কলকাতার কড়চা: শতবর্ষে সুভাষ মুখোপাধ্যায়

অক্ষরবৃত্ত ছন্দের মাত্রারীতিতে তিনি যে প্রায় বৈপ্লবিক এক বদল এনে দিয়েছেন, তা নিয়ে সুভাষ উত্তর দিচ্ছিলেন শঙ্খের প্রশ্নের, বলছিলেন, বিশ্লেষণ করা ছন্দজ্ঞানের দরকার হয় না কবির, দরকার হয় কেবল বোধময় ছন্দজ্ঞানের।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৫২
Share:

ছোটোবেলায় ধোপাদের কাপড়কাচার শব্দ শুনতেন তিনি বাড়ির পিছনে, তাঁর কানে লেগে ছিল সেই তাল, আর ছিল লোকমুখের স্পন্দের উপর ভর করার সাহস, কথার চালগুলি ভালো করে লক্ষ করবার ইচ্ছে। ভেবেছিলেন, লিখতে হবে ঠিক তেমন করে, যেমনভাবে কথাবার্তা বলে লোকে, ছন্দকে তুলে আনতে হবে কেবল সেইখান থেকে। আর, ঠিক সেখান থেকে তুলতে পেরেছেন বলেই বাংলা অক্ষরবৃত্তে একটা স্বাভাবিক বাচন তৈরি হয়ে গেছে তাঁরই কবিতার পথ ধরে।’ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবি হয়ে-ওঠার প্রস্তুতিপর্ব শুনিয়েছিলেন শঙ্খ ঘোষ, কুড়ি বছর আগে তাঁর সময়ের জলছবি-তে। বহরমপুরে এক সন্ধ্যার অন্ধকারে পথ হাঁটতে-হাঁটতে সুভাষ আর শঙ্খ কথা বলছিলেন। অক্ষরবৃত্ত ছন্দের মাত্রারীতিতে তিনি যে প্রায় বৈপ্লবিক এক বদল এনে দিয়েছেন, তা নিয়ে সুভাষ উত্তর দিচ্ছিলেন শঙ্খের প্রশ্নের, বলছিলেন, বিশ্লেষণ করা ছন্দজ্ঞানের দরকার হয় না কবির, দরকার হয় কেবল বোধময় ছন্দজ্ঞানের। চল্লিশের দশকে ‘পদাতিক’-এর কবি পেরিয়েছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, দেশভাগ, দাঙ্গা; সদস্য ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির, স্বাধীনতার পর তা নিষিদ্ধ হওয়ায় জেলেও কাটে কিছুকাল, লিখেছিলেন ‘শতাব্দীলাঞ্ছিত আর্তের কান্না/ প্রতি নিশ্বাসে আনে লজ্জা।’ বহুকাল পরে আবার লিখেছিলেন ‘লেনিন যেন চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বললেন,/ শতাব্দী শেষ হয়ে আসছে—/ একটু পা চালিয়ে, ভাই, একটু পা চালিয়ে।।’ আজ একশো-য় পা দিলেন কবি (১৯১৯-২০০৩)। আগামী কাল ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টায় ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে তাঁর জন্মদিন উদ্‌যাপিত হবে কথা, কবিতা, গান ও পাঠে। থাকবেন শঙ্খ ঘোষ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অমিয় দেব-সহ দুই বাংলার শিল্পীরা। আয়োজক সপ্তাহ পত্রিকা ও দে’জ পাবলিশিং।

Advertisement

নব্বইয়ে পা

Advertisement

আট বন্ধু মিলে দিল্লির আইফ্যাক্স গ্যালারিতে ছবির প্রদর্শনী করলেন ১৯৬৪-র জানুয়ারিতে। প্রদর্শনীর সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে তৈরি করলেন নতুন শিল্পী গোষ্ঠী ‘ক্যালকাটা পেন্টার্স’। প্রথম প্রদর্শনী হল কলকাতার আর্টিস্ট্রি হাউসে, ১৯৬৪-র নভেম্বরে। এই আট জনেরই অন্যতম শিল্পী রবীন মণ্ডল। জন্ম হাওড়ায়, ১৯২৯ সালে। শিল্পচেতনার উন্মেষ ছোটবেলাতেই, কিন্তু অসুস্থতার কারণে অনেক দিন গৃহবন্দি থাকতে হয়। নানা বাধাবিঘ্নের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে তাঁর শিল্পীজীবন। এরই মধ্যে সমৃদ্ধ হয়েছেন বিচিত্র অভিজ্ঞতায়, তৈরি হয়েছে তাঁর নিজস্ব জীবনবোধ। ১৯৬২ সালে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে একক প্রদর্শনীর পর অর্ধশতাধিক একক ও যৌথ প্রদর্শনী করেছেন। পেয়েছেন অবনীন্দ্র পুরস্কার। তাঁর নব্বই বছরে পদার্পণ উপলক্ষে ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সম্মাননাসভা। প্রদর্শিত হবে সন্দীপ রায় পরিচালিত তথ্যচিত্র ‘তোমার আদিম মুখগুলো’।

নয়না দেবী

বড় বোন পালিয়ে সিনেমার নায়িকা। ছোট পুরুষতন্ত্রের বাঁধন ছিঁড়ে ঠুমরি গায়িকা। সাধনা সেন, নিলীনা সেন— পরে যাঁরা বিখ্যাত সাধনা বোস আর নয়না দেবী নামে। পারিবারিক ঐতিহ্যও কম নয়, দুই বোনের প্রপিতামহ কেশবচন্দ্র সেন।
এ বছর নয়না দেবীর জন্মশতবর্ষ। কলকাতা হয়তো ভুলে গিয়েছে। কিন্তু ইলাহাবাদের নাট্য সংগঠন ‘রূপকথা’ আমন্ত্রণ জানিয়েছে কলকাতার নাট্যদল ‘কুশীলব’কে। ১৭ ফেব্রুয়ারি সেখানে এই শতবর্ষ উদ্‌যাপন। কুশীলব নয়না দেবীর জীবন ও গান নিয়ে তৈরি করেছে সুরের বাঁধনে নাটক। নাটকের থিম দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, উনিশ শতকে নিধুবাবুর আমলে উস্তাদ পরিবারের বাইরে থেকে আসা পুরুষরাও শাস্ত্রীয় সংগীত গেয়ে ঝড় তুলেছিলেন, কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে সেটা হয় অনেক পরে। পুরুষতন্ত্রের ছক ভেঙে, তওয়াইফ বা বাইজিদের তকমা ছিন্ন করে শিক্ষিত মেয়েদের শাস্ত্রীয় সংগীতে আসা— নয়না দেবী তার প্রথম উদাহরণ। নাটকের সুর অর্থনীতিবিদ সুগত মারজিতের।

উদীচী

ধর্মের মুখোশ পরে স্বৈরতন্ত্র আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। খাওয়া পরা কথা বলা— যে কোনও অধিকারই আজ বিপন্ন। ধর্মকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে মানুষে মানুষে লড়িয়ে দেওয়ার রাজনীতি হয়ে উঠেছে প্রবল। ভারত বাংলাদেশ দুই দেশেই সাম্প্রদায়িকতার তাণ্ডব এখন নানা বেশে নানা কায়দায়। এই অমঙ্গ‌লের প্রতিরোধে শামিল দুই বাংলার মানুষ। এ পারের ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি উদ্যোগ’-এর ডাকে সাড়া দিয়ে ‘বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী’ আসছে কলকাতায়। অসহিষ্ণুতা আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গণচেতনার উন্মেষে গত পাঁচ দশক ধরে সক্রিয় ‘উদীচী’। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল চারটেয় রানুচ্ছায়া মঞ্চে (অ্যাকাডেমির সামনে) ‘ভালবাসা ও প্রশান্তির পৃথিবী’ নৃত্যালেখ্য পরিবেশন করবেন তাঁরা। তার আগে ১১-১৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীনিকেতন, বৈদ্যবাটি, শ্রীরামপুর এবং উলুবেড়িয়ায় তাঁদের প্রতিবাদের শিল্পিত ভাষ্য উপস্থাপন করছেন উদীচীর শিল্পীরা।

মথুরানাথ স্মরণে

‘লীলাপ্রসঙ্গ’-কার দেখিয়েছেন যে, এক দিকে রানি রাসমণির জামাতা মথুরানাথ বিশ্বাস যেমন শ্রীরামকৃষ্ণের দৈবশক্তির উপর নির্ভর করতেন, তেমনই আবার তিনি ঠাকুরকে অনভিজ্ঞ বালকপ্রায় জেনে সর্বদা তাঁর রক্ষণাবেক্ষণে তৎপর থাকতেন। দক্ষিণেশ্বরের মন্দির-প্রতিষ্ঠার কয়েক সপ্তাহ পরেই ঠাকুরের সৌম্য দর্শন, কোমল প্রকৃতি, ধর্মনিষ্ঠা ও অল্প বয়স মথুরবাবুর নয়নাকর্ষণ করেছিল। শ্রীরামকৃষ্ণের ব্যবহারিক জীবনের প্রয়োজনসিদ্ধির প্রথম ও প্রধান রসদদার মথুরানাথ বিশ্বাস-এর স্মরণে এ বার সূত্রধর এবং লোকমাতা রানী রাসমণি ফাউন্ডেশন-এর উদ্যোগে তাঁরই নামাঙ্কিত এক স্মৃতি-বক্তৃতার আয়োজন হয়েছে ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টেয় দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের নাটমন্দির-এ। বলবেন স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজি। প্রকাশিত হবে অপরাজিতা দেবীর রানী রাসমণি, স্বামী গম্ভীরানন্দজির মথুরানাথ বিশ্বাস এবং স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজির শ্রীরামকৃষ্ণ ও দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণী বই তিনটি।

চতুষ্পাপ

বারো শতকের শেষ পর্বের বাংলা, রাজা লক্ষ্মণসেনের আমল। বিপরীতে তুরকি হানাদার বখতিয়ার খিলজি। সেই সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্খলনের ফাঁক গলে কেমন করে অনুপ্রবেশ করে বিদেশি-বিজাতীয় সংস্কৃতি, দখল নেয় দেশের— এই প্রেক্ষাপটেই রঙ্গপট তাদের নতুন নাটক ‘চতুষ্পাপ’ মঞ্চস্থ করতে চলেছে অ্যাকাডেমিতে, ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। চন্দন সেনের নাটকটির বুনন মূলত ইতিহাসের নিষ্ঠ প্রেক্ষাপটে খানিক কল্পনার আশ্রয়ে। ব্যবহার করা হয়েছে বাংলার নিজস্ব গৌড়ীয় নৃত্যশৈলী, দেশজ মার্শাল আর্ট প্রভৃতি। অভিনয় করেছেন সেঁজুতি মুখোপাধ্যায়, সঞ্জীব সরকার, রায়তী বসু, রাজীব বর্ধন, স্বপনকুমার, বিপ্লাণু মৈত্র, কমল ব্রহ্ম প্রমুখ। পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় তপনজ্যোতি।

মাধুরীর ছবি

ওয়েস্ট বেঙ্গল স্প্যাস্টিকস সোসাইটি ১৯৭৪ সালে প্রথম যখন কলকাতায় কাজ শুরু করে, সেই সময়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ছিল পাঁচ বছরের মিঠু, মাধুরী কপূর। বুদ্ধিমান এই শিশুটি ছিল শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাকে হেড ব্যান্ডের সঙ্গে লাগানো হেড পয়েন্টার দিয়ে কম্পিউটারের কাজ করতে যেমন শেখানো হয়েছিল, তেমনই হেড ব্যান্ডে লাগানো তুলি দিয়ে সে ক্যানভাসে চমৎকার ছবিও আঁকত। এই ছবির জন্যই সে রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদকও পেয়েছিল। সেরিব্রাল পলসি মাধুরীকে কাবু করতে পারেনি, তিনি নিজের মতো করেই বেঁচেছিলেন। ২০১৬ সালে মাধুরী প্রয়াত হন। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সেরিব্রাল পলসি এ বার তাঁর ছবির প্রদর্শনী আয়োজন করেছে উইভার্স স্টুডিয়ো সেন্টার ফর দি আর্টস-এ। ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন শুভাপ্রসন্ন ও শিপ্রা ভট্টাচার্য। চলবে ১৮ পর্যন্ত, রোজ ৪-৮টা।

সুরশিল্পী

ছত্রিশটি নাট্যদলের ৫৩টি নাটকে ৩৮৫টি গানের সঙ্গে যাত্রাপালা, দূরদর্শন নাটক-সিরিয়াল মিলিয়ে পাঁচশোর বেশি গানে তাঁর সুরারোপ, এ ছাড়া বেশ কিছু কণ্ঠসংগীতে নাট্যজগৎ ঋদ্ধ। হেমাঙ্গ বিশ্বাস, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, শ্যামল চক্রবর্তী, জ্ঞান দাস প্রমুখের কাছে শিক্ষা মুরারি রায়চৌধুরীর। পাইকপাড়া ‘নান্দনিক’-এর ‘চাঁপাডাঙ্গার মেলা’ নাটকে প্রথম সংগীতে সুরারোপ। পরে ‘নান্দীকার’-এর ‘খড়ির গণ্ডি’ নাটকে সুরারোপ ও গায়ক-অভিনেতা হিসাবে কাজ। সংগীত নাটক অকাদেমি, পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমির শ্রেষ্ঠ আবহসংগীত পরিচালক, লেবেদভ পুরস্কারসহ বহু সম্মানে ভূষিত চুয়াত্তর বছরের শিল্পীর সাতাত্তরটি গান নিয়ে চারটি সিডি, সঙ্গে গানের একটি বই প্রকাশিত হবে ‘কালিন্দী নাট্যসৃজন’-এর আঠারোতম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আজ অ্যাকাডেমিতে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায়। এই অনুষ্ঠানকে বাড়তি মাত্রা দেবে মৈনাক সেনগুপ্তের ‘নিষ্কৃতি’ নাটকের মঞ্চায়ন।

প্রান্তিক কবি

১৯৭৭ সাল। বাংলা কবিতার মানচিত্রে ব্রাত্যভূমি পুরুলিয়া থেকে আগুনের গোলার মতো ছুটে এল একটি ঘোষণা ‘আমরা সত্তরের যীশু’। নড়েচড়ে বসলেন সনাতন পাঠক। কবির নাম নির্মল হালদার। ‘প্রান্তিক কবি’ হিসেবেই যিনি বাংলা কবিতায় নিজের স্থান অক্ষয় করে নিয়েছেন। ‘অস্ত্রের নীরবতা’, ‘সীতা’, ‘মৃত্যুঞ্জয়’, ‘ধান ও জলের ধ্বনি’-সহ ত্রিশটি কাব্যগ্রন্থ, ছয়টি গদ্যগ্রন্থ এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত, পেয়েছেন বাংলা আকাদেমির সুনীতা–অনিলকুমার বসু পুরস্কার। পুরুলিয়ার রাঙা মাটি, খরা, দারিদ্র, আদিবাসী সমাজের পাশাপাশি ‘সমকাম’কে আত্মজৈবনিক পরিসরে আমাদের সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার অন্যতম কারিগর এই কবির হাতে ‘অহর্নিশ সম্মাননা ২০১৮’ তুলে দেবে ‘অহর্নিশ’ পত্রিকা। আজ জীবনানন্দ সভাঘরে, বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। থাকবেন প্রতুল মুখোপাধ্যায় ও কালীকৃষ্ণ গুহ। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের প্রাক-জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে থাকবে ‘পদাতিকের কবিতা’ শীর্ষকে একটি আলোচনা, বক্তা পীযূষ পোদ্দার। ছবি: অনিকেত গিরি

স্মারক বক্তৃতা

প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে সম্প্রতি অধ্যাপক সুশীলকুমার মুখোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা হল মহাবোধি সোসাইটি হলে। যে পর্ষদ বেসরকারি উদ্যোগে প্রতি বছর চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য বৃত্তিপরীক্ষা সংগঠিত করে, তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মৃত্তিকা রসায়নের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী সুশীলবাবু। স্মারক বক্তৃতা দিলেন বিজ্ঞানী সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ডিন সুমিত মুখোপাধ্যায়। সুশীলবাবু কলকাতা ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। বসু বিজ্ঞান মন্দিরের অধিকর্তা, এশিয়াটিক সোসাইটির সহ-সভাপতি প্রভৃতি প্রায় ৩০টি পদের দায়িত্বও বিভিন্ন সময় সামলেছেন তিনি।

ফিল্মোৎসব

শীতের প্রার্থনায় বসন্তের উত্তরের মতোই দেশ-দুনিয়ার সিনেমার উৎসব কলকাতার দরজায় কড়া নাড়ছে। সিনে সেন্ট্রালের তিন দশকের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ফিল্মোৎসব ফের নতুন সাজে— ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অব নিউ সিনেমা। বাছাই-করা আন্তর্জাতিক ছবির সমাহার। যেমন উদ্বোধনী ছবিটি: সুইডেনের ‘আ সিরিয়াস গেম’। উদ্বোধন করবেন অশোক মুখোপাধ্যায়, ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় বসুশ্রী সিনেমায়। ‘সত্যজিৎ রায় সম্মান’-এর জন্যে মনোনীত প্রয়াত সুপ্রিয়া দেবী, আর সিনেমাটোগ্রাফার শক্তি বন্দ্যোপাধ্যায় পাবেন ‘ইন্দিবর বসু সম্মান’। প্রতিদিন পাঁচটি করে ছবি বসুশ্রীতে, ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

ব্যতিক্রম

সত্তরের শেষ পর্ব থেকে আশির দশক... ব্রেখ্‌ট-এ মোহাবিষ্ট আমি তো বটেই, আমরা অনেকেই। আমরা-সহ তিনটে নাট্যগোষ্ঠী তাঁর ‘দ্য ককেশিয়ান চক সার্কল’ মঞ্চস্থ করল সে সময়... একটা প্রগতিবাদী আবহাওয়া নাট্যজগতে। তখনই জার্মানি গিয়েছি কয়েক বার, পূর্ব জার্মানি। আশির দশকেই ব্রেখ্‌ট-এর ‘দি এক্সেপশন অ্যান্ড দ্য রুল’-এর রূপান্তর ‘ব্যতিক্রম’ মঞ্চস্থ করেছি, প্রায় শ’খানেক শো হয়েছিল।’’ স্মৃতিতে ফিরছিলেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, নান্দীকার-এর কর্ণধার। ১৯২৯-৩০-এ লেখা নাটকটির মঞ্চায়নে এ মুহূর্তে আবার নান্দীকার। গতকাল প্রথম অভিনয়ের পর ‘ব্যতিক্রম’ ১৩ ফেব্রুয়ারি অ্যাকাডেমিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। অনেক দিন বাদে নির্দেশনায় ফিরলেন সদ্য চুরাশিতে পা-ফেলা রুদ্রপ্রসাদ, নিজেরই করা রূপান্তরে ভর করে। ‘এতে ইন্সপিরেশন-এর চেয়ে অনেক বেশি পার্টিসিপেশন। কমবয়সি সহকর্মীদের নিয়ে কাজ করতে অসম্ভব ভাল লাগে, আর পরিচালনার কাজে পুরোপুরি সংযুক্ত আমার মেয়ে— সোহিনী। অতএব বেশ আনন্দই পাচ্ছি পুরনো প্রযোজনায় ফিরে যেতে। এ-নাটকের শোষক-শোষিতের গল্প তো পুরনো হয়নি, বরং আরও বেশি রকম প্রাসঙ্গিক। এ যুগেও তো সম্পন্ন ও নিঃস্ব মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক ব্যবধান বেড়েই চলেছে। বেড়ে চলেছে দ্বন্দ্ব।’ জানালেন রুদ্রপ্রসাদ। ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা আয়োজিত ‘থিয়েটার অলিম্পিকস’-এর আমন্ত্রণে ভারতের অন্যতম নাট্যব্যক্তিত্ব হিসাবে সাড়া দিতেই তাঁর এই কাজ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement