শহরের বাজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করল লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
শহরের বাজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন কলকাতা পুলিশের কর্তারা। বুধবার লালবাজারে কলকাতা পুলিশের দফতরে শহরের বাজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয় পুলিশের। শহরের বাজি বাজারের উদ্যোক্তারাও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এই বৈঠকে মজুত বাজির পরিমাণ কত, তা বাজি ব্যবসায়ীদের কাছে জানতে চান পুলিশকর্তারা। কোনও অবৈধ বা নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি করা হচ্ছে কি না, তা-ও জিজ্ঞাসা করা হয় পুলিশের তরফে। পরিবেশবান্ধব বাজি (গ্রিন ক্র্যাকার) বিক্রির উপরে ব্যবসায়ীদের আরও জোর দিতে বলা হয়।
গত কয়েক দিনে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ, মালদহের ইংরেজবাজারে বাজি তৈরি করতে গিয়ে বা মজুত বাজি থেকে বিস্ফোরণ ও তাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের নাকের ডগায় অবৈধ বাজির কারবার চললেও কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ করা হয়নি বলে রাজ্যের বিরোধী দলগুলির অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারাও বিস্ফোরণকাণ্ডের নেপথ্যে নিয়মিত পুলিশি নজরদারির অভাবের কথা তুলে ধরেন। তারপরই এই বিষয়ে সতর্ক হতে দেখা যায় পুলিশ-প্রশাসনকে। মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটিতে বাজি তৈরি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় পুলিশ। বারুইপুর পুলিশ জেলা সূত্রের খবর, আপাতত চম্পাহাটিতে বাজি তৈরি ও বিক্রি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শব্দবাজি রুখতে পুলিশের তরফে দফায় দফায় অভিযানও চালানো হচ্ছে ওই এলাকায়।
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে গত ১৬ মে। মৃত্যু হয় অন্তত ৯ জনের। তার ৫ দিনের মাথায়, গত ২১ মে বজবজে বিস্ফোরণে প্রাণ হারান তিন জন। এর পর সোমবারই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে আতশবাজি নিয়ে ক্লাস্টার গড়তে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে এই কমিটিতে রয়েছেন অর্থ, দমকল, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, পরিবেশ ও পুর নগরোন্নয়ন সচিব। ওই কমিটি আগামী ২ মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে একটি রিপোর্ট দেবে। তার ভিত্তিতে ক্লাস্টার গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ করতেই এই উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।
এর মধ্যে মঙ্গলবার মালদহের ইংরেজবাজারে একটি বাজির গুদামে আগুন লাগে। মৃত্যু হয় ২ জনের। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে অবৈধ ভাবে মজুত রাখা বাজি উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। মঙ্গলবারই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে ৫ হাজার কেজি বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। হাওড়ার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে ৮০০ কেজি বাজি উদ্ধারের খবর পাওয়া গিয়েছে। ৩ জন গ্রেফতারও হয়েছেন। এই আবহে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে এ বার শহরের বাজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন পুলিশকর্তারা।