দরজা খুলতেই ঝাঁপিয়ে ‘পিৎজা বয়’-এর মাংস খুবলে নিল দু’টি কুকুর

তিনি কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালালেও তাঁর ডান হাতের মাংস খুবলে নেয় দু’টি কুকুর। বুধবার দুপুরে যাদবপুরের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৯
Share:

এ ভাবেই ক্ষতবিক্ষত হয়েছে অমিতের হাত। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির দরজায় লেখা, ‘কুকুর হইতে সাবধান’। বেল বাজাতেই কুকুরের চিৎকারে বছর আঠাশের ডেলিভারি বয় অমিতের বুক কেঁপে উঠেছিল। নীচে নেমে খাবার নিয়ে যেতে বাড়ির বাসিন্দাদের ফোনে অনুরোধ জানান তিনি। ফোনেই আশ্বাস আসে, কুকুর বাঁধা আছে। কিন্তু ওই যুবক তিনতলায় উঠতেই ঘটল অঘটন। অভিযোগ, দু’টি কুকুর ঝাঁপিয়ে পড়ে অমিতের উপরে। তিনি কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালালেও তাঁর ডান হাতের মাংস খুবলে নেয় দু’টি কুকুর। বুধবার দুপুরে যাদবপুরের ঘটনা।

Advertisement

এমন বিপত্তি এ শহরে প্রথম নয়। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে ঠাকুরপুকুরে একটি বাড়ির এসি সারাতে গিয়ে দু’টি পোষা কুকুরের আক্রমণের মুখে পড়েন গৌরব পুরকাইত নামে এক তরুণ। টাল সামলাতে না পেরে ছাদ থেকে পড়েমৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু ওই ঘটনার পরেও কুকুরের মালিকেরা পোষ্য সামলাতে যে সচেতন হননি, বুধবারের ঘটনা তারই প্রমাণ। এই ঘটনায় যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন অমিত দাস নামে ওই যুবক।

পুলিশ জানায়, ওই দিন যাদবপুরে বৈশাখী পাইনের বাড়িতে পিৎজা দিতে যান অমিত। তখনই কুকুরের হামলার মুখে পড়েন তিনি। অমিতের অভিযোগ, ‘‘কাতরাতে কাতরাতে কোনও রকমে নীচে নামি। ফুটপাতে বসে পড়ি। আশপাশের অনেকে ছুটে এলেও ওই বাড়ির কেউ আসেননি।’’ পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আতঙ্কিত অমিত বলেন, ‘‘ওরা যখন আমার হাত খুবলে নিচ্ছে, আঁচড়াচ্ছে, তখন আমি ‘বাঁচান বাঁচান’ বলে চিৎকার করতে থাকি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘কুকুর পুষুন নিজের দায়িত্বে’

স্থানীয়েরা জানান, ওই বাড়ির কুকুর দু’টির একটি জার্মান শেফার্ড। অন্যটি রটওয়েলার। দু’টি কুকুরকেই ভয় পান স্থানীয়েরা। ওই বাড়ির দোতলায় একটি বিউটি পার্লার আছে। সেখানকার কর্মীরা জানান, কেউ বেল বাজালেই যে ভাবে ডেকে ওঠে কুকুর দু’টি, তাতে ভয়ে বুক কাঁপে তাঁদেরও।

পেশায় চিকিৎসক বৈশাখী পাইনের বাড়িতে এ দিন গিয়ে দেখা যায় গেটে তালা। বৈশাখীদেবীর স্বামী রাজীব পাইন পরে ফোনে বলেন, ‘‘আমার মেয়ে স্নেহা ওই ছেলেটিকে একতলাতেই দাঁড়াতে বলেছিল। ও-ই যুবক উপরে উঠে আসেন। কুকুর দু’টি খোলা থাকায় দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। ঘটনার পরে ওই যুবকের পরিচিতেরা আমার বাড়িতে চড়াও হন।’’

এখন কিছুটা সুস্থ অমিত। তাঁর এক আত্মীয় রণজয় হালদার বলেন, ‘‘ওঁরা চিকিৎসার সব খরচ দিতে রাজি হয়েছেন। তবে আতঙ্ক কাটছে না অমিতের।’’ অমিতের স্ত্রী সুবর্ণা দাস বলেন, ‘‘আতঙ্ক কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ফের কবে যে ও কাজে যেতে পারবে, সেটাই এখন চিন্তা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement