খোলা দোকান-বাজার থেকেই সংক্রমণের বয় দানা বাঁধছে। ফাইল চিত্র।
লকডাউনের তৃতীয় দফায় শহরের বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু অফিস-দোকান খুলেছে। সেই সব জায়গায় সামাজিক দূরত্ব ঠিকমতো মানা হচ্ছে কি না, তার উপরে নজরদারি চালাতে শুরু করল কলকাতা পুলিশ। এমনকি বৈধ কারণ ছাড়া লোকজনকে ঘুরতে দেখলেও থানাগুলিকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। অন্য দিকে পুলিশকর্মীদেরও সতর্ক রাখতে প্রতিদিন থার্মাল গান দিয়ে তাঁদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
শহরে করোনায় আক্রান্তদের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এই অবস্থার মধ্যেই লোকজন অফিসের কাজে যোগ দিতে বেরোতে শুরু করেছেন। পুলিশকর্তারা জানান, কর্মস্থলে লোকজনের হাজিরা নির্ধারিত সংখ্যার বেশি হচ্ছে কি না, ওই সব জায়গায় সামাজিক দূরত্ব ঠিক ভাবে মানা হচ্ছে কি না, লোকজন সেখানে মাস্ক কিংবা গ্লাভস ব্যবহার করছেন কি না, এ সবের দিকে থানাগুলিকে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।
আগামী দিনে করোনার সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে ইতিমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন চিকিৎসকেরা। সে দিকে নজর রেখেছেন লালবাজারের কর্তারাও। তাঁরা জানান, দোকান-বাজার কিংবা অফিস খোলা থাকায় সব ক্ষেত্রে লোকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। তবুও প্রতিটি থানাই প্রতিদিন লকডাউন বিধি ভাঙার জন্য মামলা করছে। প্রচুর লোক গ্রেফতার হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: করোনা রোধেই সর্বাধিক গুরুত্ব প্রশাসকমণ্ডলীর
এক পুলিশকর্তা জানান, অকারণে রাস্তায় লোকজনকে ঘুরে বেড়াতে দেখলেও বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। লকডাউন উপেক্ষা করে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো, মাস্ক না পরা, থুতু ফেলা-সহ নানা অভিযোগে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ৭১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অতিমারির পরিস্থিতিতে প্রথম সারির যোদ্ধাদের মধ্যেই রয়েছেন পুলিশকর্মীরা। প্রতিদিনই তাঁদের সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে আসতে হচ্ছে। ফলে তাঁরাও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ইতিমধ্যেই ১৩ জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে লালবাজারেরও। শুক্রবারই বৌবাজার থানার এক পুলিশ অফিসার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে এ দিন বিকেলে ই এম বাইপাসে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কয়েক দিন আগেই ওই থানার এক আধিকারিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনিও ওই হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশ সূত্রের খবর, দ্বিতীয় পুলিশ অফিসার প্রথম জনের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
আরও পড়ুন: বার বার বেরোলে ধরা পড়ছে ক্যামেরায়
এ দিন পুলিশ কমিশনার প্রতিটি থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকর্মীদের দেহে করোনার উপসর্গ রয়েছে কি না, তার খোঁজ নিতে। মূলত লালবাজারের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক যাঁরা বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন তাঁদেরই ওই খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে থানার অফিসারদের করোনা মোকাবিলা নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করতেও বলা হয়েছে। পুলিশকর্মীদেরও নিজেদের শরীরের তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। পুলিশকর্মীদের মাস্ক এবং গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। থানার মেস এবং ব্যারাক জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)