প্রত্যাবর্তন: কেএমডিএ-র ওয়েবসাইটে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে দেওয়া হল ফিরহাদ হাকিমের ছবি। আগে সেখানে রয়ে গিয়েছিল চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছবি।
‘স্বস্থানে’ ফিরে এলেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) ওয়েবসাইটে বর্তমানে রাজ্যের অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছবির পরিবর্তে ফিরহাদের ছবি বসানো হল।
প্রসঙ্গত, রাজ্য মন্ত্রিসভায় দফতর রদবদলের সপ্তাহ তিনেক পরেও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনস্থ কেএমডিএ-র ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চন্দ্রিমার ছবি থাকার খবরটি শুক্রবার আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার পরেই এ দিন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ সেই তথ্যভ্রান্তি সংশোধন করেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, জরুরি ভিত্তিতে এই ভুল সংশোধন অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে ই-গভর্ন্যান্সের উপরে যখন রাজ্য সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে, তখন সমস্ত ক্ষেত্রেই সতর্কতা বাঞ্ছনীয়। এক বিপণন বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘কোনও সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা, ব্র্যান্ড ভ্যালু থেকে শুরু করে কম সময়ে তথ্য সন্ধান, গ্রাহক পরিষেবা প্রদান-সহ যাবতীয় বিষয়ে ওয়েবসাইটের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।’’
গবেষণা এ-ও জানাচ্ছে, আমেরিকার মতো উন্নত দেশে প্রায় ৮৪ শতাংশ গ্রাহক শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া পেজ রয়েছে, এমন সংস্থার তুলনায় যাদের ওয়েবসাইট রয়েছে, সেই সব সংস্থাকে বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন। এক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের এ বিষয়ে বক্তব্য, ভারতীয় গ্রাহকদের কাছেও ওয়েবসাইটের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। আর এটা মনে করার কোনও কারণ নেই যে, সাধারণ মানুষ ওয়েবসাইট সংক্রান্ত ঠিক তথ্য শুধুমাত্র বেসরকারি সংস্থার থেকেই প্রত্যাশা করেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ডিজিটাল-সক্ষম রাজ্য বানানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ সরকারি দফতরের ওয়েবসাইটও। ‘‘কারণ রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি, ই-গভর্ন্যান্সকে সরকার আক্ষরিক অর্থে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, তা নির্ভর করছে সরকারি দফতর এবং সংস্থাগুলি তাদের ওয়েবসাইটকে ঠিক মতো ডিজিটাল-বিশ্বে উপস্থাপন করতে পারছে কি না, তার উপরেও।’’— বলছেন ওই বিশেষজ্ঞ।
২০২১ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর, এই সময়সীমার উপরে ভিত্তি করে গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)-র রিপোর্ট বলছে, দেশে ইন্টারনেট-গ্রাহক সংখ্যা ২০২১ সালের জুনে ৮৩.৩৭ কোটি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে সেপ্টেম্বরে ৮৩.৪২ কোটি হয়েছে। ট্রাই-এর এক কর্তার কথায়, ‘‘এই ৮৩.৪২ কোটি গ্রাহকের মধ্যে ‘ওয়্যারড’ ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ২.৪৪ কোটি এবং ওয়্যারলেস ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৮০.৯৮ কোটি।’’
ফলে পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, ডিজিটাল জগতের উপস্থিতি বর্তমানে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যেমনটা গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রিক পরিস্থিতির নিরিখে কেএমডিএ-র ওয়েবসাইটে ফিরহাদের ‘প্রত্যাবর্তন’ও, মনে করছেন অনেকে।