অভিষেক ও রোশনি।—নিজস্ব চিত্র।
জালে ‘বান্টি-বাবলি’। উৎসবের ভিড়ে দর্শক হয়ে মিশে যেতেন এই জুড়ি। তার পরে সুযোগ বুঝে পকেট-কাটা। দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘ্নে পকেট কাটার কাজ করে এলেও, সোমবার শেষ রক্ষা হল না। আলিপুর চিড়িয়াখানায় বমাল ধরা পড়লেন যাদবপুরের এই ‘বান্টি-বাবলি’অভিষেক-রোশনি।
কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের ওয়াচ শাখার দাবি, কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে, বাজার-শপিং মল বা মেলার মাঠে এঁরা তক্কে তক্কে থাকতেন। বছর কুড়ির অভিষেক দত্ত এবং রোশনি পান্ডে— লোকের পকেট কাটাই পেশা। এক গোয়েন্দা আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই দম্পতিকে দেখলে পকেটমার মনে হবে না। ভাল পোশাক। সুন্দরআদব কায়দা। কিন্তু, কখন যে আপনার গায়ের কাছে এসে ভিড়ের সুযোগে টাকার ব্যাগ বা মোবাইল নিয়ে চম্পট দেবে তা টেরও পাবেন না।” এক তদন্তকারীর ইঙ্গিত, মূল অপারেশন চালাতেন ওই তরুণী। রীতিমতো আকর্ষনীয় ওই তরুণী ভিড়ের মধ্যে কারও গায়ের কাছে দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ সন্দেহ করত না। সেই সুযোগেই হাত সাফাই করে অভিষেকের হাতে চোরাই মাল পাচার করে দিতেন রোশনি।
গোয়েন্দাদের দাবি, এর আগে কখনও এই দম্পতি ধরা পড়েননি। কলকাতা শহরের বাকি বিভিন্ন পকেটমার গ্যাংয়ের সঙ্গেও যোগ নেই। তাই এঁদের সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না গোয়েন্দাদের। সোমবার আলিপুর চিডি়য়াখানায় ওয়াচ বিভাগের গোয়েন্দারা যখন সাদা পোশাকে নজরদারি করছিলেন, তখনই তাঁদের চোখে পড়ে এক মহিলার টাকার ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিচ্ছে রোশনি। গোয়েন্দারা রোশনিকে অনুসরণ করে হদিশ পায় অভিষেকের। দু’জনকে পাকড়াও করতেই মহিলাদের ৬টি টাকার ব্যাগ এবং একটি মোবাইল পাওয়া যায়।
এক তদন্তকারী জানান, জেরায় ওই দম্পতি গোয়েন্দাদের বলেছেন, এর আগেও কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা ওই ভাবে হাত সাফাই করেছেন। নিউ মার্কেট চত্বরে একাধিক হাত সাফাইয়ের ঘটনায় এই দম্পতির যোগ আছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।