প্রতীকী ছবি।
মাত্র একটি ওয়ার্ড। আর তার জন্যই পাঁচ-পাঁচটি চিঠি এসেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। অথচ, একটিরও জবাব যায়নি রাজ্য সরকারের তরফে। যার ফলে কলকাতা পুরসভার ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচন কবে হবে, এখনও পর্যন্ত তা স্থির হল না।
২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে বেহালার ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শৈলেন দাশগুপ্ত মারা যান। তার পর থেকে গত দেড় বছর কাউন্সিলরবিহীন হয়েই রয়ে গিয়েছে ওই ওয়ার্ড। নিয়ম অনুযায়ী, এ সব ক্ষেত্রে ছ’মাসের মধ্যেই ভোট করাতে হয়। বিভিন্ন সূত্র মারফত কমিশন জানতে পারে, ওই ওয়ার্ডে কোনও কাউন্সিলর নেই। তার পরেই রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ করে। চিঠি দিয়ে তারা জানতে চায়, রাজ্য সরকার ওই ওয়ার্ডে কবে নাগাদ ভোট করাতে ইচ্ছুক? কিন্তু রাজ্য সরকার একটি চিঠিরও জবাব দেয়নি বলে কমিশন সূত্রের খবর।
এ বিষয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের বক্তব্য, কমিশন থেকে চিঠি এসেছে। পুরসভার কাছে বিষয়টি জানতে চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে কোনও জবাব আসেনি। উল্লেখ্য, বেহালার ওই ওয়ার্ডের উপনির্বাচন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও হয়েছে। যা ‘রিট’ আকারে কমিশনের কাছে এসেছিল। মাস দু’য়েক আগেও মামলার শুনানি হয়েছে। কমিশন সূত্রের দাবি, এ ক্ষেত্রে তাদের কিছু করার নেই। কারণ, রাজ্য সরকারের তরফে সিদ্ধান্ত না হলে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করার এক্তিয়ার কমিশনের হাতে নেই। সেই কারণেই রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে কমিশনকে।১১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট চেয়ে মঙ্গলবার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দরবার করতে চেয়েছিল। কিন্তু কমিশনের তরফে প্রতিনিধিদলকে সময় দেওয়া হয়নি। বুধবার কমিশনের কাছ থেকে উত্তর পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রকাশবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কমিশন বলেছে, আমরা তো ভোটের জন্য লিখছি। কিছু দিন সময় দিন। রাজ্য সরকার নিশ্চয়ই ভোট করবে।’’ এমন ‘নিশ্চয়তা’ পাওয়ার পরেও কংগ্রেস কাউন্সিলরের বক্তব্য, ‘‘১৫-২০ দিন দেখব। তার পরে আবার কমিশনের কাছে যাব। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কাউন্সিলর না থাকায় এলাকার মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না। যে দলের কাউন্সিলরই হোন না কেন, মানুষের পরিষেবা পাওয়ার অধিকার তো আছে।’’
এ হেন পরিস্থিতিতে কাউন্সিলর না থাকায় দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজকর্মে প্রবল অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। যদিও ১৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষের দাবি, ‘‘প্রয়োজনীয় কাজকর্মের জন্য আমিই সই করে দিচ্ছি। পাশের ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও (১১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তারক সিংহ) সইসাবুদ করছেন।’’ পুরসভায় কান পাতলে অবশ্য শোনা যাচ্ছে, ওই ওয়ার্ডে শাসকদলের প্রার্থী বাছাইয়ের জটিলতাতেই আটকে রয়েছে উপনির্বাচন। কারণ, এক মেয়র পারিষদের ছেলে ওই ওয়ার্ডের সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখভাল করেন। ফলে হিসেব মতো তিনিই প্রার্থী-পদের প্রধান দাবিদার। যদিও তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে এখনও জট না কাটায় ওই ওয়ার্ডের ভোট নিয়ে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি বলেই সূত্রের খবর।