প্রতীকী ছবি।
কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক সার্জেন্টরা কি এ বার থেকে তদন্তের দায়িত্বও পেতে চলেছেন?
লালবাজারের সূত্রের খবর, সাব ইনস্পেক্টরদের পাশাপাশি সার্জেন্টদের হাতে তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেওয়া যায় কি না, পুলিশের শীর্ষ মহলে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শীঘ্রই তা প্রস্তাব আকারে নবান্নে পাঠানো হবে। পাশাপাশি, বাহিনীতে আগামী দিনে নতুন নিয়োগ হওয়া সার্জেন্টদের সরাসরি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার কথাও প্রস্তাবে থাকবে বলে সূত্রের খবর। সার্জেন্ট পদটি সাব ইনস্পেক্টর পদের সমতুল্য। লালবাজারের সুপারিশ, সার্জেন্টদের তিন মাস প্রশিক্ষণ দিয়ে তদন্তভার দেওয়া হোক।
বর্তমানে সার্জেন্ট পদটি রয়েছে শুধু কলকাতা পুলিশেই। মূলত যান চলাচলে শৃঙ্খলা আনাই তাঁদের কাজ। তবে ব্রিটিশ আমলে শহরে দুষ্কৃতী দমনের জন্যই সার্জেন্ট নিয়োগ করা হত। শক্তিশালী চেহারার এবং শারীরিক কসরৎ জানা যুবকদেরই ঠাঁই হত ওই পদে। স্বাধীনতার পরে সার্জেন্টদের কাজের ধরন বদলে দেওয়া হয়। ট্র্যাফিক আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও, আইনশৃঙ্খলাজনিত কোনও ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সার্জেন্টদের দেওয়া হয়নি। সেই দায়িত্ব রয়েছে সাব ইনস্পেক্টরদের উপরে।
প্রতিটি থানায় এক বা একাধিক সার্জেন্ট থাকেন। লালবাজার সূত্রে খবর, এলাকা দেখভাল (দুষ্কৃতী দমন) করাই তাঁদের মূল দায়িত্ব। থানার বাহিনী মোতায়নের কাজও মূলত তাঁদের। তবে কোনও রকম তদন্তের দায়িত্ব ওই সার্জেন্টদেরও দেওয়া হয় না।
এই সুপারিশে নবান্ন সবুজ সঙ্কেত দিলে কলকাতা পুলিশে তদন্তকারী অফিসারের যে ঘাটতি রয়েছে তা কিছুটা মিটবে বলেই মনে করছেন বাহিনীর কর্তারা। সার্জেন্টদের হাতে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি দীর্ঘ দিনের। চলতি মাসের গোড়ায় সার্জেন্ট-ইনস্পেক্টরদের একটি দল কলকাতা পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠক করেন। তার পরেই সাব ইনস্পেক্টরদের পাশাপাশি সার্জেন্টদের হাতে তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার প্রস্তাব নবান্নে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে লালবাজার সূত্রের খবর।
কলকাতা পুলিশের এলাকা বহরে বেড়ে এখন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জোকা-বিষ্ণুপুর থেকে ভাঙড় পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। থানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯। এর মধ্যে মহিলা থানার সংখ্যা আটটি। অভিযোগ, এলাকা বাড়লেও সেই তুলনায় গত কয়েক বছরে সাব ইনস্পেক্টর নিয়োগ হয়নি। পুলিশের একাংশের মতে, দ্রুত সাব ইনস্পেক্টর নিয়োগ না হলে বিভিন্ন থানায় অফিসারের ঘাটতি মারাত্মক আকার নেবে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি থানায় হাতে গোনা তদন্তকারী অফিসার রয়েছেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর।