আর অনুরোধ-উপরোধে কাজ হবে না। কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট বক্তব্য, কোনও ভাবেই অন্য পুর এলাকার মৃত পশুর দায়িত্ব নেওয়া হবে না!
ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে ধাপায় মৃত পশুর দেহ ফেলার ক্ষেত্রে এ ভাবেই কড়াকড়ি করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। এত দিন কলকাতার পার্শ্ববর্তী অন্য পুর এলাকার মৃত পশুর দেহ ফেলার ক্ষেত্রে অনুরোধ সাপেক্ষে বিশেষ অনুমোদন দেওয়া হত। কিন্তু ভাগাড়-কাণ্ডের পরে সেই দায়িত্ব আর নিতে রাজি নন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। তাই অন্য পুর এলাকার মৃত পশুর দেহ ধাপায় ফেলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন তাঁরা।
পুর কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই অনুরোধ সাপেক্ষে কলকাতার পার্শ্ববর্তী পুর এলাকার মৃত পশুর দেহ ধাপায় ফেলার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর জন্য বিশেষ অনুমতি নিতে হয় পুরসভার থেকে। কিন্তু গত সপ্তাহে একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে নড়ে বসেছেন পুরকর্তারা। উত্তর শহরতলির এক পুরসভার তরফে সংশ্লিষ্ট এলাকার মৃত পশুর দেহ ধাপায় ফেলার জন্য গত সপ্তাহে কলকাতা পুরসভার কাছে অনুরোধ এসেছিল। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই তা খারিজ করে দেন পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁদের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, অন্য পুর এলাকার মৃত পশুর দেহ কোনও ভাবেই ধাপায় ফেলা যাবে না।
পুর প্রশাসনের পদস্থ এক কর্তার কথায়, ‘‘পুরসভার পরিকাঠামো শুধু কলকাতার জন্য। শহরের যে কোনও জায়গা থেকে মৃত পশুর দেহ সংগ্রহ করে ধাপায় রোজই ফেলা হচ্ছে। কিন্তু, কলকাতার বাইরে অন্য পুর এলাকার দায়িত্ব তো আমরা নিতে পারি না। তাই ধাপায় অন্য পুর এলাকার মৃত পশুর দেহ ফেলা যাবে না।’’
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এমনিতে শহরের নানা এলাকা থেকে সংগৃহীত মৃত পশুর দেহ ধাপায় ফেলার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। মৃত পশুর দেহ সংগ্রহের জন্য পুরসভার যে নির্দিষ্ট গাড়িগুলি রয়েছে, সেগুলির নম্বর ধাপার কম্পিউটারে নথিভুক্ত করা রয়েছে। একমাত্র সেই গাড়িগুলিই পশুদেহ ফেলার জন্য ধাপায় যে আলাদা জায়গা চিহ্নিত করা, সেখানে প্রবেশ করতে পারে। জঞ্জাল সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট লরিও পশুদেহ ফেলার জায়গায় প্রবেশ করতে পারে না।
পুরসভা সূত্রের খবর, ধাপায় নজরদারির জন্য উচ্চপদস্থ কর্তা থেকে অস্থায়ী কর্মী মিলিয়ে ৪০জন রয়েছেন। সঙ্গে রয়েছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। জঞ্জাল নিয়ে কোন লরি ঢুকছে-বেরোচ্ছে, কারা সেখানে আসছেন বা যাচ্ছেন, তা সব সময়েই ক্যামেরার নজরবন্দি। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনও বহিরাগত যাতে ঢুকতে না পারে, তাও নজরে রাখছে পুরসভা।
জঞ্জাল সাফাই দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘ধাপায় গাড়ি তো বটেই, সাধারণ মানুষ ঢোকার ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। অন্য পুরসভা ইচ্ছে করলেই ধাপায় তাদের এলাকার মৃত পশুর দেহ ফেলে যেতে পারবে না।’’