কলকাতায় প্রতিবাদ। শনিবার।
সপ্তাহান্তে ধর্মতলার ফুটপাতের চেহারাটাই বদলে দিয়েছে আজাদি স্লোগান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতায় চৌরাস্তা অবরুদ্ধ দুপুর থেকে। পাতাল-প্রবেশ ছাড়া কলকাতার হৃৎপিণ্ডে পৌঁছনোর কার্যত কোনও উপায় নেই। এই পরিস্থিতিতে খদ্দেরের অভাবে লাটে উঠেছে ফুটপাতের ব্যবসা। তবুও আক্ষেপ নেই মহম্মদ ইমতিয়াজ, আব্দুল খালিদদের। ইমতিয়াজ বলছেন, ‘‘লোকসান হলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু যা চলছে, প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন।’’
শনিবার সন্ধ্যার ধর্মতলা-নিউ মার্কেট চত্বরের ফুটপাত মানে বিক্রিবাটার হাঁকডাক। খদ্দের টানতে একে অপরকে টেক্কা দেন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। এ দিন সেই মুখেই উঠে এল আজাদি স্লোগান। সিঙ্গুর আন্দোলনে ধর্নামঞ্চের অভিজ্ঞতা ব্যবসায়ীদের রয়েছে। কিন্তু শহরের প্রাণকেন্দ্রের রাস্তায়, ট্রামলাইনে বসে স্লোগান দিচ্ছেন আট থেকে আশি— শেষ কবে এমন প্রতিবাদী ছবি দেখা গিয়েছে, মনে করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।
কালো পোশাক, কালো বেলুন, কালো ব্যাজ, কালো পতাকার আবহই এমন যে, ব্যবসায়ীর প্রতিবাদী মনও পড়ে রাস্তায়। এসপ্লানেড মেট্রো স্টেশনের কাছে শীতপোশাকের ব্যবসায়ী আব্দুল খালিদ বলছেন, ‘‘ইয়ে বহুত জরুরি হ্যায়।’’
আরও পড়ুন: মোদী বিরোধী বিক্ষোভে সড়ক-পাতালে চরম দুর্ভোগ, নাজেহাল শহরবাসী
আর এক ব্যবসায়ী হুসেন আকবর জানান, সপ্তাহান্তের সন্ধ্যায় ব্যবসা ভালই হয়। সারা দিনের বিকিকিনিতে হাজার টাকা রোজগার হয়েই যায়। এ দিন তা ২০০ টাকাও ছোঁয়নি। তাতে অবশ্য আফশোস নেই তাঁর। হুসেনের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে ইমতিয়াজের বক্তব্য আরও ধারালো। তিনি বলেন, ‘‘জেএনইউয়ের ছাত্রছাত্রীদের মারছ? তাঁরাই তো আগামী দিনে আইএএস, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক হবেন। আমাদের ছেলেমেয়েদের বাড়তে দেবে না? আপ দেশ চালাও, বাটো নেহি।’’
ইমতিয়াজ যেখানে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন, ঠিক তার পিছনে গাড়ির উপরে মাইক হাতে এক ছাত্র তখন বলে চলেছেন, ‘হাম ছিন কে লেঙ্গে আজাদি’। কলকাতার হৃৎপিণ্ডে জমায়েতের সেই স্লোগানই মুখে হাসি ফোটাচ্ছে ইমতিয়াজদের।