অস্থায়ী: ই এম বাইপাসে ডিভাইডার ঘেরা রয়েছে বাঁশের বেড়া দিয়ে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
পথচারীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ইএম বাইপাসের ডিভাইডারগুলি লোহার বেড়া দিয়ে ঘিরতে চায় কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে অর্থের অনুমোদন না আসায় সেই কাজে হাত দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংস্থার আধিকারিকদের একাংশ।
সব ঠিক থাকলে খুব শীঘ্রই মহড়া দৌড় শুরু হবে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর। নির্মীয়মাণ ওই মেট্রোপথের প্রথম পর্বে নিউ গড়িয়া থেকে রুবি মোড় পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার অংশে পরিষেবা শুরু হতে পারে চলতি বছরের শেষ দিকে। পুলিশ- প্রশাসনের মতে, এই রুটে মেট্রো চালু হলে ইএম বাইপাসে মানুষের যাতায়াত কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। গুরুত্ব বাড়বে পথচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টিরও।
বাইপাসে মেট্রো রেলের ব্রিজের নীচে কেএমডিএ এবং বন দফতরের উদ্যোগে গাছ লাগানো হয়েছিল। এখন সেখানে বাঁশের বেড়া দেওয়া রয়েছে। সূত্রের খবর, গত বছর ওই এলাকার ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে কেএমডিএ-কে প্রস্তাব দেওয়া হয়, বাঁশের বেড়ার বদলে লোহার বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। পুলিশের যুক্তি, বাঁশের বদলে লোহার বেড়া দিলে কেউ সেই বেড়া টপকে রাস্তা পারাপার করতে পারবেন না। নিরাপত্তাও অনেকটা নিশ্চিত করা যাবে। ভিআইপি বাজার মেট্রো স্টেশন থেকে অভিষিক্তা মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত লোহার বেড়া দেওয়ার ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, পুলিশের ওই অনুরোধের পরেই গত অর্থবর্ষে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল অর্থ দফতরে। তারা জানিয়েছিল, ওই মুহূর্তে কিছু করণীয় নেই। পরের অর্থবর্ষে রিপোর্ট পাঠাক কেএমডিএ। সংস্থার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সেই মতো চলতি বছরের এপ্রিলে ফের অর্থ দফতরে ফাইল পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও উত্তর আসেনি।’’ কেএমডিএ-র আধিকারিকদের মতে, পুলিশের প্রস্তাব অত্যন্ত বাস্তবসম্মত। সে কথা মাথায় রেখেই পিয়ারলেস মোড় থেকে ভিআইপি বাজার পর্যন্ত মেট্রোর ব্রিজের নীচের অংশে লোহার বেড়া বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দু’টি সুবিধা মিলবে। প্রথমত, বাঁশের বেড়াগুলি দ্রুত ভেঙে যায়। বছরে অন্তত এক বার সেগুলি মেরামত করতে হয়। দেড় বছর অন্তর পুরো পাল্টে ফেলতে হয়। যা রীতিমতো ব্যয়বহুল। সে দিক থেকে লোহার বেড়া অনেক বেশি মজবুত এবং স্থায়ী। নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেটি রং করলেই হয়।
দ্বিতীয়ত, গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, বাঁশের বেড়া টপকে রাস্তার মাঝখান দিয়ে যাতায়াতের প্রবণতা বাড়ছে পথচারীদের একাংশের মধ্যে। অনেক জায়গায় বেড়া ভেঙে যাওয়ায় তাঁরা ওই অংশ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। কেএমডিএ-র আধিকারিকদের বক্তব্য, কলকাতায় পথ-দুর্ঘটনায় যাঁরা হতাহত হন, তাঁদের বড় অংশই পথচারী। লোহার বেড়া দিলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কম হবে। বেড়ার উচ্চতা রাস্তা থেকে পাঁচ ফুট করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এর ফলে সহজ বেড়া টপকানোও যাবে না। জ়েব্রা ক্রসিং দিয়েই পথ-আইন মেনে রাস্তা পেরোতে হবে।
কিন্তু, সব কিছুই হবে ওই লোহার বেড়া বসানো হলে। তাই অনুমোদন কবে আসবে, আপাতত সে দিকে তাকিয়ে কেএমডিএ।