প্রতীকী ছবি।
রোজ ভোরে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছিল একটি মোটরবাইককে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সেটির নম্বর বোঝা না গেলেও এটুকু বোঝা গিয়েছিল, বাইকটির রং লাল।
আর সেই রঙের সূত্র ধরেই বন্দর এলাকায় একটি ব্যাটারি চুরি-চক্রের হদিস পেল পুলিশ। চক্রের সদস্যেরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেলার বা ট্রাকের ব্যাটারি চুরি করে সেগুলি বিক্রি করত।
তদন্তকারীরা জানান, সোমবার রাতে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে দু’টি গাড়ির ব্যাটারি উদ্ধার করেছে দক্ষিণ বন্দর থানা। ধৃতদের নাম গুড্ডু এবং রাজবংশী। গুড্ডু একবালপুরের বাসিন্দা। রাজবংশী থাকে দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকাতেই। ধৃতদের মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। জানা গিয়েছে, মূলত দূরে মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে রাতের অন্ধকারে ট্রেলার বা লরির নীচে ঢুকে ব্যাটারি চুরি করত অভিযুক্তেরা।
কী ভাবে খোঁজ মিলল এই চক্রের?
তদন্তকারীরা জানান, বন্দর এলাকার কোল বার্থ রোডের দু’পাশে সার দিয়ে দাঁড় করানো থাকে লরি ও ট্রেলার। গত কয়েক মাস ধরে ওই গাড়িগুলি থেকে একের পর এক ব্যাটারি চুরি যাচ্ছে বলে দক্ষিণ বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, এলাকায় কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। ফলে রাতে একের পর এক গাড়ির ব্যাটারি কী ভাবে চুরি যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রাথমিক ভাবে দিশা খুঁজে পায়নি তারা। পুলিশের দাবি, এর পরেই কোল বার্থ রোডের আশপাশের ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু হয়।
তদন্তকারী এক অফিসার জানান, প্রায় চারটি রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চোখে পড়ে, ঘটনার দিনগুলিতে ভোরে একটি বাইকে হেলমেট না পরে সন্দেহজনক ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে দুই আরোহী। কিন্তু বাইকটির নম্বর ফুটেজ থেকে উদ্ধার করা যায়নি। শুধু দেখা গিয়েছিল, বাইকটির রং লাল।
পুলিশ জানাচ্ছে, এর পরেই স্থানীয় দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে খোঁজ শুরু করেন তদন্তকারীরা। এক ‘সোর্স’ মারফত জানা যায়, গুড্ডু লাল রঙের একটি বাইকে চেপে রাতে বিভিন্ন এলাকায় যায়। এর পরেই সোমবার একবালপুরের বাড়িতে হানা দিয়ে গুড্ডুকে ধরে পুলিশ। তাকে জেরা করে খোঁজ মেলে রাজবংশীর। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা দু’টি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এই চক্রটি প্রায় পাঁচটি ব্যাটারি চুরি করেছে বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। চক্রের বাকি সদস্যদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।