শোভন চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পুর অধিবেশনে বিশেষ একটি প্রস্তাব কেন তোলা হয়েছে তা নিয়ে ‘কথা শুনতে’ হল চেয়ারপার্সন মালা রায়কে। অভিযোগ, তা শুনিয়েছেন খোদ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার পুর অধিবেশনের শেষ পর্বে বাম কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের তোলা একটি প্রস্তাবকে ঘিরে বিতর্ক বাধে। তাতে বলা হয়েছিল, অধিবেশনে কতগুলো প্রশ্ন বা প্রস্তাব তোলা যায় তা নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলা নেই। রাজ্য সরকারের কাছে সেই নিয়মের সংশোধনের আবেদন জানানোর প্রস্তাব রাখা হোক। মালা রায় ওই প্রস্তাব গ্রহণ করায় অধিবেশনে তা রাখাও হয়। কিন্তু ওই প্রস্তাব উঠতেই উত্থাপকের আগেই শোভনবাবু চেয়ারপার্সনের উদ্দেশে বলেন, এই প্রস্তাব অধিবেশনে নেওয়া ঠিক হয়নি। যা শুনে ‘হতবাক’ শাসক এবং বিরোধী দলের বহু কাউন্সিলরই। চুপ করে থাকেন স্বয়ং চেয়ারপার্সনও। কাউন্সিলরদের গুঞ্জন ওঠে, দলের চেয়ারপার্সনকে এ ভাবে সরাসরি না বললেও পারতেন মেয়র।
মেয়র আরও বলেন, ‘‘এই বিষয়টি আপনার ঘরেই বিরোধী কাউন্সিলরদের সঙ্গে মিটিয়ে নিতে পারতেন।’’ পরে মেয়রের বক্তব্য মেনে সবর্দলীয় বৈঠকের কথা জানান চেয়ারপার্সনও। তবে তা মনঃপূত হয়নি বাম কাউন্সিলরদের। কেন প্রস্তাব গৃহিত হয়েও আলোচনা হবে না তা নিয়ে হইচই শুরু হয়। পরে অধিবেশন কক্ষ বয়কট করেন তাঁরা।
পরে দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘সমস্ত রীতি মেনেই চেয়ারপার্সনের কাছে প্রস্তাবটি জমা দিয়েছিলাম। উনি তা অধিবেশনে তালিকাভুক্তও করেছিলেন। কিন্তু আলোচনার সুযোগ দেওয়া হল না।’’ প্রতিবাদ জানাতেই তাঁরা বয়কট করেছেন বলে জানান বাম কাউন্সিলরেরা।
প্রস্তাবটি কেন আলোচনা হল না, তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি মালাদেবী। কেবল বলেছেন, ‘‘অধিবেশন সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন বা প্রস্তাব পুর আইন মেনেই গ্রহণ করা হয়ে থাকে। সেটাই করি। তবে পুরসভার বিষয় নয় এমন কোনও প্রশ্ন বা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় না।’’ তবে শাসক দলের একাধিক কাউন্সিলর মনে করছেন চেয়ারপার্সন নিয়ম মেনেই প্রস্তাবটি তালিকাভুক্ত করেছেন। তবে আলোচনা হল না কেন? অনেক মেয়র পারিষদ বলেন, দলের ‘মতানৈক্য’ প্রকাশ্যে আনতে চাননি বলেই চুপ থেকেছেন মালাদেবী।
এ দিন বিধান শিশু উদ্যান ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ভাড়া দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়ের তোলা প্রস্তাবের জবাবে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, ওই উদ্যান পুরসভার নয়। তাই পুর অধিবেশনে এ প্রস্তাব তোলা ঠিক নয়।