নিপা-আতঙ্কে ফল নিয়ে নোটিস চিড়িয়াখানায়

যদিও আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্তের দাবি, ‘‘নিপার আতঙ্কে নয়, আগাম সতর্ক হতেই এই নোটিস জারি করেছি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৮ ০২:৩৮
Share:

চিড়িয়াখানার গাছে বাদুড়। (ইনসেটে) কর্তৃপক্ষের দেওয়া সেই নোটিস। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

বাগানে ঝরে পড়া অথবা গাছে ধরে থাকা, কোনও রকম ফলই খাবেন না। এমনকি, কোনও পশু-পাখিকেও সেই ফল খেতে দেবেন না। নিপা ভাইরাসের আতঙ্কে চিড়িয়াখানার ভিতরে এমনই নোটিস জারি করলেন সেখানকার কর্তারা।

Advertisement

যদিও আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্তের দাবি, ‘‘নিপার আতঙ্কে নয়, আগাম সতর্ক হতেই এই নোটিস জারি করেছি। চিড়িয়াখানায় রয়েছে কয়েক হাজার বাদুড়। তারা বেশির ভাগই ফলাহারি। আপাতত দু’টি জায়গায় নোটিস লাগানো হয়েছে। সবার যাতে নজরে পড়ে, তার জন্য আরও কয়েকটি জায়গায় ফ্লেক্স ঝোলানো হবে।’’

ওই নোটিসে চিড়িয়াখানায় পড়ে থাকা ফল খেতে বারণ করার পাশাপাশিই লেখা আছে, ‘ভারতের কোনও কোনও রাজ্যে ভয়ঙ্কর এই প্রাণীবাহিত অসুখ ‘নিপা’ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় এই সতর্কতা। ফলাহারি বাদুড় এই অসুখের জন্য দায়ী এবং এই অসুখে মানুষের
মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি।’’

Advertisement

চিড়িয়াখানায় রয়েছে নানা ধরনের অজস্র গাছ। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঝোপঝাড় বা উঁচু যে সব গাছে পাতা বেশি, সেখানেই বাদুড় বেশি করে পাওয়া যায়। চিড়িয়াখানার আম, জাম, লিচু গাছে বাদুড় আছে সব চেয়ে বেশি। আশিসবাবু বলেন, ‘‘চিড়িয়াখানায় রয়েছে কয়েক হাজার বাদুড়। তাদের প্রিয় খাদ্য এই সমস্ত ফল। গাছগুলির নীচে হামেশাই আধখাওয়া ফল পড়ে থাকতে দেখা যায়। কখনও দেখা যায়, ফলের গায়ে আঁচড়ানোর দাগ।’’

আশিসবাবু জানান, বাগানে পড়ে থাকা ওই সমস্ত ফলের বেশ কিছু বাদুড়ের খাওয়া বা নখ দিয়ে আঁচড়ানো। এমনকি, গাছে থাকা ফলও অনেক সময়ে বাদুড় অর্ধেকটা খেয়ে বা আঁচড়ে চলে যায়। তাই গাছের নীচে পড়ে থাকা বা গাছে ঝুলে থাকা সব ধরনের ফলই খেতে বারণ করছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

এ দিন চিড়িয়াখানার বাগান ঘুরে অবশ্য রাস্তার উপরে বা গাছের তলায় আধখাওয়া ফল সে ভাবে চোখে পড়েনি। কোথাও পড়ে থাকলেও তা সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, পশু-পাখিদেরও যাতে দর্শকেরা এই ফল ছুড়ে না দেন, সে ব্যাপারে সতর্ক তাঁরা। এ ব্যাপারে নিরাপত্তারক্ষীদেরও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা কড়া নজর রাখেন। এমনকি, গাছের ফল চিড়িয়াখানার পশুদের খাঁচার মধ্যে খসে পড়লে তা-ও তৎক্ষণাৎ সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। আশিসবাবু জানান, পশু-পাখিদেরও নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এমন বাড়তি সর্তকতা নেওয়া হয়েছে।

দিন দুই আগে চিড়িয়াখানার বাগানে দু’টি বাদুড়কে মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে বেশ কিছু আধখাওয়া ফলও গাছের নীচে পাওয়া যায়। এই নিয়ে দর্শনার্থীদের মধ্যে একটা আতঙ্কও তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বাদুড়ের খাওয়া ফল ঠিকমতো পরিষ্কার করছেন না। যদিও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে যে ঝড় হয়েছিল, তাতে প্রচুর আম, জাম ঝরে পড়েছিল। কিছু বাদুড়ও সেই ঝড়ে মারা গিয়েছিল। তাই অযথা আতঙ্কিত হওয়ারও কিছু নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement