— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অন্যান্য বার আলোচনার কেন্দ্রে থাকে, ভিড়ের নিরিখে কে কাকে টেক্কা দেবে, এস এন ব্যানার্জি রোড না কি স্ট্র্যান্ড রোড? এই দু’টি রাস্তার মধ্যে কার কোনটায় ডিউটি পড়ল, তা নিয়ে মশকরাও চলতে থাকে কলকাতা পুলিশের বাহিনীতে। কিন্তু আজ, রবিবারের ব্রিগেডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন’ সভার আগে আলোচনার কেন্দ্রে সভাস্থলের র্যাম্প। অভিনব কায়দায় বানানো সেই ৩৩০ ফুটের র্যাম্পের চার দিকে কোন কোন পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করলে নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে, তা নিয়ে চর্চায় ব্যস্ত লালবাজারের কর্তারাও। তাই শনিবার রাত পর্যন্তও ডিসি-র (সদর) দফতর থেকে জানানো হয়নি, মোট কত পুলিশ মোতায়েন থাকছে।
লালবাজারের একটি সূত্র যদিও জানাচ্ছে, ধর্মতলায় তৃণমূলের অন্য কর্মসূচিতে তিন হাজারের মতো পুলিশকর্মী মোতায়েন করে লালবাজার। সেখানে আজ ভোরেই শহরে নামছেন অন্তত পাঁচ হাজার পুলিশকর্মী। ব্রিগেড প্যারেড ময়দান ও আশপাশের এলাকা ১০টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ভাগের দায়িত্বে এক জন অতিরিক্ত নগরপাল বা এসি। ১০টি ভাগকে আবার ৭৪টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেই ভাগ সামলাবেন এক জন করে ইনস্পেক্টর। তাঁদের অধীনে থাকছে বাহিনী। ভোর ৪টে থেকেই পথে নামছেন তাঁরা। রবিবার ছুটির দিন হলেও যান নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আগাম নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে পুলিশ।
জানানো হয়েছে, শনিবার রাত তিনটে থেকে রবিবার রাত আটটা পর্যন্ত সব ধরনের মালবাহী গাড়ির শহরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। তবে ছাড় রয়েছে কেবল জরুরি পরিষেবায়। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, হেস্টিংস মোড় থেকে ক্যাথিড্রাল রোডের মধ্যবর্তী এ জে সি বসু রোডের অংশ, হসপিটাল রোড, কুইন্স ওয়ে, ক্যাসুরিনা অ্যাভিনিউ এবং লাভার্স লেনে গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধ। মিছিলের যাত্রাপথেও গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধ, এমনকি, ওই রাস্তায় ট্রাম চলাচলও বন্ধ থাকবে।
পুলিশ জানিয়েছে, আমহার্স্ট স্ট্রিট, ব্রেবোর্ন রোড দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী যান চলবে। কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট থেকে বিবেকানন্দ রোডের মধ্যবর্তী বিধান সরণি, কলেজ স্ট্রিট, স্ট্র্যান্ড রোডের কিছু অংশ, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট এবং বি কে পাল অ্যাভিনিউ থেকে লালবাজারের মধ্যে রবীন্দ্র সরণি দিয়ে উত্তরমুখী যান চলবে। বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট দিয়ে গাড়ি চলবে পূর্ব থেকে পশ্চিমমুখী এবং নিউ সিআইটি রোড দিয়ে গাড়ি যাবে পশ্চিম থেকে পূর্বমুখী হয়ে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, প্রয়োজনে অভিমুখ বদল হতে পারে।
সূত্রের খবর, জেলা থেকে আসা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ নেতাজি ইনডোর, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে উঠেছেন। বাকি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে হাওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে দু’টি বড় মিছিল ব্রিগেডে আসতে পারে। হাওড়ার মিছিল ব্রেবোর্ন রোড এবং স্ট্র্যান্ড রোড হয়ে আসার কথা। শিয়ালদহ থেকে আসা মিছিলের জেরে চাপ হতে পারে এসএন ব্যানার্জি রোড এবং মৌলালিতে। তাই ওই দুই রাস্তায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন রাখা হচ্ছে। তবে এ-ই প্রথম, আগের রাত থেকেই পার্কিং নিয়ে তৎপর কলকাতা পুলিশ। নির্দিষ্ট করা ১৫টি জায়গা ছাড়া কোথাও যাতে পার্কিং না হয়, তা দেখতে বাহিনী মোতায়েন হয়েছে।
ধর্মতলা মোড়ে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘র্যাম্পের ডিউটি দেওয়া হয়েছে লালবাজারের বিশেষ বাহিনীর উপরে। ড্রোনে নজরদারি চলবে।’’
গাড়ি কোন পথে
উত্তর থেকে দক্ষিণ: আমহার্স্ট স্ট্রিট এবং ব্রেবোর্ন রোড ধরে
দক্ষিণ থেকে উত্তর: বিধান সরণি (কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট থেকে বিবেকানন্দ রোড), কলেজ স্ট্রিট, স্ট্র্যান্ড রোড, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট এবং রবীন্দ্র সরণি (বি কে পাল অ্যাভিনিউ থেকে লালবাজার) ধরে
পূর্ব থেকে পশ্চিম: বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট দিয়ে
পশ্চিম থেকে পূর্ব: নিউ সিআইটি রোড ধরে
চাপ হতে পারে: এস এন ব্যানার্জি রোড, মৌলালি, স্ট্র্যান্ড রোড, ব্রেবোর্ন রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, জওহরলাল নেহরু রোডে
বিশেষ ব্যবস্থা: শনিবার রাত ৩টে থেকে রবিবার রাত আটটা পর্যন্ত শহরে ঢুকবে না মালবাহী গাড়ি। তবে ছাড় রয়েছে আনাজ, দুধ, ফল ও এলপিজি গ্যাসের গাড়িতে