প্রযুক্তি: কংক্রিটের খণ্ড জুড়ে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ করছে টিবিএম। নিজস্ব চিত্র।
কমবেশি আরও সাড়ে চারশো মিটার দূরত্ব অতিক্রম করলেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ সম্পূর্ণ হবে।
চলতি বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহে শিয়ালদহের বিদ্যাপতি সেতুর কাছাকাছি যে কাজ শুরু হয়েছিল, এখন সেই সুড়ঙ্গ রয়েছে বৌবাজার সংলগ্ন ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া মোড়ের কাছাকাছি। মেট্রোকর্তাদের আশা, সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের মে-র তৃতীয় সপ্তাহে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খনন শেষ করবে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) উর্বি।
এই পর্বে, উর্বি তার কাজ শেষ করলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জোড়া সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজও সম্পূর্ণ হবে। সে ক্ষেত্রে, হাওড়া ময়দান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত মাটির নীচ দিয়ে যোগাযোগের পথ তৈরি হয়ে যাবে। এখন হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত দূরত্বে ভূগর্ভে চারটি মেট্রো স্টেশন তৈরির কাজ জোরকদমে চলছে। সেগুলি হল হাওড়া ময়দান, হাওড়া, বি বা দী বাগ এবং এসপ্লানেড। অনেক দূর এগিয়েছে শিয়ালদহ স্টেশন তৈরির কাজও।
তবে বৌবাজার পর্যন্ত পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শিয়ালদহ স্টেশন তৈরির অন্তিম পর্বের কাজে হাত দেওয়া সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ইঞ্জিনিয়ারেরা। কারণ পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ খননের ফলে বেরিয়ে আসা কাদামাটি তোলার কাজ শিয়ালদহ থেকেই করা হচ্ছে। দরকারি যন্ত্রপাতিও ওই পথ দিয়েই মাটির নীচে পৌঁছচ্ছে। কার্যত সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ এখন নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে শিয়ালদহ থেকেই। মেট্রো সূত্রের খবর, আগামী বছরের মাঝামাঝি ফুলবাগান ছাড়িয়ে শিয়ালদহ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। সে জন্য শিয়ালদহ স্টেশন সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন ওই স্টেশনে দু’টি চলমান সিঁড়ি বসানোর কাজ চলছে।
পাশাপাশি ধস কবলিত বৌবাজারে আটকে থাকা টিবিএম চণ্ডীকে উদ্ধারের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। ওই জায়গায় মাটির প্রায় ২০ মিটার গভীর একটি চৌকো গর্ত খোঁড়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই চার মিটার খোঁড়া হয়ে গিয়েছে। ওই গর্ত দিয়েই আটকে পড়া চণ্ডীকে সন্তর্পণে উদ্ধার করা হবে। পরের ধাপে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা উর্বিও কাজ শেষ করবে ওই গর্তের কাছে এসে। চণ্ডীর পরে উর্বিকেও ওই একই পথে মাটির উপরে তুলে আনা হবে।
এক মেট্রোকর্তা বলেন, “এখনও পর্যন্ত নিরাপদেই কাজ এগোচ্ছে। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সুড়ঙ্গ বৌবাজার ছুঁতে পারে। তারও পরে একাধিক প্রযুক্তিগত বাধা সামলে পশ্চিম সুড়ঙ্গের দু’দিক জোড়া লাগানোর গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করতে হবে।”