২১ জুলাইয়ের জোর কদমে প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র
শহরের কেন্দ্রস্থল ধর্মতলায় শুক্রবার তৃণমূলের বাত্সরিক ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ। ভিক্টরিয়া হাউসের সামনে যেখানে সমাবেশস্থল, সেখানে অল্প কিছু মানুষের ভিড়েই ধর্মতলা চত্বর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার কথা। আর একুশের সমাবেশে ভিড় হয় বিপুল। তার ফলে শহরের যে হাঁসফাঁস অবস্থা হবে, তা সহজেই আগাম আন্দাজ করা যায়।
আরও পড়ুন- ঘর সামলাতে বলে কি ভাঙবে শাসকই
যে পথে এগোবে তৃণমূলের মিছিল।
এ বার ধর্মতলার সমাবেশের জন্য কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মোট ২৯টি মিছিল ধর্মতলা অভিমুখে আসার কথা। তার মধ্যে ইএম বাইপাস দিয়েও কিছু মিছিল আসবে। অন্যান্য বার হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর এবং বড়বাজারের ধর্মশালায় সমাবেশে আগত কর্মী-সমর্থকদের থাকার ব্যবস্থা হয়। এ বার তার পাশাপাশি মিলনমেলা প্রাঙ্গন এবং কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম কর্মী-সমর্থকদের থাকার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে, আগামিকাল শুক্রবার গোটা কলকাতাতেই বিপুল প্রভাব পড়বে। যা আন্দাজ করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘মানুষের কিছু সমস্যা হবে। তার জন্য আগাম দুঃখপ্রকাশ করছি।’’
লালবাজার থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কোনও ধরনের পণ্যবাহী গাড়ি শহরে প্রবেশ করবে না। সভাস্থলের কাছে ট্রাম চলাচল বন্ধ থাকবে। সেই সঙ্গে মিছিল এবং সমাবেশের জন্য মূল রাস্তা বন্ধ থাকলে বিকল্প রাস্তা দিয়ে যান চলাচল করবে। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি জমায়েত করা যাবে ময়দান, হেস্টিংস, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ও বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, কিড স্ট্রিট, স্ট্র্যান্ড রোড, মেয়ো রোড, পলাশি গেট, গঙ্গাসাগর ময়দান, এপিসি রোডের উত্তর দিক, সিআইটি রোড, মৌলালি থেকে মল্লিকবাজার, জওহরলাল নেহরু রোড এবং আশুতোষ মুখার্জি রোডে। ভিআইপি-রা গাড়ি রাখবেন পার্কোম্যাট এবং বিধানসভায়।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৃণমূলও সাহায্য করবে বলে দলের তরফে জানানো হয়েছে। ৩২টি জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাম্প অফিস করা হয়েছে। যেখানে সাহায্য করার জন্য থাকবেন এক জন করে ট্র্যাফিক পুলিশ অফিসার। পুলিশি সাহায্যও মিলবে। ২২টি গুরুত্বপূর্ণ মোড়-সহ ৪৮টি জায়গায় রাস্তার পাশে পুলিশ পিকেট বসানো হবে। ১৪টি জায়গায় থাকবে অ্যাম্বুল্যান্স। ১০টি জায়গায় ড্রপ গেট থাকবে। এর পরে মূল সভাস্থলের দিকে গাড়ি যাবে না। পাঁচটি জায়গায় সিজার ব্যারিকেড। টিন ব্যারিকেড দু’টি জায়গায় থাকবে।
তৃণমূল এখন কেন্দ্রীয় শাসক দল বিজেপি-র বিরুদ্ধে মুখোমুখি যুদ্ধে নেমেছে। প্রত্যাশিত ভাবেই আজকের সমাবেশ থেকে তৃণমল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াবেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এটাই যে হেতু ২১-এর শেষ সমাবেশ, তাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তোলাবাজির মতো অভিযোগ রুখতে দলকে তিনি অনুশাসনের কী বার্তা দেন সে দিকেও নজর থাকবে। পাশাপাশি নজর থাকবে অন্য দল থেকে কারা একুশের মঞ্চে এসে তৃণমূলে যোগদান করেন সে দিকেও। সুব্রতবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘এক দিকে কেন্দ্রীয় সরকার অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরি করছে। অন্য দিকে জাতপাত ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি তৈরি করা হচ্ছে। আমরা মানুষকে অনুরোধ করব প্রতিবাদ করুন। কিন্তু কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না।’’