বাসন্তী হাইওয়ে। ফাইল চিত্র।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কচুরিপানা ভর্তি পুকুরে নেমে এক দিকে কাত হয়ে গেল যাত্রী বোঝাই বাস। তাতে জখম হলেন বাসে থাকা মহিলা ও শিশু-সহ পাঁচ যাত্রী।
বেপরোয়া গতির বেসরকারি বাস একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে সোজা ধাক্কা মারল উল্টো দিক থেকে আসা একটি মোটরভ্যানকে। দু’টি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল ভ্যানের চালকের।
মুখোমুখি সংঘর্ষ কিংবা রাস্তার ধারের নয়ানজুলিতে বাস পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাগুলি ঘটেছে কলকাতা পুলিশের কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার অধীন বাসন্তী হাইওয়েতে। শুধু উপরের দু’টি ঘটনাই নয়, গত ১১ মাসে ওই রাস্তায় প্রায় ১৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তাতে মৃত্যু হয়েছে মোট ১০ জনের। জখম হয়েছেন সাত জন।
বাসন্তী হাইওয়েতে মাঝবরাবর নেই কোনও ডিভাইডার। রাস্তার দু’ধারে নেই গার্ড রেল বা ব্যারিয়ারও। নদিয়ার হাঁসখালিতে দুই গাড়ির সংঘর্ষে ১৭ জনের মৃত্যুর ঘটনার পরেই বাসন্তী হাইওয়ে নিয়ে
নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের কর্তারা।
লালবাজার সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাপ্রবণ ওই রাস্তায় মৃত্যুমিছিল ঠেকাতে রাস্তার দু’পাশে শক্তপোক্ত ক্র্যাশ ব্যারিয়ার লাগানোর জন্য কলকাতা পুলিশের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এখন সায়েন্স সিটি থেকে বানতলা পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে কিছু জায়গায় ক্র্যাশ ব্যারিয়ার থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। পুলিশ সূত্রের খবর, সায়েন্স সিটির কাছ থেকে ভোজেরহাট পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের অধীনে রয়েছে বাসন্তী হাইওয়ের ১৮ কিলোমিটার অংশ। ওই রাস্তা তৈরির পর থেকেই তা দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত। পুরো রাস্তার দু’পাশেই ওই ক্র্যাশ ব্যারিয়ার বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, বাসন্তী হাইওয়ের দু’পাশেই নয়ানজুলি বা খাল রয়েছে। সেখানে গাড়ি পড়ে যাওয়া ঠেকাতেই ওই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
অন্য দিকে বাসন্তী হাইওয়ের জলপথ থেকে খেয়াদা সোনারপুর, শিকারপুর রোডে হাতিশালা পর্যন্ত এবং ঢালিপাড়া রোডেও গাড়ির জলে পড়া ঠেকাতে রাস্তার দু’পাশে লোহার ব্যারিয়ার বসানোর জন্য বলা হয়েছে।
পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, কলকাতা পুলিশের অধীনে থাকা বাসন্তী হাইওয়ের পুরো অংশই দুর্ঘটনাপ্রবণ। বেশ কিছু জায়গায় বাতিস্তম্ভ বসানো হয়েছিল। বর্তমানে সেগুলির বেশির ভাগ খারাপ হয়ে গিয়েছে। সেখানে আলোর ব্যবস্থা করতে পুলিশ কমিশনারের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ এবং জেলাশাসককে। কিন্তু প্রশাসনের উপরমহল থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি বলে সূত্রের খবর।
পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, বাসন্তী হাইওয়ের প্রগতি ময়দান দমকল কেন্দ্র থেকে ভোজেরহাট পুরাতন বাজার পর্যন্ত নতুন আলো বসানো বা পুরনো আলোর মেরামতির জন্য খরচ ধরা হয়েছিল আনুমানিক দেড় কোটি টাকা। যা নির্ভয়া তহবিল থেকে দেওয়ার কথা। সেই বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় হাইওয়ের বেশির ভাগ অংশ সন্ধ্যার পরে অন্ধকারেই ডুবে থাকছে।
কিন্তু ওই রাস্তায় মুখোমুখি গাড়ির সংঘর্ষ ঠেকাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? লালবাজার জানিয়েছে, দুই লেনের ওই রাস্তার মাঝে ডিভাইডার করার জায়গা নেই। এর জন্য আগে রাস্তা চওড়া করা দরকার। সেই প্রস্তাবও শীর্ষ মহলে পাঠানো হয়েছে। বলে সূত্রের খবর।