কালীঘাট মন্দিরে ২৪ ঘণ্টা জল সরবরাহের দাবি। — ফাইল চিত্র।
কালীঘাট মন্দিরে ২৪ ঘণ্টা জল সরবরাহের বিষয়ে উদ্যোগী হতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে কালীঘাট মন্দিরে ২৪ ঘণ্টা জল সরবরাহের দাবিতে সরব হন স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর মুখোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কালীঘাটের মতো এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষ এই মন্দিরে আসেন। মন্দিরে ২৪ ঘণ্টা জল সরবরাহ না থাকায়, দর্শনার্থীদের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগী হোক কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত কালীঘাট মন্দির। সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসাবে এই প্রশ্ন উত্থাপন করেন প্রবীর। স্থানীয় কাউন্সিলরের এমন প্রশ্নের উত্তর দেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “কালীঘাট মন্দির চত্বরে উন্নয়নের কাজ চলছে। কাজ হয়ে গেলে সর্ব ক্ষণ পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা হবে।” ভক্তদের জন্য মহাতীর্থ কালীঘাট এক পুণ্যভুমি। দেশ-বিদেশ থেকে প্রতি বছর লাখে লাখে পর্যটক কালীর দর্শন করতে আসেন। সেখানে জলকষ্টের অভিযোগের সুরাহা করতে চান স্থানীয় কাউন্সিলর।
কালীঘাট মন্দিরের জল সরবরাহ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর বলেন, “কালীঘাট মন্দির চত্বরে কলকাতা পুরসভার অনেকগুলি জলের কল রয়েছে। যেগুলিতে কেবলমাত্র দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে জল আসে। আর দর্শনার্থীদের কথা মাথায় রেখে কালীঘাটে বেশ কিছু গভীর নলকূপের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। মাটির নীচের জলস্তর নেমে যাওয়ায় সেগুলিও অচল হয়ে পড়েছে। তাই কালীঘাট মন্দিরে জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ২৪ ঘণ্টা জলের জোগান বজায় থাকলে মানুষকে জলকষ্টের সম্মুখীন হতে হবে না।” তাঁর আরও বক্তব্য, “কালীঘাট একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্র। সেই পর্যটনকেন্দ্রে কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য সরকার সব রকম পরিষেবা বহাল করেছে। আমরা চাই জল-সমস্যা সমাধান করে মন্দিরে আগত দর্শনার্থীদের পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করা হোক।” উল্লেখ্য, প্রতি দিন ভোর চারটের সময় মা কালীর মঙ্গলারতি হয়। সেই থেকে মন্দির দুপুর পর্যন্ত খোলা থাকে। আবার দুপুরে অল্প সময়ের জন্য বন্ধ রাখার পর বিকেল থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত মন্দিরের দরজা খোলা থাকে দর্শনার্থীদের জন্য। ভোর চারটে থেকেই মা কালীর দর্শন করতে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে কালীঘাটে।
বিশেষ বিশেষ দিনে কালীঘাট মন্দিরে জনস্রোত নেমে আসে। পয়লা বৈশাখে লাখো মানুষের ভিড় হয়েছিল কালীঘাট মন্দিরে। এত মানুষের জলের জোগান দিতে শেষ পর্যন্ত কলকাতা পুরসভাকে আলাদা গাড়ি এনে দর্শনার্থীদের জন্য জলের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। কিন্তু সেই জলও পর্যাপ্ত ছিল না বলেই অভিযোগ উঠেছিল। কেবল পয়লা বৈশাখই নয়, প্রতি মাসের অমাবস্যা তিথি, কালীপুজো, অক্ষয় তৃতীয়া-সহ নানা উৎসবের দিনে প্রচুর মানুষ কালীঘাটে আসেন। তাই কালীঘাট মন্দিরের জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে চায় কলকাতা পুরসভা। আপাতত কালীঘাট মন্দির এলাকায় চলা বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হবে পুরসভা।