— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সিসি ক্যামেরার সংখ্যার দিক থেকে দিল্লিকে ছুঁতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। এলাকাভিত্তিক সিসি ক্যামেরার সংখ্যায় দেশের অন্য শহরগুলির তুলনায় দিল্লি অনেকটাই এগিয়ে। কলকাতা পুলিশও সেই সংখ্যার কাছাকাছি যেতে চাইছে।
কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, যত বেশি সম্ভব এলাকাকে সিসি ক্যামেরার অধীনে আনা। এ ক্ষেত্রে দিল্লি এগিয়ে আছে। আমরাও সে রকমই করতে চাইছি।’’
তবে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, আর জি কর-কাণ্ডের জেরে উদ্ভূত ‘জনরোষ’ সামলাতেই কি পুলিশের এই পদক্ষেপ? কারণ, এই ঘটনায় বার বার হাসপাতালে সিসি ক্যামেরার অপ্রতুলতা, বিশেষত ঘটনাস্থলে কেন সিসি ক্যামেরা ছিল না, সেই প্রশ্ন সামনে আসছে। যদিও কলকাতা পুলিশের এই শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, এটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। যেমন, শহরের বিভিন্ন হোমে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা রয়েছে কিনা, এই মুহূর্তে সেই অডিট চলছে। যেখানে-যেখানে নেই, সেখানে যাতে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট হোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলা হচ্ছে। ওই কর্তার কথায়, ‘‘সোনার দোকানে যখন ডাকাতি হচ্ছিল, তখন স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বলা হয়েছিল সিসি ক্যামেরা বসাতে। ফলে, এটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। তা ছাড়া, সরকারি অনেক প্রকল্প আছে। সেগুলি থেকে টাকা যাতে পাওয়া যায়, আমরা সব সময়েই সেই চেষ্টা করি। বরাদ্দকৃত অর্থ সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য খরচ করা হয়।’’
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, শহরে এই মুহূর্তে প্রায় ১০ হাজার সিসি ক্যামেরা রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ছ’হাজার ক্যামেরা ‘নির্ভয়া’ প্রকল্পে বসানো হয়েছে। বাকি সাড়ে তিন হাজার ক্যামেরা আগে থেকে ছিল। সেই সংখ্যাই বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, বহুজাতিক একটি সংস্থার করা সমীক্ষা অনুযায়ী, দিল্লিতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে সিসি ক্যামেরার সংখ্যা প্রায় ৫৭৫। সেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে চেন্নাইয়ে ওই সংখ্যা প্রায় ৭৯, হায়দরাবাদে ১২৮, মুম্বইয়ে ৭১, ইন্দোরে ৫৩। কলকাতায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে সেই সংখ্যা হল ৩৩ (কলকাতা পুলিশ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী তাদের আওতাধীন এলাকার আয়তন প্রায় ৩০৭ কিলোমিটার)। ফলে সংখ্যাতেই স্পষ্ট যে, কলকাতা অনেকটাই পিছিয়ে।
তবে পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, যদি সাধারণ মানুষের বাড়ি, দোকানে বসানো সিসি ক্যামেরা ধরা হয়, তা হলে শহরে মোট ক্যামেরার সংখ্যা দ্বিগুণ, এমনকি তিন গুণও হতে পারে। ওই কর্তার কথায়, ‘‘আমরা সব সময়েই বাড়িতে, দোকানে সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য আবেদন করি। তাতে সাড়া দিয়ে অনেকে বসাচ্ছেনও।’’
কিন্তু তার পরেও সে সংখ্যা পর্যাপ্ত কিনা, আর জি কর-কাণ্ড সেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে শহরকে!