Korcha

কলকাতার কড়চা: প্রতিস্পর্ধী প্রদর্শনী

‘ওয়েজ় অব রিমেমবারিং জালিয়ানওয়ালা বাগ অ্যান্ড রবীন্দ্রনাথস রেসপন্স টু দ্য ম্যাসাকার’ শীর্ষকে পোর্ট্রেট গ্যালারির এই প্রদর্শনীটি দেখা যাবে ৩ মার্চ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত, সাড়ে ১০টা থেকে ৬টা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২০ ০০:০১
Share:

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে ‘ব্ল্যাক স্পট’ হয়ে আছে জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ড। এই বিষয়টি মনে রেখে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের পোর্ট্রেট গ্যালারিতে গত প্রায় এক বছর ধরে তিল তিল করে নির্মিত হয়েছে একটি ইনস্টলেশন। জালিয়ানওয়ালা বাগ প্রসঙ্গে আমরা কী মনে রেখেছি আর কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ দিক বিস্মৃত হয়েছি, সেই বিষয়গুলিই তুলে ধরবার চেষ্টা করা হয়েছে এই মাল্টিমিডিয়া ইনস্টলেশনে। ইতিহাসের পাতা থেকে যেন জীবন্ত হয়ে উঠবে সেই কালো দিনের কথা। এখানে ব্যবহৃত হয়েছে বিভিন্ন মহাফেজখানার নথি, চিঠিপত্র, কবিতা-গদ্য, গান-ছবি, অমৃতসরবাসীদের সঙ্গে কথোপকথনের রেকর্ডিং এবং আরও নানা ঐতিহাসিক উপাদান। সে সময় বাংলার সংবাদপত্র সাময়িকীতে প্রকাশিত ঘটনার ছায়াও রয়েছে এখানে। আমাদের স্মরণ আর বিস্মরণের মাঝে এসে দাঁড়িয়েছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথের নাইটহুড ত্যাগ পত্র, ১৯১৯-২০তে পঞ্জাব প্রসঙ্গে নানা জনের সঙ্গে তাঁর মত বিনিময় এবং জালিয়ানওয়ালা বাগ-এর ঘটনার প্রথম বর্ষপূর্তিতে সেখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের প্রস্তাব সম্পর্কে তাঁর সমালোচনার বিষয়গুলিও অনিবার্য ভাবে এসেছে এখানে। সম্রাজ্ঞী ভিক্টোরিয়াকে উৎসর্গ করা ঔপনিবেশিক প্রাসাদে নির্মিত এই ইনস্টলেশন যেন সাম্রাজ্যবাদী ঔদ্ধত্য ও পরাক্রমের প্রতিস্পর্ধী। এই গ্যালারিতে লর্ড ডালহাউসি, কুইন মেরি এবং অন্য শ্বেতপাথরের মূর্তিগুলিকে সাক্ষী রেখেই জালিয়ানওয়ালা বাগের এমত ‘নেটিভ’ নির্মাণ। এই প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন শর্মিষ্ঠা দত্তগুপ্ত এবং শিল্প নির্দেশনা সঞ্চয়ন ঘোষের। ‘ওয়েজ় অব রিমেমবারিং জালিয়ানওয়ালা বাগ অ্যান্ড রবীন্দ্রনাথস রেসপন্স টু দ্য ম্যাসাকার’ শীর্ষকে পোর্ট্রেট গ্যালারির এই প্রদর্শনীটি দেখা যাবে ৩ মার্চ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত, সাড়ে ১০টা থেকে ৬টা। আজ বিকেল ৪টেয় ইস্টার্ন কোয়াড্রাঙ্গল-এ এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, সঙ্গে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন অর্জুন পুরস্কারে সম্মানিত ভারতীয় হকি দলের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন গুরবক্স সিংহ। এই অনুষ্ঠানে গুরু নানক, গুরু তেগ বাহাদুর এবং গুরু গোবিন্দ সিংহ— এই তিন শিখগুরুকে নিয়ে ভিক্টোরিয়ার নিজস্ব সংগ্রহ থেকে জলরঙে আঁকা ছবির একটি ফোল্ডারও প্রকাশিত হবে।

Advertisement

সম্পূর্ণতার দিকে

Advertisement

‘‘আজকে আমার একটু প্রেমের কবিতা লিখতে হবে... আজকে দুঃখের কবিতা লিখতে হবে... এভাবে তো কেউ কবিতা লেখে না... কবিতা লেখে সেই সম্পূর্ণতাকে লক্ষ্য করে...’’, এক দীর্ঘ কথোপকথনে ‘শতভিষা’ পত্রিকা-য় বলেছিলেন আলোক সরকার (১৯৩১-২০১৬), আবার ‘দেশ’ পত্রিকা-র সাহিত্য সংখ্যায় তাঁর কবিতালেখার বিশিষ্ট মানসতা প্রসঙ্গে লিখেছিলেন ‘‘তা আমাকে প্রতি মুহূর্ত নির্জন একাগ্র নীরবতায় জ্যোতির্ময় করে রাখে।... তা কেবল একটা প্রবহমানতা। প্রত্যাশাবিহীন নিরভিমান ক্রম অগ্রসরমানতা।’’ প্রকাশ দাসের সম্পাদনায় ‘স্বকাল’-এর এই ‘কবি আলোক সরকার সম্মাননা সংখ্যা’য় কবির কথোপকথন, নির্বাচিত গদ্যরচনার পাশাপাশি আছে তাঁকে নিয়ে স্মৃতিকথন, প্রবন্ধাদি, তাঁকে লেখা চিঠিপত্রও, পত্রপ্রেরক: শঙ্খ ঘোষ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত প্রমুখ। আছে আলোক সরকারের কবিতা ও গদ্যের পাণ্ডুলিপি, রচিত গ্রন্থের প্রচ্ছদ, গ্রন্থ ও জীবনপঞ্জি। প্রয়াণের এক বছর আগে সাহিত্য অকাদেমি সম্মানে ভূষিত হন কবি। তাঁর আসন্ন জন্মদিন ২৩ মার্চ উপলক্ষে সংখ্যাটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ এক স্মরণ অনুষ্ঠানে— ৩ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টায় বাংলা আকাদেমিতে। অমিয় দেবের সভাপতিত্বে কবিকে নিয়ে বলবেন সে কাল ও এ কালের বিশিষ্ট কবিরা, এবং কবিজায়া মিনু সরকার। সঙ্গে পত্রিকার প্রচ্ছদ।

১২০তম জন্মদিন

ভাষাতত্ত্ব থেকে ভারত-সংস্কৃতির নানা পরিসরে যাতায়াতের মূল সূত্রটা সুকুমার সেন পেয়েছিলেন আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, আইজেএস তারাপুরওয়ালা ও বর্ধমানের স্কুলের শিক্ষক হেমেন্দ্রমোহন বসু, এই তিন ‘গুরু’র থেকে। ছাত্র সুকুমারের পরবর্তী জীবনে শিক্ষক-সত্তার সঙ্গে জড়িয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসঘর। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ভাষাতত্ত্ব বিভাগ সুকুমার সেনের ১২০তম জন্মদিন উদ্‌যাপন করছে ৩ মার্চ। সেখানে সুকুমার স্মরণে একটি ‘বিশেষ কভার’ প্রকাশ করতে চলেছে ভারতীয় ডাক বিভাগ। কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তা প্রকাশ করবেন ‘চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল’ (ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল) গৌতম ভট্টাচার্য। উপস্থিত থাকবেন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিভাগের শিক্ষকেরা। এ ছাড়াও রয়েছে আলোচনাসভা। নানা পর্বে বলবেন প্রধান অতিথি পবিত্র সরকার, কৃষ্ণা ভট্টাচার্য, চিন্ময় গুহ প্রমুখ।

গাঁধী স্মরণ

১৯২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মতিথিতে মহাত্মা গাঁধী বেলুড় মঠে আসেন। এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আমি এখানে অসহযোগ-আন্দোলন বা চরকা প্রচার করতে আসিনি। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন-অনুষ্ঠানে তাঁর পুণ্যস্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা ও নমস্কার জ্ঞাপন করবার জন্যই আজ এখানে এসেছি।” স্বামীজির রচনাবলি পড়ে তাঁর দেশপ্রেম যে অনেকগুণ বেড়ে গিয়েছিল সে কথা বলে গাঁধীজি যুবসমাজকে স্বামীজির চিন্তা দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে আহ্বান জানান। সেই বেলুড় মঠস্থিত রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে গাঁধীজির সার্ধশতজন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৪ মার্চ ‘রিভিজ়িটিং গাঁধী ইন আওয়ার টাইম্‌স’ শীর্ষক আলোচনাচক্র আয়োজিত হয়েছে। আজকের সঙ্কটের দিনে গাঁধীজির ইতিবাচক জীবনদর্শনের রাজনৈতিক প্রয়োগ কোন পথে হতে পারে তার দিশা অনুসন্ধানের এক ক্ষুদ্র প্রয়াস হবে এ দিনের আলোচনাসভা। মুখ্য বক্তা তপনকুমার চট্টোপাধ্যায়, মীরাতুন নাহার এবং আব্দুস সামাদ গায়েন। গাঁধীজির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে নিবন্ধ উপস্থাপন করবেন নবীন অধ্যাপকবৃন্দ, আর পোস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে ছাত্রছাত্রীরা।

কাঁচা সোনা

শিমলীর জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা সঙ্গীতের পরিসরে। বাবা স্বপন বসু বিখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পী, মা সোহিনী বসু চর্চা করেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। ভারতীয় নানা গীতরূপের গায়নশৈলীর সঙ্গে পাশ্চাত্য ধারার প্রতিও আগ্রহ আছে শিমলীর, সেই সঙ্গে চলছে তাঁর শিক্ষা ও চর্চা। লোকগান তাঁর কাছে শুধু একটা গান নয়, একটা জীবনগাথা। এ গান বহু মানুষের যাপনের নির্যাস। শিমলী একজন নাট্যকর্মীও। তাঁর বিশ্বাস, নাটকের কাজ তাঁর গানকে আরও কাছে এনে দিয়েছে। তাঁর কথায় ‘‘আমার নাটকে গান যেমন আছে, তেমনই আমার গানে আছে নাটক।’’ ৪ মার্চ বিকেল ৫টায় কলকাতা প্রেস ক্লাবে ভাবনা রেকর্ডস অ্যান্ড ক্যাসেটস-এর পক্ষ থেকে শিমলী বসুর কণ্ঠে দশটি লোকগানের সঙ্কলন ‘কাঁচাসোনা’-র আনুষ্ঠানিক প্রকাশ। সব ক’টি গানই দীর্ঘ আঞ্চলিক পরম্পরায় বহু প্রজন্মকে আনন্দ দিয়ে এসেছে।

দর্শকের দরবার

সুখচর পঞ্চম এ বার তিরিশে পা দিয়েছে। এ বার রজত জয়ন্তীতে তাদের ‘দর্শকের দরবার’ নাট্যমেলা। মেলারও সুর ঐতিহ্যের চর্চা। ‘জলসাঘর আর্ট গ্যালারি’-তে পেশাদার রঙ্গমঞ্চ ও বিশ্বনাট্য ব্যক্তিত্বের প্রদর্শনী, সুরঞ্জনা দাশগুপ্তের নাটকের গান, পবিত্র সরকারের বক্তৃতা ও অন্তরঙ্গ নাটক। মঞ্চ নাটক ১৬টি। স্ট্রিন্ডবার্গ, ইবসেনের নাটক ছাড়া ‘দাদাঠাকুর’, ‘গহরজান’, ‘আর্কিমিডিসের মৃত্যু’ আছে। আছে ২৮ বছর ধরে করে চলা ‘অচলায়তন’। ১৯৯২ সালে এই রবীন্দ্রনাট্যের উপদেষ্টা ছিলেন শম্ভু মিত্র, তাপস সেন ও শঙ্খ ঘোষ। দরবারে এ বার প্রথম হিন্দি নাটক পদাতিকের ‘আত্মকথা’। থাকবেন কুলভূষণ খারবান্দা, চেতনা জালান। বাংলাদেশের জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-পড়ুয়ার দল আরশিনগর রয়েছে ‘রহু চণ্ডালের হাড়’ নিয়ে। ছোটদের পঞ্চম-এর পরিবেশনা নতুন নাটক পরিবেশ যোদ্ধা বিষয়ে ‘আমি গ্রেটা— গ্রেটা থুনবার্গ’। নাটকগুলির আয়োজন সোদপুর লোকসংস্কৃতি ভবন ও খড়দহ রবীন্দ্র ভবনে দু’টি পর্বে। নাট্যজীবন সম্মান পাচ্ছেন বাংলাদেশের নাসিরউদ্দিন ইউসুফ। উৎসব শুরু হয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারি। চলবে উৎপল দত্তের জন্মদিন ২৯ মার্চ পর্যন্ত।

পায়ের তলায় সর্ষে

পায়ের তলায় সর্ষে... এই আপ্তবাক্য ও পার্বতী দাস বাউল বুঝি সমার্থক! আজ কলকাতা তো, কাল ক্যালিফর্নিয়া, পরশু ইতালি তো, তার পর দিন মিউনিখ। সারা পৃথিবীতে পার্বতী বাউলানি বিলিয়ে চলেছেন তাঁর বাউল কেন্দ্রিক ধ্যান জ্ঞান বোধ উপলব্ধি-সহ আরও কত কী! তাঁর একতারা ডুগ্গি আর নৃত্যের সাবলীল তালে বিশ্ব মজেছে। আদিতে কোচবিহারে জন্ম মৌসুমী পাড়িয়াল প্রথমে শান্তিনিকেতন গিয়েছিলেন কলাভবনে ভিসুয়াল আর্ট নিয়ে পড়াশোনার জন্য। একবার বিশ্বভারতী ফার্স্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কামরায় এক অন্ধ বাউলানির গাওয়া গান তাঁর সব কিছু ওলটপালট করে দেয়। আশ্রম চত্বরে ফুলমালা দাসীর কাছে সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন। পরে বাঁকুড়ায় সনাতন দাস বাউলের কাছে সাত বছর সাধনা। তাঁরই আজ্ঞায় ৯৭ বছরের শশাঙ্ক গোঁসাই বাউলের কাছে যান। সম্প্রতি ভারতীয় সংগ্রহশালার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে গাইলেন পার্বতী বাউল (সঙ্গের ছবি)।

বাংলাদেশ থেকে

অক্ষয়কুমার দত্তের জন্মদ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে এশিয়াটিক সোসাইটি আয়োজিত এক আলোচনাসভায় আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশের অক্ষয়কুমার-গবেষক মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম (জন্ম ১৯৭৬)। সাইফুল দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে অক্ষয়-গবেষণায় নিবিষ্ট রয়েছেন। এর মধ্যেই তিনি অক্ষয়কুমার দত্তের শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ (২০০৫), বিজ্ঞানবুদ্ধি চর্চার অগ্রপথিক অক্ষয়কুমার দত্ত ও বাঙালি সমাজ (২০০৬), অক্ষয়কুমার দত্ত ও উনিশ শতকের বাঙলা (২০০৯) নামে কয়েকটি গ্রন্থও প্রকাশ করেন। সাইফুলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও গভীর পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে অক্ষয়কুমার দত্তের এক অসামান্য মানসপরিচয়, যেখানে তিনি একাধারে বাংলা গদ্যের নির্মাতা, দার্শনিক, চিন্তানায়ক, বাঙালির প্রথম সমাজবিজ্ঞানী ও বাংলায় বিজ্ঞানসাধনার পথিকৃৎ। আজও তাঁর মুক্তচিন্তার গুরুত্ব সমান ভাবে প্রযোজ্য বলে মনে করেন সাইফুল। শিবনারায়ণ রায়, অম্লান দত্ত, শঙ্খ ঘোষ, অশোক মিত্র, জ্যোতিভূষণ চাকী প্রমুখের সংস্পর্শে ও উৎসাহে সাইফুল ইসলাম পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। এ বারে কলকাতায় এসেই সাইফুল অক্ষয়কুমারের শেষজীবনের বাসভবন বালির বাড়িটি দেখতে গিয়েছিলেন। বাড়ির দুরবস্থা দেখে গভীর বেদনার সঙ্গে রাজ্য সরকারের কাছে তাঁর আবেদন, জ্ঞানবিজ্ঞানের তীর্থভূমি ওই বাড়িটিকে ‘অক্ষয়কুমার দত্ত গবেষণাকেন্দ্র’ করা হোক।

ডাকঘর

ডাকঘর কেবলমাত্র রবীন্দ্রগানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়। রবীন্দ্রমনন, রবীন্দ্র ভাবনার গভীরতাকে আত্মস্থ করে, গুরুদেব প্রবর্তিত বিভিন্ন উদ্‌যাপনের মাধ্যমে সেই ধারাকে আরও সম্প্রসারিত করাও তাদের ব্রত। এ কাজে তাদের কান্ডারি মনোজ মুরলী নায়ার। ৭ মার্চ ঐতিহ্যমণ্ডিত জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে ‘অনন্ত তব মাধুরী’ ও নৃত্যনাট্য ‘চণ্ডালিকা’ পরিবেশনের মাধ্যমে ডাকঘর পূর্ণ করতে চলেছে তাদের এই অভিযানের একটি বৃত্ত। নিবেদনে মনোজ মুরলী নায়ার ও সৌরজা ঠাকুর। এই সঙ্গে এ বছরে ডাকঘর তাদের বসন্তোৎসব উদ্‌যাপন করতে চলেছে ৬ মার্চ (ইজ়েডসিসি) ও ৮ মার্চ (ওকাকুরা ভবন)।

প্রসঙ্গ বিদ্যাসাগর

দিল্লিবাসী বঙ্গসন্তান অমিয়প্রসাদ সেনের শিক্ষা ও কর্মজীবনের প্রায় সবটাই প্রবাসে— সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ, তার পর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং সেখানেই সুমিত সরকারের কাছে গবেষণা। প্রশাসনে কিছু দিন থাকার পর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্র ভবনে ‘টেগোর প্রফেসর’ হিসেবে যুক্ত ছিলেন। অবসর নেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার আধুনিক ভারত-ইতিহাস বিভাগ থেকে। তাঁর আগ্রহের বিষয় উনিশ শতকের বাংলা, হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদ, আরও কত কিছু। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা চৌদ্দ। বর্তমানে ব্যস্ত বিদ্যাসাগরের জীবনী রচনায়। আর তা নিয়েই ৩ মার্চ কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের সামনে আলোচনা করবেন ঘরোয়া পরিসরে। কলেজের বিধান সরণি ক্যাম্পাসে, দুপুর ১টায়।

মিলনমেলা

বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ুতেই বুঝি হৃদয়ের কোমলতা, সৌহার্দ্যের বাতাবরণ। তাই তো গার্ডেনরিচ মেটিয়াবুরুজ বটতলার সাবির আলি মোল্লা সোশ্যাল মিডিয়া দেখে শোভাবাজার রাজবাড়ির বসন্তোৎসব উপলক্ষে অনুষ্ঠানে যোগদানে ইচ্ছুক জানাতেই, শোভাবাজার রাজপরিবারের ছোট তরফের স্বপন দেব জানালেন, ‘‘রাজপরিবারের পক্ষ থেকে আপনাকে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সপরিবার সবান্ধবে এই উৎসবে আপনার ও আপনাদের মতো মানুষের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সৌভাগ্য থেকে যেন আমরা বঞ্চিত না হই কখনও। আসুন সবাই মিলে ৭ মার্চ বিকেল ৪টেয় আয়োজিত বসন্তোৎসবকে ‘সম্পর্কের উৎসব’-এ পরিণত করি।’’ আর এই বসন্তোৎসব উপলক্ষে মিলনতীর্থকে সার্থক রূপ দিতে ফানুসশিল্পী অজয় দত্ত ও চিত্রশিল্পী প্রবীরকৃষ্ণ দেব নিষ্ঠায় মেতেছেন সম্প্রীতির বিষয়ভাবনায় ফানুস সৃজনে। ফানুসের গা জুড়ে চিত্রে দেখা যাবে বাউল ফকির দরবেশ যাজকের পাশাপাশি মধুবনী চিত্রকলায় ফাগ আবিরের রঙে আনন্দে মাতোয়ারা নারীপুরুষকে। শোভাবাজার রাজপরিবারের ছোটতরফের বাড়ির অন্দরমহলের চৌহদ্দি থেকে সম্প্রীতির বার্তা আকাশে বাতাসে পৌঁছতে এই ফানুস ছাড়া হবে।

থিয়েটারের ভূমিকা

অশান্ত সময়ে থিয়েটারের ভূমিকা কী হওয়া উচিত, তা নিয়েই আয়োজিত হতে চলেছে এ বারের কুমার রায় স্মারক বক্তৃতা। বক্তা সৌরীন ভট্টাচার্য, বক্তৃতার বিষয় ‘রাষ্ট্র সমাজ থিয়েটার’। থাকবেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ সময় ধরে বহুরূপী নাট্য সংস্থার কর্ণধার বিশিষ্ট অভিনেতা, নির্দেশক ও নাট্যকার কুমার রায়ের জন্মদিনে দশ বছর ধরে এই স্মরণ বক্তৃতার আয়োজন করা হচ্ছে। কুমার রায় স্মৃতিরক্ষা সমিতি ও আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাবের উদ্যোগে এ বারের অনুষ্ঠান আজ ২ মার্চ সন্ধে সাড়ে ৬টায় গোর্কি সদনে। এই সন্ধ্যায় ১৭৯৫ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত লেবেদভ-এর বেঙ্গলি থিয়েটার-এর দু’শো পঁচিশতম বর্ষও উদ্‌যাপন করা হবে। বিশিষ্ট অভিনেত্রী মায়া ঘোষকে কুমার রায় স্মারক স্মৃতি সম্মান অর্পণ করবেন সমিতির সভাপতি লতা রায়। এই সম্মান কুমারবাবুর পারিবারিক আনুকূল্যেই অর্পণ করা হয়। প্রকাশিত হবে পবিত্র সরকার প্রদত্ত নবম কুমার রায় স্মারক বক্তৃতা ‘না নাটক থেকে নাটক: ভাষা প্রকাশের ধাপগুলি’ শীর্ষক পুস্তিকা।

নাট্যব্যক্তিত্ব

ফুটবল খেলোয়াড় হতে চেয়েছিলেন, চেয়েছিলেন রাজনীতির ভিতর দিয়ে দুনিয়া বদলাতে... সব স্বপ্নই শেষে থিতু হল থিয়েটারে। থিয়েটারের যেমন দরকার ছিল দেবশঙ্কর হালদারকে (সঙ্গের ছবিতে), তাঁরও তেমন দরকার ছিল থিয়েটারকে, নাট্যসাধনাই তাঁকে এনে দিয়েছে সঙ্গীত নাটক অকাদেমি সম্মান। দেবশঙ্করের সঙ্গে পূর্ব-উত্তর প্রজন্মের নাট্যব্যক্তিত্বদের নিয়ে এ বার স্থিরচিত্রী সুজিত সরকারের জমজমাট ক্যালেন্ডার... সৌমিত্র, রুদ্রপ্রসাদ, অরুণ, বিভাস, মনোজ, অশোক, হরিমাধব, ঊষা, মেঘনাদ, সীমা, সুমন, এবং প্রতিভা আগরওয়াল ও যোগেশ দত্ত... কে নেই ‘পিক্টোরিয়াল ট্রিবিউট টু দ্য থিয়েটার অব বেঙ্গল’-এ! চমৎকার ছবি আর অনতিলেখ গদ্যে প্রত্যেক শিল্পীকে উপস্থাপিত করেছেন সুজিত তাঁর এই ২০২০-র ক্যালেন্ডারে।

তথ্যচিত্রের উৎসব

প্রতি বছর মার্চ-শুরুতে গ্যেটে ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টায় কলকাতায় হাজির হয় আন্তর্জাতিক তথ্যচিত্র উৎসব ‘ডকেজ কলকাতা’। একত্র হন বিশিষ্ট পরিচালক, প্রযোজক, ফাউন্ডেশন ও ব্রডকাস্টাররা, তথ্যচিত্রের নির্মাণ-সম্ভাবনার দিকগুলি আলোচিত হয় ‘পিচিং সেশন’-এ। উৎসব শুরু আজ বিকেল ৫টায় জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষা ভবনে, দেখানো হবে ম্যাসিডোনিয়ার তথ্যচিত্র ‘হানিল্যান্ড’। বাকি দিনগুলি ম্যাক্সমুলার ভবনে, ৮ মার্চ পর্যন্ত তথ্যচিত্রের ভাবনা ও প্রকরণ নিয়ে চলবে দিনভর প্রশিক্ষণ, প্রশ্নোত্তর-পর্ব। থাকছে আটটি দেশের ২৫টি তথ্যচিত্র-প্রকল্প। ৪ তারিখ দুপুর দুটোয় মাস্টারক্লাস নেবেন বিখ্যাত এডিটর নিলস পাগ অ্যান্ডারসন। দেখানো হবে ‘দ্য লুক অব সাইলেন্স’, ‘আওয়ার টাইম মেশিন’, ‘ইমর্টাল’, ‘ফর সামা’ (এ বছর অস্কারে শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্রের মনোনয়নপ্রাপ্ত), ‘দ্য কেভ’ তথ্যচিত্রগুলি।

নাট্য সম্মান

তপন চক্রবর্তী বিশিষ্ট মেক আপ শিল্পী। এক সময় কুড়িটির মতো নাট্যদলের সঙ্গে নিয়মিত যুক্ত ছিলেন। নাট্য আকাদেমির বিভিন্ন কর্মশালায় মেক আপের ক্লাসও নিতেন। ২০০২-এ তিনি নাট্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন দীর্ঘ অসুস্থতার জন্য কোনও কাজ করতে পারেন না। বাঁ চোখের দৃষ্টি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে, পুরসভার সামান্য (আংশিক) পেনশনের ভরসায় জীবন কাটে। এই মানুষটিকে নাট্য সম্মান জানাচ্ছে মহানির্বাণ ভাবনা। ওদের বারো বছর পূর্তি উপলক্ষে ৪ মার্চ সন্ধ্যায় মুক্তাঙ্গন রঙ্গালয়ে তপনবাবুর হাতে সম্মান তুলে দেবেন বিল্বদল চট্টোপাধ্যায়। অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি নিবেদিত এই অনুষ্ঠানে আলোচনায় থাকবেন দেবাশিস রায়চৌধুরী ও সব্যসাচী দাশগুপ্ত। মঞ্চস্থ হবে চেকভের নাটকের অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় কৃত বাংলা রূপান্তর ‘নানা রঙের দিন’, পরিচালনা শ্যামল সরকার।

রোবট-নাগরিক

কলকাতায় এসে গোলাপি জামদানি শাড়িতে সেজেছিল সোফিয়া। কেমন লাগছে, ‘দারুণ’। গ্রিক ভাষায় সোফিয়া-র অর্থ জ্ঞান বা প্রজ্ঞা। হংকং-এর হ্যানসন রোবটিক্স কর্মশালায় ওর জন্ম ২০১৫-র ১৯ এপ্রিল। জন্মদাতা ডেভিড হ্যানসন। সোফিয়া আদতে মানবাকৃতি বা হিউম্যানয়েড রোবট। ব্রিটিশ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের আদল ওর মুখে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিশ্লেষণ করে সোফিয়া যে কোনও ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। ২০১৭-য় রিয়াধ ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ সামিটে সৌদি আরব তাকে নাগরিকত্ব প্রদান করে। অতএব সোফিয়া পৃথিবীর প্রথম রোবট-নাগরিক। নিজেই জানাল, বিশ্বের প্রায় ৬৬টি দেশ ঘুরে এখানে আসা। এই প্রথম ওর কলকাতা সফর, এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টেকনো ইন্ডিয়ার উদ্যোগে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি নজরুল মঞ্চে সোফিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন শহরের বিশিষ্ট ডাক্তার, শিক্ষাবিদ, প্রযুক্তিবিদ প্রমুখ। আর বিস্ময়ভরা চোখ নিয়ে ছিল অসংখ্য ছাত্রছাত্রী। প্রায় দেড় ঘণ্টা বিভিন্ন জনের প্রশ্নে সোফিয়ার উত্তর ছিল নজরকাড়া। কথা প্রসঙ্গে পরিষ্কার বাংলায় বলল, নমস্কার বা ধন্যবাদ। কলকাতা সম্পর্কে মন্তব্য, ‘এটা তো নোবেল লরিয়েটের শহর। রবীন্দ্রনাথের শহর। আর কলকাতা গান ভালোবাসে।’ কলকাতার খাবার-মিষ্টি খুব সুস্বাদু, কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কখনও স্বাদের সুযোগ করে দিলে সুখাদ্যের আস্বাদ নিতে পারবে বলে জানাল। ওর মতে, বিশ্ব আবহাওয়া আজ সত্যি সমস্যার মুখে। আচ্ছা, রোবট কি একদিন রোবট বানাবে? ‘এটা আমি এখানে বলতে চাই না। তবে অনেকে বলেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একদিন মানুষকে ছাপিয়ে যাবে, আমি বলি সেটা কখনও সম্ভব নয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে রোবট একদিন ডাক্তারের বন্ধু হয়ে উঠবে।’ ওর বিশেষ সিলিকন মুখ-ত্বকে ৬২ রকমের অভিব্যক্তি প্রকাশ করা সম্ভব। দেখিয়ে দিল সে সব। অবসর কাটে কী ভাবে? ‘ফিল্ম দেখি’। বলিউড সম্পর্কে ওর ধারণা বেশ ভালই। প্রিয় অভিনেতা কে? ‘শাহরুখ খান’। তবে পুরোপুরি এড়িয়ে গেল রাজনীতির প্রসঙ্গ।

মানিয়ে নেওয়া নয়, ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে

প্রতিদিন চুপ করে থেকে, রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার বর্ম এঁটে ভয়ঙ্কর এক সময়কে আমাদের দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছি না কি আমরাই?— এমন প্রশ্নই উত্থাপন করতে চলেছেন অর্পিতা ঘোষ, তাঁর রূপান্তর-নির্দেশনায় পঞ্চম বৈদিক-এর নতুন প্রযোজনা ‘ভিট্টন’-এ। ‘‘আজকের ভারতে ক্রিমিনালাইজ়েশন অব পলিটিক্স খুবই প্রকট, কিন্তু সেই দুর্বৃত্তায়ণ সব সময় যে সাদা চোখে দেখা যায় তা নয়, এই যে মানুষের মনের ভেতরটাকে বদলে তাদের সাম্প্রদায়িক করে তোলার চেষ্টা, এই কলুষতা— একে সম্যক ভাবে চিহ্নিত করার জন্যেই এ-নাটক মঞ্চস্থ করা।’’ বলছিলেন অর্পিতা। মূল নাটকটি ব্রেখটের ‘আর্তুরো উই’, নাৎসি-জার্মানি থেকে পালিয়ে নিউ ইয়র্কে এসে এ-নাটক লিখেছিলেন তিনি। হিটলারের উত্থানের কথাই বুঝিয়েছিলেন তিনি, আর নৈতিকতার প্রশ্নটি সংলাপের মাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছিলেন দর্শকের কাছে: ‘‘অতএব দেখতে শেখো, বোকার মতো তাকিয়ে না থেকে,/ সারাদিন বাজে না বকে, কিছু করো।/ একটা হনুমান প্রায় জয় করে ফেলেছিল এই দেশকে,/ দেশবাসী তাকে তার নিজের জায়গায় ফিরিয়ে দিয়েছে।/ কিন্তু এতে আনন্দ পাওয়ার কিছু নেই,/ যে জঠর থেকে সে বেরিয়েছে, তা ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে।’’ (দেবেশ চট্টোপাধ্যায়-কৃত অনুবাদ)। আমাদের এই সাম্প্রতিক সময়টাকেই মনে করায় এ-নাটক, অর্পিতা বললেন, ‘‘মানিয়ে নেওয়া নয়, আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।’’ মুখ্য চরিত্রে বাবু দত্তরায়, অর্ণ মুখোপাধ্যায়, কোরক সামন্ত। প্রথম অভিনয় অ্যাকাডেমিতে ৮ মার্চ সন্ধে সাড়ে ৬টায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement