নিউটাউনের পর এ বার লেকটাউন। আরও একটি মরা মুরগির মাংস বিক্রির দোকানের সন্ধান পেল পুলিশ।
শনিবার সকালে সেখানে হানা দিয়ে তা সিল করে দেওয়া হয়েছে। তবে দোকান থেকে কোনও মাংস উদ্ধার হয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, এই দোকানটির মালিকও কওসর আলি ঢালির। শুক্রবার নিউটাউনে যে মরা মুরগির খামারের সন্ধান মিলেছিল সেটিরও মালিক এই কওসর।
পুলিশ জানিয়েছে, লেকটাউনের দক্ষিণদাড়িতেও একটি ভাড়া বাড়ি রয়েছে কওসরের। সেই বাড়ির পাশেই দোকানটি। নিউটাউনে মরা মুরগির খামারের সন্ধান পাওয়ার পর কওসর-সহ তাঁর ১০ কর্মচারীকে পুলিশ আটক করে। তাদের ডিজ্ঞাসাবাদ করেই লেকটাউনে এই দোকানটিরও খোঁজ পায় পুলিশ। লেকটাউনের দোকানেও যে পুলিশ পৌঁছে যাবে তা আঁচ করেই সম্ভবত আগে থেকে তা খালি করে দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, দোকানের মধ্যে রাখা ছিল ৯টি বড় বড় ফ্রিজার। আর দোকানের ভিতরে এবং বাইরে চার দিকেই রয়েছে অনেকগুলো সিসিটিভি। কর্মচারী ছাড়া বাইরের কোনও ব্যক্তি দোকানে আসছে-যাচ্ছে কি না বা দোকানের উপরে কেউ সন্দেহের নজর রাখছে কি না তা জানার জন্যই এই ব্যবস্থা বলে মনে করছে পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশ এ-ও জানতে পেরেছে, গোপনতা বজায় রাখতে দোকানের কর্মচারী হিসাবে স্থানীয় কাউকেই নিয়োগ করা হত না।
কওসর আলি ঢালির সিল হয়ে যাওয়া নিউটাউনের দোকানে এই ব্যানারই লাগানো ছিল।
ওই দোকান থেকে শহরের অনেকগুলো রেস্তরাঁর তালিকা পুলিশ উদ্ধার করেছে। যেখানে ফ্রিজারে সংরক্ষণ করে রাখা মরা মুরগির মাংস সরবরাহ করা হত। এর মধ্যে বেশ কিছু নামী রেস্তরাঁর নামও রয়েছে। ওই সমস্ত রেস্তরাঁর মালিক জেনে বুঝেই কওসরের থেকে মাংস কিনতেন, না কি কওসর ভুল বুঝিয়ে তা বিক্রি করত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
বজবজের ভাগাড় থেকে মরা পশুর মাংস পাচারের ঘটনা হাতেনাতে ধরা পড়ে গত সপ্তাহেই। তার পর ক্রমশ সেই ছড়ানো জালের হদিশ পেতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। রাজারহাট, নিউটাউন, লেকটাউন এমনকী হুগলির ভদ্রেশ্বরে ভাগাড়ের ভিতরেও এমনই এক কসাইখানার খোঁজ মিলেছে। ভাগাড়ের মরা মাংস পাচার কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন সিপিএমের এক প্রাক্তন কাউন্সিলরও। এই মাংস-চক্রের জাল যে আরও কতটা দূর ছড়ানো, সেটাই এখন ভাবাচ্ছে পুলিশকে।