জখম দুই স্কুলপড়ুয়া। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
স্কুল শেষে কয়েক জন পড়ুয়া মাঠ পেরোচ্ছিল। হঠাৎ কিছু একটা ফাটার বিকট আওয়াজ শোনেন পার্কের আশপাশে থাকা লোকজন। এর পরেই তাঁরা দেখেন, বছর এগারো-বারোর চার পড়ুয়ার ঘাড় ও গলা থেকে রক্ত ঝরছে। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে ওই চার পড়ুয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনাটি ঘটেছে এন্টালি থানা এলাকার পদ্মপুকুর মাঠে।
পুলিশ সূত্রের খবর, তখন সকাল সাড়ে ১১টা। স্কুল ছুটির পরে বাড়ি ফিরছিল ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া ট্যাংরার মতিঝিলের বাসিন্দা মহম্মদ তৌহিদ (১২)। তার সঙ্গে আরও তিন বন্ধু ছিল। তাদের বাড়ি ট্যাংরা এবং বেকবাগান থানা এলাকায়। স্কুল থেকে বড় রাস্তা না ধরে চার বন্ধু প্রতিদিনের মতো পদ্মপুকুর মাঠ পেরিয়ে আসছিল।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা দু’জন লোক তৌহিদদের জানান, মাঠে কয়েকটি বল পড়ে গিয়েছে। সেগুলো কুড়িয়ে দিতে তাঁরা অনুরোধ করেন। তৌহিদের কথায়, ‘‘সামনে দু’টো বলের মতো জিনিস পড়ে রয়েছে দেখে তুলতে যাই। আর তখনই হাতে সেগুলো ফেটে যায়।’’ তৌহিদের সঙ্গে বল কুড়িয়েছিল মহম্মদ সাকির আলি এবং মহম্মদ উজাফা। বোমা ফেটে তারাও জখম হয়েছে। অবশ্য সঙ্গে থাকা অন্য বন্ধু মহম্মদ সোহেলের কিছু হয়নি। তার সামনের চুল সামান্য পুড়ে গিয়েছে।
তৌহিদ ও তার বন্ধুদের দাবি, বল ভেবে জিনিসগুলো কুড়োনোর পরে, আর কাউকে তারা দেখতে পায়নি। ঘটনার পরেই ওই মাঠে থাকা অন্য স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের ফলে মাঠের ধারে থাকা কংক্রিটের বসার সিটটি উড়ে পাশে গিয়ে পড়েছিল। খবর যায় এন্টালি থানায়। চার পড়ুয়াকে অটোয় তুলে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। খবর দেওয়া হয় তাদের পরিজনেদের। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তিন জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ দিকে ওই চার পড়ুয়া বল ভেবে বোমা কুড়োনোর কথা বললেও, ঘটনাস্থলে থাকা স্থানীয় যুবক জাভেদের দাবি, কোনও বোমা ছিল না। সবেবরাত উপলক্ষে ওই চার পড়ুয়া চকলেট বোমা কিনেছিল এবং সেটা ফাটাতে গিয়েই জখম হয়েছে তারা। যদিও পড়ুয়াদের জখম চকলেট বোমার আঘাতে নয় বলেই জানিয়েছেন, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
পুলিশের দাবি, চকলেট বোমা না হলেও এটি বড় কোনও বিস্ফোরক নয়। চার পড়ুয়া এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলা হবে। ঘটনাস্থল থেকে ফাটা বোমার নমুনা সংগ্রহ করে দেখা হচ্ছে, কী ধরনের জিনিস ছিল। পুরোটাই তদন্ত সাপেক্ষ।