প্রায় তিন দশকের পুরনো কর্মী তারা। কর্মসূত্রে দেশের বিভিন্ন কারখানায় প্রশিক্ষণও নিয়েছে অস্ত্র তৈরির। তার উপরে অফিসার। কারখানার সর্বত্র অবাধ বিচরণ তাদের। সেই সুযোগেই রিভলভার, কার্বাইনের মতো অস্ত্রের বাতিল যন্ত্রাংশের কোনটি সারাই করা সম্ভব, তা চিহ্নিত করে নিত তারা। আলাদা করে রাখত সে সব যন্ত্রাংশ। ইছাপুর রাইফেল কারখানার দুই জুনিয়র ওয়ার্কস ম্যানেজার সুখদা মুর্মু এবং সুশান্ত বসু কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর হাতে ধরা পড়ার পরে এমনই সব তথ্য উঠে আসছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, কারখানার ভিতরে জঞ্জাল সাফাইয়ে তদারকি করার ফাঁকে, আলাদা করে রাখা বাতিল ওই যন্ত্রাংশ গাড়িতে তুলে নিত অপর দুই ধৃত উমেশ রায় এবং কার্তিক সাউ।
এসটিএফ-এর হাতে ধরা পড়া অস্ত্র কারবারিদের জেরা করে এমনই তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, কোন বাতিল যন্ত্রাংশ দিয়ে অস্ত্র তৈরি হতে পারে, তার কাজ সুখদা এবং সুশান্তই করত। কারখানায় প্রতি মাসে কয়েক টন যন্ত্রাংশ বাতিল হিসেবে গণ্য হয়। তার মধ্যে থেকে ঠিক জিনিসটি শুধু মাত্র অভিজ্ঞতার জোরেই বেছে নিত ওই দু’জন।
পুলিশের দাবি, ধৃত ওই ব্যক্তি তদন্তকারীদের জানিয়েছে, তারা নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি ওই কারখানায় যোগ দেয় সাধারণ কর্মী হিসেবে। পরে তারা অফিসার পদে উন্নীত হয়। সেই সুযোগেই গত এক দশক ধরে তারা ওই বাতিল অস্ত্র চিহ্নিত করে বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করেছে বলে দাবি পুলিশের। বৃহস্পতিবার নোয়াপাড়ার বাসিন্দা, ধৃত ওই চার জনের বাড়িতে ফের তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি সুশান্তের ব্যবহার করা কম্পিউটারটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।