ঝড়ের পরে: ভেঙে গিয়েছে গাছ। তার মধ্যেই চলছে চুল কাটা। বুধবার, সল্টলেকে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
রাত দেড়টা। মেয়র ও আধিকারিকেরা তখন বি জি ব্লকের রাস্তায় পরিদর্শনে। দেখা গেল একটি গাড়ির উপরে বিশাল গাছ পড়ে রয়েছে। গাছটি সরাতেই আচমকা পিছনে একটি গাড়ির আলো জ্বলে উঠল। আরও একটি গাড়ি যে গাছের তলায় চাপা পড়েছিল তা টের পাননি কেউ। গাছ সরাতেই গাড়িটি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে চম্পট দেন চালক। মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘অত ক্ষণ আটকে থাকার পরে মৃত্যুভয় থেকে মুক্তি পেয়েই বোধহয় চালক আর দাঁড়াননি।’’
গোটা সল্টলেককে কিছু সময়ের মধ্যেই তছনছ করে দিয়েছে মঙ্গলবারের ঝড়। প্রায় প্রতিটি ব্লকেই রাস্তায়, বিভিন্ন বাড়ির উপরে বড় বড় গাছ পড়েছে, ভেঙে গিয়েছে বাতিস্তম্ভ। বুধবার রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে সল্টলেক থেকে নিউ টাউন পর্যন্ত বেশ কিছু দুর্ঘটনায় এক মহিলা-সহ মোট ১৩ জন আহত হন।
ই ই ব্লকে একটি বাসের উপরে গাছ পড়ে ৩ জন আহত হন, ৩ নম্বর সেক্টরে ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টারের পিছনে গাড়িতে গাছ পড়ে আহত হন ৪ জন। ১ নম্বর সেক্টরে রিকশার উপরে গাছ পড়ে চালক এবং এক মহিলা যাত্রী গুরুতর ভাবে আহত হন। নিউ টাউনে এক মোটরবাইক চালক আহত হন। এ ছাড়াও মঙ্গলবার রাতে বিধাননগর হাসপাতালে ঝড়ে আহত ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঝড়ের জেরে বিধাননগর হাসপাতালে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বিকল্প জরুরি পরিষেবা চালু থাকায় চিকিৎসা বিঘ্নিত হয়নি।
মঙ্গলবারের দুর্যোগের পরে রাতভর পুরসভায় কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়। সেখানে ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মেয়র জানান, ভবিষ্যতে এ ভাবে গাছ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমাতে জমির প্রকৃতি অনুসারে গাছ লাগানো এবং তারের জঙ্গল থেকে সল্টলেককে মুক্ত করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।