ফিরহাদ হাকিম।—ফাইল চিত্র।
সম্পত্তিকর আদায়ে নতুন নিয়ম চালু করছে কলকাতা পুরসভা। ছ’বছরেরও আগে মূল্যায়ন না হওয়া বকেয়া কর থেকে রেহাই পেতে পারেন শহরবাসী। তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে পুর কর্তৃপক্ষের তরফে। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় কলকাতা পুর আইনের এই সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে সংশোধন ও সংযোজনের বিল পাশ হল। পরে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, বকেয়া সম্পত্তিকর আদায়ে জটিলতা কমিয়ে শহরবাসীর সুবিধাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে নতুন ওই বিলে।
কী সুবিধা?
মেয়র জানান, পুর নিয়ম অনুসারে, প্রতি ছ’বছর অন্তর জমি ও বাড়ির সাধারণ মূল্যায়ন (জেনারেল রিভ্যালুয়েশন বা জি আর) করা হয়। এবং সেই মূল্যায়নের প্রেক্ষিতে প্রতি জি আর-এ বসতবাড়ির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক বাড়ির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত সম্পত্তিকর বেড়ে যায়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বেহালা, যাদবপুর, টালিগঞ্জ-সহ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কোনও জি আর করা হয়নি। যেমন, বেহালায় শেষ জি আর হয়েছে ১৯৯০ সালে। যাদবপুরে ২০০১ সালে। অর্থাৎ, ওই সমস্ত এলাকায় সম্পত্তিকর বৃদ্ধির কোনও হিসেবই হয়নি। পুরনো কর কাঠামোতেই টাকা নেওয়া চলেছে। এখন সমস্যা হল, ওই সমস্ত এলাকায় কেউ বাড়ি-জমি কিনলে মিউটেশন করানোর সময়ে তাঁদের বলা হচ্ছে, ওই জমির উপরে জি আর অনুযায়ী আরও কর বাকি রয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তার পরিমাণ কয়েক লক্ষ টাকাও হয়ে যাচ্ছে। যা দিতে পারছেন না ওই ক্রেতারা। নতুন বিলে বলা হয়েছে, দু’টি জি আর-এর মাঝের ব্যবধান ছ’বছর পর্যন্ত মেনে নেওয়া হবে। তার বেশি দিনের জি আর বকেয়া থাকলে সেই টাকা আর চাইতে পারবে না পুর প্রশাসন।
কিন্তু এর জন্য তো পুরসভার লোকসান হবে? মেয়র বলেন, ‘‘সময়মতো সম্পত্তিকরের কাঠামো তৈরি করতে না পারা তো পুরসভার ত্রুটি। শহরবাসী কেন তার খেসারত দেবেন?’’
এ দিন বিজ্ঞাপন থেকে টাকা আদায় নিয়েও বিধানসভায় সংশোধনী বিল পেশ করেছেন মেয়র। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, ২০১৭ সালে জিএসটি চালু হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে বিজ্ঞাপন বাবদ কর আদায় বন্ধ করতে হয়েছিল। তাতে পুরসভার আয় অনেকটাই কমে যায়। এ বার পুর আইনে কর কথাটি বাদ দিয়ে বিজ্ঞাপন বাবদ লাইসেন্স ফি ধার্য করা হচ্ছে। তাতে ওই বাবদ আদায় ফের চালু করা যাবে।