Calcutta News

স্কুলের পাশে তামাক রোধে গাঁধীগিরি

আগামী ৯ মে থেকে এ ভাবেই কলকাতায় শুরু হচ্ছে তামাক বিরোধী অভিযান। প্রথমে কলকাতা পুরসভা এলাকার ছ’টি স্কুল ও পরের ধাপে শহরের সমস্ত স্কুলে এই অভিযান চলবে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৮ ০১:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুলের আশপাশে তামাকজাত জিনিস বিক্রি করা নিষিদ্ধ, করা যায় না ধূমপানও। কিন্তু বাস্তবে বহু ক্ষেত্রে দেখা যায়, আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বহাল তবিয়তে স্কুলের সামনেই বিক্রি হচ্ছে তামাকজাত দ্রব্য। আইনের চোখ রাঙানিতেও যখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না, তখন পথে নামছে স্কুল পড়ুয়ারা। স্কুলের ১০০ গজের মধ্যে নীল-সাদা রং করে ‘তামাক মুক্ত এলাকা’ হিসেবে চিহ্নিত করার পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতা ও ক্রেতাদের ফুল দিয়ে গাঁধীগিরিও করবে পড়ুয়ারা। আগামী ৯ মে থেকে এ ভাবেই কলকাতায় শুরু হচ্ছে তামাক বিরোধী অভিযান। প্রথমে কলকাতা পুরসভা এলাকার ছ’টি স্কুল ও পরের ধাপে শহরের সমস্ত স্কুলে এই অভিযান চলবে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর।

Advertisement

কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সার্বিক প্রচার চালানোর রূপরেখা তৈরি করতে কয়েক মাস আগে পুরসভায় একটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে ধূমপানবিরোধী কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পাশাপাশি পুরসভার পদস্থ আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকেই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল, শহরের স্কুল-কলেজ সংলগ্ন এলাকায় তামাকজাত দ্রব্য বিক্রির উপরে নিয়ন্ত্রণ আনা হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হবে। দীর্ঘদিন ধরে তা নিয়ে আলোচনার পরে অবশেষে ওই প্রস্তাব কার্যকর হতে চলেছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শহরের ছ’টি স্কুলকে পাইলট প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। তার মধ্যে যাদবপুর বিদ্যাপীঠে প্রথম ওই প্রকল্প শুরু করা হবে। পরবর্তীকালে টাকি বয়েজ, লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ, অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চ, স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল ও ক্যালকাটা বয়েজে ওই প্রকল্প চালু করা হবে। পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘গরমের ছুটির আগে প্রাথমিক ভাবে ওই প্রকল্প শুরু করা হবে। গরমের ছুটির পরে এ বিষয়ে পুরোদমে প্রচার চলবে।’’

Advertisement

আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রথমে সং‌শ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন ১০০ গজ মেপে তা নীল-সাদা রং দিয়ে চিহ্নিত করা হবে। সেটিতে লিখে দেওয়া হবে ‘তামাক মুক্ত এলাকা।’ তার মধ্যে যদি কোনও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রির দোকান থাকে, তখন স্কুলের পড়ুয়ারাই গিয়ে দোকান বন্ধের জন্য অনুরোধ করবে। ওই সচেতনতা কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১০০ গজের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করা হবে। কারণ, কোনও অভিভাবকই চাইবেন না যে, তাঁর স্কুল চৌহদ্দি সংলগ্ন এলাকায় সিগারেট বা অন্য তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করা হোক।’’

যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য জানান, আগামী ৯ মে স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে ওই কর্মসূচি পালন করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘এর ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে তামাক বিরোধী ভাবধারার প্রচারও হবে। যেটা খুবই জরুরি। যাঁরা সেগুলি বিক্রি করবেন, তাঁদের ফুল দিয়ে বিক্রি করতে নিষেধ করার দাবি জানাবে পড়ুয়ারা।’’

প্রসঙ্গত, আইন অনুযায়ী স্কুলের আশপাশে কোনও জায়গায় তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করা যায় না। সেই বিষয়ে স্কুল প্রধানদের পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সমস্ত ক্ষেত্রে যে তা মানা হয় না, সে কথা মেনেছেন দফতরের কর্তারাও। এ ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভা বাড়তি ভাবে উদ্যোগী হওয়ায় সুফল পাওয়া যাবে বলেই মত তাঁদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement