ফাইল চিত্র।
ঘুড়ির মাঞ্জা সুতোর বিপদ থেকে মোটরবাইক চালকদের বাঁচাতে এবং দুর্ঘটনার পরে ছিটকে নীচে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমাতে মা উড়ালপুলের রেলিংয়ের উপরে উঁচু করে জাল লাগানোর প্রস্তাবে রাজি হল কেএমডিএ। কলকাতা পুলিশের তরফে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। দ্রুত সেই কাজ শুরু হবে বলে সূত্রের খবর।
লালবাজার জানিয়েছে, বছর দুই আগে চিনা মাঞ্জা দেওয়া ঘুড়ির সুতোর হাত থেকে মোটরবাইক চালকদের বাঁচাতে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কেএমডিএ-কে। গত বছর কেএমডিএ প্রস্তাবে সম্মতি জানায়। লকডাউনের জন্য সেই কাজ বাধাপ্রাপ্ত হলেও ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তাদের আশা, এ বার দ্রুত ওই কাজ শুরু হবে। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, মা উড়ালপুলের উপরে ওই জাল বসাতে গেলে কিছু নির্মাণ করতে হবে রেলিংয়ের মধ্যে। তাতে উড়ালপুলের উপরে চাপ বাড়বে। তাই উড়ালপুলের কোনও ক্ষতি যাতে না হয়, সেই সব দিক খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। আশা করা যায়, প্রযুক্তিগত দিকটি মিটিয়ে নিয়ে দ্রুত ওই কাজ শুরু করবে কেএমডিএ।
পুলিশ সূত্রের খবর, মা উড়ালপুলের পার্ক সার্কাস থেকে সায়েন্স সিটি পর্যন্ত, প্রায় তিন কিলোমিটার অংশে তিন মিটার উঁচু করে ওই জাল লাগানোর কথা হয়েছে। মা উড়ালপুলের বাকি অংশেও ওই জাল লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছিল পুলিশ। ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তাদের দাবি, তিন মিটার উচ্চতার ওই জাল লাগানো হলে ধারাল চিনা মাঞ্জা দেওয়া সুতো উড়ালপুলের উপরে উড়ে এলেও তা জালে আটকে যাবে। মোটরবাইক চালকদের থেকে জালটি উঁচু হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমবে। এ ছাড়াও, ওই জালে সুতো আটকালে সেটি ছিঁড়ে
যাবে। এর পাশাপাশি, উড়ালপুলের উপরে কোনও দুর্ঘটনার অভিঘাতে চালক বা আরোহীর নীচে ছিটকে পড়াও আটকানো যাবে।
২০১৫ সালে মা উড়ালপুল দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকেই তা মোটরবাইক চালকদের কাছে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। চিনা মাঞ্জায় আহত হওয়া ছাড়াও এক মোটরবাইক আরোহীর মৃত্যুও হয়। তপসিয়া, ট্যাংরা, তিলজলা এলাকার ফাঁকা জায়গা থেকে ঘুড়ি ওড়ানোর সময়ে মাঞ্জা সুতো উড়ালপুলে এসে পড়ে থাকায় বার বার দুর্ঘটনায় পড়েছেন হয়েছেন বাইক আরোহীরা। এ ছাড়া, উড়ালপুলের উপরে মোটরবাইক দুর্ঘটনার পরে রেলিং টপকে নীচে পড়ে চার জন বাইকআরোহীর মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার উড়ালপুলের উপরে
স্কুটি থামিয়ে কথা বলার সময়ে এক যুবককে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। ওই যুবক রেলিং টপকে নীচে পড়ে যান। ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে, এখন উড়ালপুলে কড়া নজরদারি চলছে পুলিশের। পাশাপাশি, চালকদের সচেতন করার কাজ চলছে। তাঁদের আশা, ওই জাল লাগানো হলে অন্তত নীচে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা আটকানো যাবে।