয়েছিল হাসি হারিয়ে গেছে এ শহর থেকে, আজকের মতো সে দিন‌ও শহরের ‘চোখে লেগেছিল কুমারী শবের ধোঁয়া’। প্রতিবাদে উত্তাল আজকের কলকাতা কোন সত্য উঠিয়ে আনত তাঁর কলমে? আজ নব্বই পূর্ণ করলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করেছে আবৃত্তিলোক এবং দ্য বেঙ্গল, তাদের অনুষ্ঠান-ভাবনা— ‘প্রতিবাদের স্বরকে মনে রেখে’। থাকবেন স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়, সঙ্গে শহরের লেখক কবি আবৃত্তিকার নাট্যজনেরা; ব্রততী পরম্পরা ও আবৃত্তিলোক-এর শিল্পীরা। বাংলা আকাদেমি সভাঘরে, আজ ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায়।

দেশভাগ নিয়ে

নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রান্সলেশন অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ় এবং লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের মধ্যে স্বাক্ষরিত হল যৌথ সমঝোতাপত্র, বিষয় বাংলার পার্টিশন ও জনগবেষণা প্রকল্প। দুই প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষকরা বাংলার বিভিন্ন জেলায় অশীতিপর উদ্বাস্তু মানুষদের সঙ্গে কথা বলবেন; সংগ্রহ করবেন ছবি, চিঠিপত্র, ডায়েরি, গুরুত্বপূর্ণ নথি। ইতিমধ্যেই ৫০০টি মৌখিক সাক্ষাৎকার, ২৫টি বক্তৃতা ছাড়াও বাংলার পার্টিশন কথা: উত্তর প্রজন্মের খোঁজ গ্রন্থের দু’টি খণ্ড প্রকাশিত। আগামী দু’বছরে সংগৃহীত আলাপচারিতা, সাক্ষাৎকার সমৃদ্ধ করবে গবেষণা— দেশভাগ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংগ্রহশালাকেও।

গান-যাত্রা

কেবলই লোকগানের শিল্পী বললে সবটা বলা হয় না। লোকগান স্বপন বসুকে নিয়ে গিয়েছে বাংলার তো বটেই, ভারতেরও প্রান্তে ও প্রত্যন্তে। নানা জনগোষ্ঠীর নিজস্ব গান চয়ন করেছেন, ধরে রেখেছেন গলায়, আপন করেছেন নানা ভাষা উচ্চারণ ও সুরবিন্যাস। এ দিক থেকে তাঁর ভূমিকাটি শিল্পীর গণ্ডি পেরিয়ে হয়ে উঠেছে এক জন এথনো-মিউজ়িকোলজিস্টের, লোকগানের বিশ্লেষকের। স্বীকৃতিও এসেছে ওঁর এই কাজের: আশির দশকেই লোকগান-চর্চায় কেন্দ্রীয় সরকারি বৃত্তি, অ্যানথ্রপলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র রিসার্চ ফেলোশিপ, পারফর্মিং আর্টে জাতীয় ফেলোশিপ তারই সাক্ষ্যবহ। সাড়ে তিন দশকের গান-যাত্রাকে সাথী করেই আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রবীন্দ্রসদনে গান গাইবেন শিল্পী, সঙ্গী ওঁর কন্যাও।

জন্মদিনে

অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে গড়া ‘নান্দীমুখ’ নাট্যদলের যাত্রা শুরু সত্তর দশকের শেষে। তাঁর অকালপ্রয়াণের পর দীর্ঘ পাঁচ দশক দলের দায়িত্ব সামলেছেন অশোক চট্টোপাধ্যায়। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অ্যাকাডেমি মঞ্চে উদ্‌যাপিত হবে দলের ৪৮তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান: স্মৃতিচারণ করবেন অজিতেশকে কাছ থেকে দেখা অশোক মুখোপাধ্যায়, আবৃত্তিতে প্রবীর ব্রহ্মচারী। মঞ্চস্থ হবে সুনীল গঙ্গোপাধ‍্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে লন্ঠন সাহেবের বাংলো; অসিত বসুর সম্পাদনা পরিকল্পনা ও অভিনয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, নির্দেশনায় অশোক চট্টোপাধ্যায়। ২০১৯ থেকে নিয়মিত অভিনীত নাটকটির এই পর্যায়ে সে দিনই শেষ উপস্থাপনা।

রাতের থিয়েটার

শূন্য বয়স থেকে শতবর্ষের কোঠায় আসা নারীও শুধুই একটি মেয়ে, তার অন্য কোনও পরিচয় নেই! সে পুরুষের বিকৃতি ও প্রতিহিংসার শিকার হবে বার বার; রাষ্ট্রক্ষমতা প্রমাণ লোপাট, তথ্যের বিকৃতি, মিথ্যাচার করে দমননীতি দুর্নীতি চালিয়ে যাবে আর আমাদের সহ্য করে যেতে হবে? প্রশ্ন তুলছিলেন সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত। তিনি, অদ্রিজা দাশগুপ্ত-সহ বিভিন্ন প্রজন্মের নাট্যশিল্পীরা সমবেত হবেন আজ ৭ সেপ্টেম্বর অ্যাকাডেমিতে, সেখানকার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের আহ্বানে ‘সারারাত মেয়েদের থিয়েটার’-এ। রাত ১০টা থেকে: সীমা মুখোপাধ্যায়, তূর্ণা দাশ, সঞ্জিতা, শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য, ন্যান্সি ও প্রান্তিক চৌধুরী এবং পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় স্পেয়ার পার্টস, বীরাঙ্গনা কাব্য, শীতলপাটি, মুজাহেমাৎ, অপরাজিতা আজও আর টাইপিস্ট। সেই সঙ্গে নাটকের গান, কবিতা, কথকতাও।

এক কাপ চায়ে

ফিয়ার্স লেনে রাত জাগছিলেন ডাক্তাররা, গান ও স্লোগানে, সঙ্গী ছিল চা। চা-ই তো জাগিয়ে রাখে রাত, প্রতিবাদী গলায় জোর আনে আরও। সকালেও দেখা গেল, সহমর্মী নাগরিকেরা এসে চা খাইয়ে যাচ্ছেন রাত-জাগা ছেলেমেয়েদের। কলকাতার সঙ্গে চায়ের প্রেমসম্পর্ক সমাজতাত্ত্বিক গবেষণার দাবিদার, তার কিছুটা ধরা পড়বে গ্যোয়টে ইনস্টিটিউট-ম্যাক্সমুলার ভবন কলকাতা, ইন্ডিয়ান মিউজ়িয়ম ও বোটানিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার যৌথ উদ্যোগে প্রদর্শনীতে, ‘ট্রাভেলিং প্ল্যান্টস: কলকাতা’। লিনা ভিনসেন্টের কিউরেট করা এই প্রদর্শনীতে ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক শিল্পীরা মেলাতে চাইছেন বিজ্ঞান, শিল্প ও প্রকৃতিকে। তারই অঙ্গ হিসাবে আজ ইন্ডিয়ান মিউজ়িয়মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চা নিয়ে কথালাপ ‘স্টর্ম ইন আ টি কাপ’, থাকবেন শুদ্ধব্রত সেনগুপ্ত সোনিয়া জব্বার ও নাজ়েস আফরোজ়।

জীবন-ছবি

কারখানায় কাজ করা লুকাস কলেবরে বাড়তে থাকা শহরের অংশীদার নয়। তাঁর জীবনযুদ্ধে একমাত্র আনন্দ নির্জন দুপুরে প্রেয়সীর সঙ্গ আর নেশা। এটুকু সুখও টেকে না, এক দিন চোখের সামনেই নিখোঁজ হয় মেয়েটি, নেশার ঘোরও কাটে। লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন লেপার্ড-এর জন্য মনোনীত ছিল মেক্সিকোর ছবি মোস্ত্র (ছবি)। এই ছবি দিয়েই ফিরছে সিনে সেন্ট্রাল-এর ‘ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অব নিউ সিনেমা’ উৎসব, যৌথ আয়োজনে রামমোহন লাইব্রেরি অ্যান্ড ফ্রি রিডিং রুম। ইরান জার্মানি ফ্রান্স বাংলাদেশ উজ়বেকিস্তান ভেনেজ়ুয়েলা-সহ নানা দেশের ছবি: রক্ষণশীল সমাজের অন্তরালে বয়ঃসন্ধির প্রেম, অসুস্থ একলা মায়ের সন্তানকে বড় করে তোলার দুশ্চিন্তা, জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় জীবন-জীবিকার সঙ্কট— বিষয়বস্তু স্থানিক হয়েও আন্তর্জাতিক। উৎসব উদ্বোধন আজ সন্ধে ৬টায় রামমোহন লাইব্রেরি হল-এ, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রোজ দু’টি করে ছবি।

সুরময়

মঞ্চে গান শুরু করে খাতায় কথা খুঁজছেন মান্না দে, মাইক্রোফোনে বলছেন, “প্লে বেবি প্লে।” যাঁর উদ্দেশে বলা, তিনি বেবি ওরফে প্রতাপ রায়। মান্না দে-সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে প্রতাপে সঙ্গত করতেন, মুখের সামনে ধরিয়ে দিতেন গানটি, এই সময় তার তল পাবে না। সলিল চৌধুরী হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ভি বালসারা, ত্রয়ীর সঙ্গে কাজ করলেও গুরু মানতেন পিয়ানো অ্যাকর্ডিয়নের সম্রাট ওয়াই এস মুলকিকে। ১৯৬৭ থেকে ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারে, ‘বিস্তীর্ণ দু’পারে’ গানে ওঁর অ্যাকর্ডিয়ন-বাদন ইতিহাস! পরে এলেন কল্যাণ সেন বরাটের ক্যালকাটা কয়্যারে। আমেরিকায় বঙ্গ সম্মেলনে মান্না দের ‘লগা চুনরি মে দাগ’-এ ওঁর সঙ্গত আজও অনেকের স্মৃতিতে। পিয়ানো, পিয়ানো অ্যাকর্ডিয়ন, কি-বোর্ড, হারমোনিয়মে কীর্তিত, আটপৌরে বাঙালিয়ানায় মোড়া শিল্পী। খোঁচালে তবে জানা যেত, তালাত মাহমুদ, মুকেশ-সহ অনেকে চেয়েছিলেন ওঁকে মুম্বইয়ে। আজীবন তবু থেকে গেলেন এ শহরে, গত ১ সেপ্টেম্বর প্রয়াণের আগে অবধি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement