গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ উঠল শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগ তুললেন ওই কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্নিগ্ধা সাহা। অভিযুক্ত ওই তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতিও।
ছাত্র সংসদের ক্ষমতা কাদের হাতে যাবে তা নিয়ে কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রেষারেষি চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। মঙ্গলবার কলেজে স্নিগ্ধার সমর্থকদের উপরে বাইরে থেকে কিছু যুবক হামলা চালায় বলে অভিযোগ। নিগৃহীত হন ছাত্রীরাও। সংঘর্ষে ১৪ জন আহত হয়েছেন বলে কলেজ সূত্রে খবর। এক ছাত্র এসএসকেএমে ভর্তি। স্নিগ্ধা সাহার অভিযোগ, বাপ্পাদিত্যর অনুগামীরাই মঙ্গলবার পড়ুয়াদের আক্রমণ করেছে। বাপ্পাদিত্য অবশ্য বলেন, ‘‘সংঘর্ষ হয়েছে ছাত্রদের মধ্যে। সেখানে আমার যোগাযোগের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’
স্থানীয় তৃণমূলের একটি অংশ গোটা ঘটনায় বিরক্ত। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার মন্তব্য, গোটা ঘটনায় বাপ্পাদিত্যর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামও জড়িয়ে গিয়েছে। যা দলের পক্ষে অস্বস্তিকর। তবে পার্থবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে বলা হচ্ছে, মঙ্গলবারের সংঘর্ষের কথা পড়ুয়ারা জানালে শিক্ষামন্ত্রীই তাঁদের পুলিশে অভিযোগ করার কথা বলেন। পুলিশ গিয়ে ৯জনকে গ্রেফতার করে। এ দিন শিক্ষামন্ত্রীকে ফোন ও মেসেজ করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
কলেজ সূত্রের খবর, স্নিগ্ধা ও কলেজের টিএমসিপির ইউনিট প্রেসিডেন্ট অভিষেক দত্তের বিরুদ্ধে ‘অ-ছাত্রসুলভ’ আচরণের অভিযোগ তুলেছিল টিএমসিপি-র বাপ্পাদিত্য গোষ্ঠী। অভিযোগ পৌঁছয় শিক্ষামন্ত্রীরও কাছে। বাপ্পাদিত্য কলেজের অধ্যক্ষকে ওই দু’জনকে শো-কজ করতে বলেন। গত সপ্তাহে তাঁদের শো-কজ করা হয়। স্নিগ্ধা বলেন, ‘‘আমাদের শো-কজ করা হয়েছে পরিচালন সমিতির বৈঠক ছাড়াই। এটা অবৈধ। প্রয়োজনে কলেজে ঢুকব।’’ স্নিগ্ধার দাবি, বিষয়টি তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়মমাফিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রীও।
অধ্যক্ষ সোমনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই গ্রীষ্মকালীন অবকাশ (সামার রিসেস) এ দিন থেকে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে পূর্ব নির্দিষ্ট পরীক্ষা, ক্লাস, ভর্তি প্রক্রিয়াও চলবে। বুধবার কলেজ অবশ্য শান্ত ছিল। কলেজের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।