কলকাতাও যে আর্সেনিকের বিপদ থেকে মুক্ত নয়, সে কথা মেনে নিয়ে এ ব্যাপারে সতর্ক করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কিছু দিন আগেও তিনি রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী ছিলেন।
মঙ্গলবার একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে পানীয় জল সংক্রান্ত একটি আলোচনাসভায় সুব্রতবাবু উপস্থিত ছিলেন। তাঁর মতে, কলকাতা লাগোয়া দুই জেলা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা আর্সেনিক প্রবণ অঞ্চল। কলকাতা শহরকে আর্সেনিক কার্যত আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে রয়েছে। আর দেখা গিয়েছে আর্সেনিক অনেক ফাঁকা জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়ছে। যে কারণেই শহর কলকাতাকে একেবারে আর্সেনিক মুক্ত অঞ্চল এমনটা দাবি করা যাবে না।
উদাহরণ হিসেবে বলতে গিয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী এ দিন জানান, বেশ কিছু দিন আগে যাদবপুরের কাছে একটি নলকূপের জল পরীক্ষা করে বিপজ্জনক মাত্রায় আর্সেনিকের নমুনা পাওয়া গিয়েছিল। সুতরাং মানুষকে সব সময় সচেতন থাকতে হবে। কারণ পরিশুদ্ধ পানীয় জলই মানুষের বহু রোগ নিমূর্ল করে দিতে পারে। মন্ত্রীর মতে, কলকাতায় যেহেতু অধিকাংশ জায়গাতেই প্রবহমান গঙ্গার জল পরিশোধন করে সরবরাহ করা হয় তাই বিপদের সম্ভাবনা কম। কারণ গঙ্গায় বা প্রবহমান নদী-নালায় আর্সেনিক থাকে না। তবে নলকূপের জল আর্সেনিকমুক্ত করে সরবরাহ করার প্রয়োজন আছে। কারণ অনেকেই নলকূপের জল ব্যবহার করেন। উন্নত দেশের শহরগুলির মতে জলের গুনগতমান বাড়ানোর চেষ্টা সব দিক থেকে করতে হবে।
কথা প্রসঙ্গে সুব্রতবাবু এ দিন জানান, রাজ্যের ৮৩টি ব্লক আর্সেনিক প্রবণ, যা আরও বাড়ছে। পরিস্থিতি এখন এমনও হয়ে গিয়েছে, ধান চাষে আর্সেনিক যুক্ত জল সেচের কাজে ব্যবহার করলেও সেই ধানের চাল থেকে আর্সেনিকজনিত রোগ হতে
পারে বলে এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। গাছের ফল থেকেও তা ছড়াতে পারে। এ নিয়ে অনেক রকম গবেষণাও চলছে। তবে আর্সেনিকমুক্ত জল প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি) সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে মন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন।