চিচিং ফাঁক: এ ভাবেই পটলে লুকোনো ছিল নোট। নিজস্ব চিত্র
পটল ভাঙতে গিয়ে বেরোল ইউরো!
টাটকা সবুজ পটল। ব্যাগ ভর্তি সেই পটল চলে গিয়েছিল বিমানের পেটেও। কিন্তু যে দু’জন যাত্রী ওই দুই ব্যাগ পটল নিয়ে কলকাতা থেকে ব্যাঙ্কক যাচ্ছিলেন, তাঁদের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় বিমানবন্দরের শুল্ক অফিসারদের। এর পরে পটল ভেঙে দেখা গেল, ভিতরে রয়েছে ইউরোর নোট। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার হয় ৫৫ হাজার ইউরো। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই দু’জনকে।
শুল্ক দফতর সূত্রের খবর, ঠিক যে ভাবে পটলের দোলমার জন্য মাথাটা কেটে ভিতরের অংশ বার করে নেওয়া হয়, এ ক্ষেত্রেও বড় বড় পটল সে ভাবে ফাঁপা করে নেওয়া হয়েছিল। পটলগুলি লম্বালম্বি চিরে, তার ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল সরু করে মোড়া ৫০০ ইউরোর নোট। এর পরে চেরা অংশ আঠা দিয়ে জুড়ে দেওয়া হয়। বাইরে থেকে বোঝার কোনও উপায় ছিল না যে ভিতরে নোট রয়েছে।
শুল্ক অফিসারেরা জানিয়েছেন, গ্রেফতার হওয়া দুই যাত্রীর আদত বাস বিহারে। এখন এক যুবক থাকেন খড়দহে। অন্য জন উত্তরপ্রদেশের রুদ্রপুরে। সোমবার রাতের উড়ানে ব্যাঙ্কক যাবেন বলে তাঁরা কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন। দু’জনের কাছে একই রকম দেখতে কালো রঙের দু’টি ব্যাগ ছিল। ছিল একটি করে হাত ব্যাগও। শুল্ক অফিসারেরা জানিয়েছেন, এক একটি কালো ব্যাগে কমপক্ষে ১০ কিলোগ্রাম করে পটল ছিল। সেগুলি বিমানের পেটের ভিতরে পাঠিয়ে দেন ওই দুই যুবক। তার পরে হাত ব্যাগ নিয়ে তাঁরা অভিবাসন পেরিয়ে শুল্ক অফিসারদের কাছে পৌঁছন। তাঁদের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় অফিসারদের। পাসপোর্ট পরীক্ষা করে দেখা যায়, মাঝেমধ্যেই ওই দু’জন ব্যাঙ্কক যান।
সন্দেহ বাড়তে থাকায় কালো ব্যাগ দু’টি বিমানের পেট থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। ব্যাগ খুলে দেখা যায়, থরে থরে সাজানো পটল। আঙুল দিয়ে চাপতেই ফেটে যেতে থাকে পটলগুলি। ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে ইউরো। সব মিলিয়ে ১১০টি ৫০০ ইউরোর নোট ছিল পটলের ভিতরে। অফিসারেরা জানান, ২০ কিলোগ্রাম পটলের প্রত্যেকটি ভেঙে ভেঙে দেখতে হয়েছে কোনটার ভিতরে ইউরো রয়েছে। বেশ কিছু পটল ভাঙতে গিয়ে বোঝা যায়, সেগুলির মধ্যে কিছু লুকোনো নেই।
দু’জনের ট্রাউজার্সের পকেট থেকে পাওয়া গিয়েছে পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে বাজেয়াপ্ত হওয়া মুদ্রার মূল্য ভারতীয় টাকায় ৪৬ লক্ষ ৭১ হাজার ৫০০ বলে শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।